আসসালামু আলাইকুম, প্রিয় শিক্ষার্থীরা আশা করি সবাই ভাল আছেন। বরাবরের মতই এই পোস্ট এ অষ্টম শ্রেণির (সপ্তম সপ্তাহ) ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট প্রশ্ন ও আপনাদের সুবিধার্থে একটি নমুনা উত্তর লিখে দিব। আশা করি আপনাদের উপকারে আসবে।
অ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন-
তোমার চাচা প্রতিবছরই একটি নির্ধারিত সময়ে তার অর্থের হিসাব-নিকাশ করে। এ বছর হিসাব করে তিনি দেখতে পান যে তার নগদ উদ্বৃত্তের পরিমাণ ৪ লাখ টাকা তিনি শরীয়তের বিধান মতে কিভাবে যাকাত প্রদান করবেন তার কর্মপরিকল্পনা।
সংকেত-
যাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত, যাকাতের পরিমাণ নির্ধারণ, তার এলাকায় যাদেরকে যাকাত দেওয়া যায় এর তালিকা, যাকাত হিসেবে তিনি কি কি দিতে পারে তার তালিকা।
যাকাত ফরজ হওয়ার শর্ত-
স্বাধীন, পূর্ণবয়স্ক মুসলমান নর-নারীর কাছে পরিমাণ সম্পদ থাকলে কতিপয় শর্তসাপেক্ষে তার উপর যাকাত ওয়াজিব হয়ে যায়।
শর্তগুলো হলো –
সম্পদের উপর পূর্ণ মালিকানা –
সম্পদের উপর যাকাত ওয়াজিব হওয়ার জন্য সম্পদের মালিকানা সুনির্দিষ্ট হওয়া অর্থাৎ সম্পদের অধিকার থাকা। সম্পদের উপর অন্যের অধিকার বা মালিকানা থাকে না থাকা এবং নিজের ইচ্ছেমতো সম্পদ ব্যবহার করার পূর্ণ অধিকার থাকা। যে সকল সম্পদের মালিকানা সুস্পষ্ট নয় সে সকল সম্পদের কোন যাকাত নেই।
সম্পদ উৎপাদনক্ষম হওয়া-
যাকাতের জন্য সম্পদকে অবশ্যই উৎপাদনক্ষম, প্রবৃদ্ধিশীল হতে হবে অর্থাৎ সম্পদ বৃদ্ধি পাওয়ার যোগ্যতাই যথেষ্ট।
নিসাব পরিমাণ সম্পদ-
যাকাত ফরজ হওয়ার ৩য় শর্ত হচ্ছে শরীয়ত নির্ধারিত পরিমাণ বা তার থেকে বেশি সম্পদ থাকা সাধারণত ৫২.৫ তোলা রূপা ৭.৫ তোলা স্বর্ণ মূল্য সম্পদ থাকলে তার উপর যাকাত ফরজ হয়। বিভিন্ন পশুর ক্ষেত্রে পরিমাণ ভিন্ন।
মৌলিক প্রয়োজনের বেশি সম্পদ থাকা-
সারাবছরের মৌলিক প্রয়োজন মিটিয়ে যে সম্পদ উদ্ধৃত্ত থাকবে, শুধুমাত্র তার উপরেই যাকাত ফরজ হবে।
উদ্দীপকে উল্লিখিত আমার চাচার নগদ উদ্বৃত্তের পরিমাণ ৪ লক্ষ টাকা।
আমরা জানি,
চল্লিশ ভাগের এক ভাগ যাকাত হিসেবে দেওয়া ফরজ
অর্থাৎ আমার চাচার যাকাত দিতে হবে-
১
৪,০০,০০০ এর — ভাগ=১০০০০ টাকা
৪০
যাকাত বন্টনের কিছু নির্দিষ্ট ধাপ রয়েছে। এই ধাপ গুলো সরাসরি কুরআন দ্বারা নির্দিষ্ট। যেহেতু তা আল্লাহর নির্দেশ, তাই এর বাইরে যাকাত বন্টন করলে যাকাত ইসলাম এর শরীয়ত সম্মত হয় না।
পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা এই ব্যাপারে খুব স্পষ্টভাবে বলেছেন-
‘ যাকাত তো শুধু দরিদ্র,যাকাত অবস্থায় নিয়োজিত কর্মচারী, মানুষকে দাসত্ব থেকে মুক্তির জন্য,ঝণগ্রস্ত জর্জরিত অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য, আল্লাহর পথে কল্যাণমূলক কাজে, ধর্ম প্রচারক প্রতিষ্ঠান কাজ এবং মুসাফিরদের জন্য ব্যয় করা যাবে। যাকাতের অর্থ ব্যয়। এটাই আল্লাহর বিধান। নিশ্চয় আল্লাহ সর্বজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়। সূরা তওবা (আয়াত -৬০)
যাকাত হিসেবে যা যা দিতে পারেন –
এমন কিছু যাকাত দিতে হবে যাতে তাদেরকে দরিদ্র দূর করে স্বাবলম্বী করা যায়, তাদের কে গরু সেলাই মেশিন, ব্যবসায় টাকা, রিকশা, সিএনজি, গরিবের পড়ালেখায়, গরিবের বিয়েতে টাকা ইত্যাদি জায়গায় যাকাত হিসেবে দেওয়া যেতে পারে।
এই ছিল অষ্টম শ্রেণীর ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা এসাইনমেন্ট এর একটি নমুনা উত্তর।
আশা করি এই নমুনা উত্তর থেকে ধারণা নিয়ে আপনাদের অ্যাসাইনমেন্ট আরো সুন্দর হবে লিখতে পারবেন।
ধন্যবাদ।