আসলামুআলাইকুম।
আশা করি সবাই যে যার অবস্থানে ভালো এবং সুস্থ আছেন।
আজ আলোচনা করব অভিগমন বিষয়ে। অভিগমনের কারণ এবং অভিগমনের প্রকারভেদ।
প্রথমেই প্রশ্ন আসে অভিগমন কি?
মানুষের এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থায়ী বা অস্থায়ী ভাবে গমন করাই হল অভিগমন।
অভিগমন কয় প্রকার?
অভিগমন সাধারণত দুই প্রকার। যথা,
১) অভ্যন্তরীণ অভিগমন
২) আন্তর্জাতিক অভিগমন
অভ্যন্তরীণ অভিগমন: একই দেশের অভ্যন্তরে একই স্থান থেকে অন্য স্থানে স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে ইচ্ছাকৃত বা জোরপূর্বক গমন করাকে অভ্যন্তরীণ অভ্যন্তরীণ বলে। যেমন ,কুমিল্লায় বসবাসরত কোন ব্যক্তি বা পরিবার স্থায়ীভাবে থাকার উদ্দেশ্যে ঢাকায় গমন করলে সেটা হবে অভ্যন্তরীণ অভিগমন। আন্তর্জাতিক অভিগমন: মানুষ যখন স্বেচ্ছায় বা জোরপূর্বক নিজের দেশের ভৌগোলিক সীমানা ছাড়িয়ে অন্য দেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের উদ্দেশ্যে গমন করে তখন তাকে আন্তর্জাতিক অভিগমন বলে। যেমন কোনো ব্যক্তি বা পরিবার উন্নত জীবনযাপনে আকর্ষিত হয়ে ,বাংলাদেশ ছেড়ে স্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে বসবাস এর উদ্দেশ্যে গমন করে। এটাই তখন আন্তর্জাতিক অভিগমন এর উদাহরণ।
অভিগমনের কারণ:
প্রাকৃতিক , অর্থনৈতিক ,রাজনৈতিক ও সামাজিক কারণে মানুষ অভিগমন করে। এগুলো দুই ধরনের। যথা,
আকর্ষণমূলক কারণে অভিগমন: যে সমস্ত কারণ নতুন কোন স্থানে বসতি স্থাপনের জন্য মানুষকে উৎসাহিত বা প্রোথত করে সে গুলোকে গন্তব্যস্থলের টান বা আকর্ষণমূলক কারণ বলে।
- আকর্ষণমূলক কারণগুলো হলো:
- *আত্মীয়-স্বজন ও নিজ গোষ্ঠীভুক্ত জনগণের নৈকট্য লাভ।
- *বিশেষ দক্ষতার চাহিদা ও বাজার এর সুবিধা।
- *বিবাহ ও সম্পত্তি প্রাপ্তি মূলক ব্যক্তিগত সুবিধা।
- *কর্মসংস্থান ও অধিকতর আর্থিক সুযোগ-সুবিধা।
- *উন্নত জীবন যাত্রার উদ্দেশ্যে।
- *শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গৃহসংস্থান ও সামাজিক নিরাপত্তা গত সুবিধা।
অভিগমনের বিকর্ষণ মূলক কারণ: যে সমস্ত কারণ মানুষকে পুরাতন বাস স্থান পরিত্যাগ করে অন্য স্থানে যেতে বাধ্য করে সে গুলোকে উৎস স্থল এর ধাক্কা বা বিকর্ষণ মূলক কারণ বলে।
- বিকর্ষণ মূলক কারণগুলো হলো:
- *সামাজিক ও সাম্প্রদায়িক বৈষম্য।
- *প্রাকৃতিক দুর্যোগ জনিত ক্ষয় ক্ষতি।
- *অর্থনৈতিক মন্দা।
- *ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্রমাগত ক্ষয়ক্ষতি।
- *রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা।
- *জনসংখ্যা বৃদ্ধি জনিত সমস্যা।
ইত্যাদি এই সকল আকর্ষণজনিত ও বিকর্ষণ জনিত কারণে অভিগমন সংঘটিত হয়ে থাকে। অভিগমন একটি দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে। অভিগমনের স্বাভাবিক ফলাফল বা প্রভাব হচ্ছে জনসংখ্যা বন্টন বা অবস্থানিক পরিবর্তন। অবস্থানগত পরিবর্তন ছাড়াও অভিগমনের ফলে বিভিন্ন এলাকায় অর্থনৈতিক সামাজিক ও যনো বৈশিষ্ট্যগত পরিবর্তন হতে পারে।
অভিগমনের ফলে সংস্কৃতির কিছুটা পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। এক স্থান থেকে অন্য স্থানে অভিগমনের ফলে সংস্কৃতির কিছুটা পরিবর্তন ঘটে। যেমন :ভাষা ,খাদ্যাভাস ,পোশাক, রীতি নীতির পরিবর্তন। অভিগমনের ফলে সামাজিক আচার আচরণের আদান-প্রদান হয়। সামাজিক অনেক রীতিনীতি এক দেশ থেকে অন্য দেশে স্থানান্তরিত হয়। অধিক ভাবে অন্য দেশের সংস্কৃতি রপ্ত করার কারণে নিজের দেশের সামাজিক বৈশিষ্ট্য ক্ষুন্ন হয়। রাষ্ট্র অভ্যান্তরীণ অভিগমন এও এক অঞ্চলের সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য দ্বারা অন্য অঞ্চল প্রভাবিত হয়।
ধন্যবাদ সকলকে পোস্টটি পড়ার জন্য।
আল্লাহ হাফেজ।