যখন রাত হয়ে গেলো চারদিকে শুধু ভয়ানক শব্দ। ময়না ভয়ে চুপকরে চারদিকে তাকায় আর ভয়ে কাপতে থাকে। তার শরীর ঘামতে থাকে। সে শুধু তার বাবার কথা ভাবতেছে আর মনে মনে বলতেছে, বাবা তুমি বেঁচে থাকলে হয়তো আমাকে এরকম জঙ্গলে একা থাকতে দিতে না।
আমার খুবই ভয় লাগতেছে কারণ, শুনেছি এই জঙ্গলে হিংস্র জীবেরা রাতে খাবারের খোজে বের হয়। হয়তো আমি তাদের আজকের খাবারের অবোলা প্রাণী হয়ে মারা যাবো। আর এদিকে আমার বোন প্রিয়া হয়তো বাড়িতে মাছ মাংস খেয়ে আরামে ঘুমাচ্ছে।
ময়না কান্না করতে করতে এসব কথা বলতেছে। আর ময়না যেটাই ভাবলো তার বোন প্রিয়া মাছ মাংস খেয়ে ঘুমাচ্ছে সেটাই হলো। প্রিয়ার কোন চিন্তাই নেই যে, তার বোন কোথায় গেলো? কোথায় আছে? কি খেলো? সে মনের শুখে বাড়িতে ঘুমাচ্ছে।
আর যখন ময়না আম গাছের নিচে ভয়ে চুপ করে ছিল তখন হঠাৎ তার চোখ পড়ল একটা কালো ছায়ার ওপর। সে আরও ভয় পেয়ে গেলো। তার হাত পা থরথর করে কাপতেছিল। যখন কালো ছায়ার ওপর চাঁদের একটু আলো পড়ল ময়নার ভয় দূর হয়ে গেলো কারণ, সেটা ছিল একজন বৃদ্ধ মহিলা।
ময়না সেই বৃদ্ধ মহিলার কাছে গিয়ে বলল, কে তুমি এই রাতের অন্ধকারে এই নির্জন জঙ্গলে একা কি করতেছ? বৃদ্ধ মহিলা বলল, আমি এই জঙ্গলে থাকি আর এখানেই আমার একটা ছোট কুড়ে ঘর রয়েছে। আর বৃদ্ধ মহিলা বলে কেরে মেয়ে তুমি এই জঙ্গলে একা কেন তোমার সাথে কেউ কি আছে? ময়না তার নাম বলল। আর ময়না তার সব দুঃখের কথা বৃদ্ধ মহিলাটিকে খুলে বলল।
এই দুঃখের কথা শুনে বৃদ্ধ মহিলাটির চোখে পানি চলে আসলো। আর বলল, ময়না মা আমার তুমি চিন্তা করোনা। আজ থেকে তুমি আমার একমাত্র মেয়ে। তুমি আমাকে মা বলে ডাকতে পারো। তোমার কোন চিন্তাই নেই আমরা মা মেয়ে মিলেমিশে এই সামনের কুড়ে ঘরে একসাথে থাকবো।
তারপর সেই বৃদ্ধ মহিলা আর ময়না একসাথে জঙ্গলে বসবাস করতে লাগলো। আর একদিন ময়নার মন খারাপ হলো। বৃদ্ধ মহিলা তাকে বলল, তোমার মন খারাপ কেনরে মা? ময়না বলল, মা আমার চেহারা কি কালোই থাকবে? বৃদ্ধ মহিলা বলল, তুমি একটা উপায়ে ফর্সা হতে পারো।
এই কথা যেমনিই ময়না শুনল তেমনিই তার মাকে বলল, কীভাবে মা আমি ফর্সা হবো? বৃদ্ধ মহিলা বলল, তোমাকে রাকিশ্মনি ফুলের রস মুখে ২ দিন লাগিয়ে দিলেই ফর্সা হয়ে যাবে।
এই কথা শুনে ময়না আবারো জিজ্ঞেস করল যে, কোথায় এই ফুল পাওয়া যাবে? তখন বৃদ্ধ মহিলা বলল, এই জঙ্গলের মাঝখানের একটি ঝর্ণার উপড়ে একটি পাথর আছে। সেই পাথরের পাশে সেই রাকেশ্মনি ফুল গাছ পাওয়া যাবে।
আর ময়না সিদ্ধান্ত নিলো সে সেই ফুল আনতে যাবে। পরের দিন ময়না বাড়ি থেকে রওনা হলো সেই দূরের পথের যাওয়ার জন্য। তাই তার মা তাকে একটা কাপরের ঝুলিতে কিছু খাবার দিয়ে দিল। ময়না তার মাকে বিদায় জানালো। তার মা তাকে বলল, সাবধানে যাসরে মা। আমি তোমার জন্য অপেক্ষায় থাকবো।
এই কথা বলে ময়না আসতে আসতে পা সামনে ফেলে এগিয়ে গেলো। আর যেতে যেতে সেই জঙ্গলের মাঝে পোঁছে গেলো। আর ঝর্নাটাও পেয়ে গেলো। ঝর্ণার উপড়ে উঠে পাথরের পাশে ফুল গাছের একটা ফুল তুলেই বাড়ির দিকে রওনা হলো। তারপর ময়না বাড়িতে ফিরে আসলো। এরপর ময়নার মা ফুলটির পাতার রস ময়নার গালে লাগিয়ে দিল। ২ দিনপর ময়না দেখল তার চেহারা ফর্সা হয়ে গেছে।
ময়না কিজে খুশি সে তার চেহারা তার বোন প্রিয়াকে দেখাতে চাইলো। তার মা তাকে বলল, তোমার যাওয়াটা হয়তো ঠিক হবেনা। ময়না মন খারাপ করল। তারপর ময়নার তার মা তাকে যাওয়ার কথা বলল।
ময়না তার বনের বাড়িতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিলো। ময়না তার নিজের গ্রামে যাওয়ার রওনা দিলো। এবং সে পোঁছে গেলো তার বাড়িতে। তারবন প্রিয়া এত সুন্দর মেয়ে দেখে বলল, কেরে মেয়ে তুমি? এত সুন্দর চেহারা। আর যখন ময়না তার বোনকে বলল, আমাকে চিনতে পারলিনা প্রিয়া আমি তোমার সেই কালো বোন ময়না। প্রিয়া অবাক হয়ে গেলো। আর তাকে জিজ্ঞাসা করল যে কীভাবে সে ফর্সা হলো।
ময়না সব বলে দিলো কীভাবে সে কালো থেকে ফর্সা হলো। একথা শুনে প্রিয়া সেই জঙ্গলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলো। তারপর ………………….।
বাকি কাহিনীটি এর পরের পর্বে পেয়ে যাবে। আর তোমাদের কাহিনীটি কেমন লাগলো কমেন্ট করে জানাও।
সকলকে ধন্যবাদ।