নবম শ্রেণীর ফ্রিল্যান্সিং ও ব্যাংকিং বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর -২০২১

 

আসসালামু আসসালামু,

আশা করি সবাই ভালো আছেন, সুস্থ আছেনন।

আপনাদের সামনে আমি আবারো হাজির হয়েছি, নবম শ্রেণীর ফ্রিল্যান্সিং ও ব্যাংকিং বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্টের উত্তর নিয়ে।

অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ-

নিবন্ধ রচনা –

“অর্থায়নের ক্রমবিকাশ”

(নিবন্ধন রচনার ক্ষেত্রে ভূমিকা, অর্থায়নের ধারণা,,ক্রমবিকাশ এবং উপসংহার লিখতে হবে।)

অর্থায়নের ক্রমবিকাশ-

ভূমিকা-

প্রাচীনকালে মানুষ পণ্যের বিনিময়ে পণ্য বিনিময় করত যাকে বার্টার সিস্টেম বলা হত। কিন্তু দ্রব্য বিনিময় প্রথার কিছু সীমাবদ্ধতা পরিলক্ষিত হয় এবং এই সীমাবদ্ধতা দূর করার জন্য অর্থের সূচনা হয়। অর্থনৈতিক ক্রমবিকাশের সাথে সাথে পণ্যদ্রব্য উৎপাদন প্রক্রিয়ায় শ্রমবিভাগ এর সূচনা ঘটে অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে। প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও উৎপাদন ক্ষেত্র বিপ্লবী পরিবর্তনের সূচনা করে যা় শিল্প বিপ্লব নামে পরিচিত।

ব্যবসা-বাণিজ্য ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে সাথে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে হলে অবশ্যই অর্থায়নের ধারণা ও ব্যবহার অত্যাবশ্যকীয় হয়ে পড়ে।

 

অর্থায়নের ধারণা-

অর্থায়ন তহবিল ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করে, কোথা থেকে কি পরিমান তহবিল সংগ্রহ করে, কোথায় কিভাবে বিনিয়োগ করা হলে কারবারে সর্বোচ্চ মুনাফা হবে অর্থায়ন সেই সংক্রান্ত পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন করে তহবিল প্রয়োজন অনুযায়ী পরিকল্পনামাফিক তহবিল সংগ্রহ করতে হয় যেন উৎপাদন প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে অর্থায়ন বলতে তহবিল সংগ্রহ ও ব্যবহার সংক্রান্ত এই প্রক্রিয়াকে বুঝায়।

 

অর্থায়নের ক্রমবিকাশ-

অষ্টাদশ শতাব্দীতে অর্থায়ন মূলত হিসাবরক্ষণ আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণ এর মাধ্যমে ভবিষ্যৎ কার্যক্রম ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করত ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে ক্লাসিকাল ধারায় ব্যষ্টিক অর্থনীতির উন্নয়নের সাথে অর্থায়ন সম্পৃক্ত ছিল অর্থায়নের ক্রমবিকাশের ধর অর্থায়নের প্রকৃতি ও আওতা সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট ধারণা দেয়। কিন্তু সভ্যতায় বিকাশের সাথে সাথে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আওতা ও পরিধি বৃদ্ধি ও প্রযুক্তিগত উন্নয়ন একজন আর্থিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব ও কার্যাবলী কে পরিবর্তন করেছে। সেইসাথে অর্থায়ন বিষয়ক ধারণাও পরিবর্তিত হয়েছে নিম্নে অর্থায়নের ক্রমবিকাশের কয়েকটি ধারা সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো-

১৯৩০ এর পূর্ববর্তী দশক-

এই সময়কালে যুক্তরাষ্ট্রের কিছু কোম্পানি গুলোর মধ্যে একত্রীকরণের প্রবণতা শুরু হয়। আর্থিক বিবরণী বিশ্লেষণ করে কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে কোন প্রতিষ্ঠান একত্রীকরণ হওয়া উচিত এই সংক্রান্ত রূপরেখা দিতে আর্থিক ব্যবস্থাপকের দায়িত্ব পালন করতে হয়।

তারা এই একত্রীকরণে বিশাল অঙ্কের অর্থ সংস্থান ও আর্থিক বিবরণী তৈরি করার দায়িত্ব পালন করে।

১৯৩০ এর দশক-

একত্রীকরণ এর প্রবণতা যুক্তরাষ্ট্রে যথেষ্ট সফলতা পায়নি ত্রিশের দশকে যুক্তরাষ্ট্রের চরম মন্দা শুরু হয়। অনেক লাভজনক প্রতিষ্ঠানে ক্ষতিগ্রস্ত তালিকায় পড়ে যায় সেই অবস্থায় কারবার গুলো পূর্ণ গঠন করে কিভাবে প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেউলিয়াত্ব থেকে রক্ষা করা যায় এ ব্যাপারে আর্থিক ব্যবস্থাপক বিশেষ দায়িত্ব পালন করে থাকে। মূলত এই সময় শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে অর্থায়নে প্রয়োজন দেখা যায়।

