আমাদের কেন রুটিন মানতে হবে? আসলে রুটিন মানার কথা অনেকেই বলেন। মোটিভেশনাল ভিডিও থেকে শুরু করে মানসিক চিকিৎসক, এমনকি সফল ব্যক্তিত্ব যারা আছে সবাই বলেন- দৈনন্দিন কাজের একটা পরিকল্পনা থাকা প্রয়োজন। সেই অনুযায়ী রুটিন করে চলা উচিত।
রুটিন মেনে চলার উপকারিতা:
১। কাজের একটা সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করা থাকে।
২। সব কাজ গোছানো থাকে আর কোনটা জরুরী এবং কোন কাজটা করার জন্যে হাতে সময় আছে সেটা জানা থাকে।
৩। কাজের ফলে সৃষ্ট মানসিক চাপ কম হয়।
৪। কাজের সময় তাড়াহুড়ো করতে হয় না। এমনকি ডেইটলাইন বা নির্ধারিত সময়সীমা পেরিয়ে যাবার ভয় থাকে না।
৫। মন থেকে ভয় দূর হয় এবং আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়।
৬। পূর্বপ্রস্তুতি নেয়া এবং পরিকল্পনা করার মতো পর্যাপ্ত সময় পাওয়া যায়।
৭। এছাড়া কাজের বাইরে কতটুকু অবসর পাওয়া যায় এবং সেই সময়টাকে কিভাবে কাজে লাগানো যায় সেই সম্পর্কে ধারণা করা যায়।
এখন আরেকটা প্রসঙ্গ হচ্ছে সফল ব্যক্তিরা কেন রুটিন মানতে বলেন? এখানে কোনো যাদুকরী বিদ্যা নেই আর যারা সফল বা বিখ্যাত হয়েছেন তারাও সেটা একদিনে অর্জন করেননি। রুটিন শুধু করলেই হবে না বরং সেটাকে নিয়মিত দেখতে এবং আপডেট করতে হবে। একদিনে সময় সবার জন্যেই ২৪ ঘন্টা। কিন্তু কে কিভাবে সময়টাকে কাজে লাগাচ্ছে তার উপর কাজের সফলতা অনেকখানি নির্ভর করে। আর পরিকল্পনা করা না থাকলে যে কোনো কাজের জন্যে গড়ে অনেক বেশি সময় আর পরিশ্রম দিতে হয় গবেষণায় এই তথ্য উঠে এসেছে।
অনেকে বলে থাকেন- প্রতিদিন রুটিন করা হয় না কিংবা আগের দিন যা পরিকল্পনা করি, পরদিন সেইমতো কাজ করা হয় না। এটা হতেই পারে। সেইক্ষেত্রে রুটিনটা বদল করে নিতে ভুলবেন না। তাছাড়া প্রতিদিন কাজের তালিকা চেক করতে ভুলবেন না। আর তাড়াতাড়ি হতাশ হবেন না।
দিন, তারিখ, সময়ের হিসেব রাখুন। একদিন করতে না পারলে পরদিন সেটা পুষিয়ে দেবার চেষ্টা করুন। এটা অবশ্য অভ্যাসের ব্যপার। একদিনে রুটিন মানার অভ্যাস করা সম্ভব নয় এটা ধ্রুব সত্য। বড় বড় কোম্পানিগুলো তাদের ছোট ছোট কাজের প্রতিদিনের রিপোর্ট রাখে। বিক্রি, আয়, ব্যয়, বিনিয়োগ সবকিছুর হিসেব রাখা হয়। পরবর্তীতে সাপ্তাহিক, মাসিক, বাৎসরিক রিপোর্ট তৈরি এবং জমা করা হয়। তারা এই কাজটি করে যাতে কাজের হিসেব এবং পরিস্থিতি দুটো সম্পর্কেই অবগত থাকা যায়।
প্রতিদিনের কাজের পাশাপাশি খরচেরও একটা তালিকা করা যেতে পারে যাতে বাড়তি খরচ অনেকাংশে কমানো যায়। মোটিভেশনাল ভিডিওগুলো এই কথাগুলোই বারবার বলে যাতে আপনি বা আপনারা নিজেদের কাজের সাথে সম্পৃক্ত রাখতে পারেন এবং মানসিকভাবে ভেঙ্গে না পারেন। রুটিন করে কাজ করলে দেখবেন কাজের গতি এবং গুণগত মান অনেকখানি বেড়ে গেছে। যদি কাজের মাঝে বিরতি রাখেন সেটাও তালিকাতে উল্লেখ করতে পারেন।
সবাইকে ধন্যবাদ এই আর্টিকেলটি পড়ার জন্যে। সবাই ভালো থাকবেন এবং চেষ্টা করবেন প্রতিদিনের কাজের একটি করে তালিকা রাখতে। এতে দিনশেষে যে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলবেন বা ফেলতে পারবেন, তার সাথে পৃথিবীর কোনোকিছুরই তুলনা হয় না!