১৯৪০ এর দশক-

এই দশকের সুষ্ঠুভাবে কারবার পরিচালনা জন্যে তারণ্যর প্রয়োজনীয়তা, বিশেষভাবে নগদ অর্থ প্রবাহের বাজেট করে। সুপরিকল্পিত নগদ প্রবাহের মাধ্যমে অর্থায়ন সেই দায়িত্ব পালন করে।

১৯৫০ এর দশক-

এই সময়ে অর্থায়ন পূর্বের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করে সর্বোচ্চ লাভজনক বিনিয়োগ করার মূল্যায়নে নানাপ্রকার গাণিতিক বিশ্লেষণ কাজে নিয়োজিত হয়। দীর্ঘমেয়াদি প্রাক্কলনের মাধ্যমে উপযুক্ত দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করে বিক্রয় বৃদ্ধি ও করে মুনাফা সর্বোচ্চকরণ করায় তখন অর্থায়নের প্রধান কাজে পরিণত হয়, এই ধারাকে অর্থায়নের সনাতন ধারাও বলা হয়।

১৯৬০ এর দশক-

এই দশক থেকে আধুনিক অর্থায়নের যাত্রা শুরু হয় এই সময়ে অর্থায়ন মূলধন বাজার কে অগ্রাধিকার দিতে শুরু করে। শেয়ার হোল্ডাররা প্রতিষ্ঠান মালিক ফলে বেশীরভাগ শেয়ারহোল্ডারদের শেয়ার এর বাজার দর সর্বাধিকরন ছিল এই সময়ের অর্থায়নের উদ্দেশ্য।

১৯৭০ এর দশক –

এই দশকের এই শুরু হয় কম্পিউটা যুগে অধ্যায।় যা শুধু উৎপাদন কৌশলী নয় কারবারি অর্থায়ন কেও পাল্টিয়ে দেয।় এই সময়ে অনেক আর্থিক সিদ্ধান্ত মূলত জটিল অংক নির্ভর কম্পিউটারের মাধ্যমে সম্পাদনা করার প্রবণতা বেড়ে যায়। কম্পিউটারের মাধ্যমে অনেক নির্ভুলভাবে পরিমাপ ও ব্যবস্থাপনা করা যায় বলে অনেকেই এই পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে।

১৯৯০ এর দশকে মার্টন মিলার মদিগ্লিয়ানি তাত্ত্বিক গন গাণিতিক বিশ্লেষণের মাধ্যমে অর্থায়নের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এবং নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন।

১৯৮০ এর দশক-

এ সময় অর্থায়ন তার সনাতনী দায়িত্বের পরিবর্তন করে নতুন রূপে আবির্ভূত হয়। মূলধনের সুদক্ষ বন্টন ও প্রকল্পগুলোতে অর্জিত আয় এর বিচার বিশ্লেষণ ছিল অর্থায়নের মূল বিষয়।

 

১৯৯০ এর দশক-

এই সময়ে অর্থায়ন আন্তর্জাতিকতা লাভ করে। একদিকে যেমন অর্থায়নের বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত পৃথিবীর কোথায় কোন পণ্য প্রস্তুত করা ও বিক্রি করা লাভজনক সেটা বিবেচনা করে আরেক দিকে বিশ্বের কোন মূলধনী বাজার কি প্রকৃতির ও কোথা থেকে তহবিল সংগ্রহ করা লাভজনক অর্থায়নে বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়।

উপসংহার –

অর্থায়নের আওতা পরিধি ব্যাপক বিস্তৃত। আমাদের দৈনন্দিন জীবনে যেমন ব্যক্তিগত পারিবারিক সামাজিক ও রাজনৈতিক তথা সার্বিক কর্মকাণ্ডে আর্থিক লেনদেন অপরিহার্য।। অর্থ ছাড়া যেমন -দৈনন্দিন জীবনের অর্থনৈতিক কথাবার্তা চিন্তা করা যায় না, তেমনি ভাবে অর্থ ছাড়া একটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও অচল। সমাজ ও সভ্যতার ক্রমবিকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত উন্নয়নের সাথে সাথে ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডের পরিধিও ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে আধুনিক পণ্য বাজারে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো মধ্যে ব্যাপক প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হয়েছে। তাই অবশ্যই প্রতিযোগিতামূলক ব্যবসায়ী পরিবেশে মুনাফা অর্জন করতে গেলে একজন ব্যবসায়ীকে উপযোগী পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে এবং তা যথাযথভাবে কার্যকর করে অর্থের ব্যবহার সুনিশ্চিত করতে হবে। যেন পণ্যের উৎপাদন খরচ বিক্রয় করা ও অন্যান্য খরচ সর্বনিম্ন রাখা সম্ভব হয় এবং ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জন করতে পারে।

Related Posts