একটি পুষ্টিকর ও নিয়ন্ত্রিত ডায়েট আপনার সাথে সাথে গর্ভের বাচ্চাকেও সঠিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করতে পারে। কিন্তু আপনি কি জানেন, একজন গর্ভবতীর এসময়ে
কতটুকু অতিরিক্ত পুষ্টির প্রয়ােজন পড়ে? যদিও
আপনি শুনে থাকবেন একজন গর্ভবতীকে দুজনের
সমপরিমান খাবার খেতে হবে। তবে দুজন বলতে এখানে প্রাপ্তবয়স্ক দুজন নয়, বরং আপনার সাথে একটি গর্ভস্থ বাচ্চার বৃদ্ধির জন্য সহায়ক অতিরিক্ত পুষ্টিকর খাবার। আর এই অতিরিক্ত খাবারের পরিমানটা ৩০০ ক্যালরির সমান। এই বাড়তি ক্যালরি আপনার সঠিক ওজন বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে। চলুন জেনে আসি গর্ভবতীর ওজন বৃদ্ধি সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য।প্রত্যেক গর্ভবতীর জন্য একই পরিমান ওজন বাড়তে হবে, বিষয়টা তেমন নয়। যদি আপনি পাতলা বা চিকন স্বাস্থ্যের অধিকারিনী হােন, তাহলে ১২-১৮ কেজি বাড়তে হবে, যদি স্বাভাবিক স্বাস্থ্যের হােন, তাহলে ১১-১৫ কেজি, আর যদি মােটা হয়ে থাকেন, তাহলে ৭-১১ কেজিই যথেষ্ট।সাধারণত প্রথম তিনমাসে আপনার ওজন তেমন বৃদ্ধি পাবে না। তাই এসময়ে ২-৩ কেজি ওজন বাড়লেই ঠিক আছে ধরা হয়। তার পর থেকে প্রতি সপ্তাহে আপনার ওজন ৪৫০ গ্রাম করে বাড়বে। তবে
শেষেরদিকে ওজন বৃদ্ধিটা বেশিই হয়ে থাকে।
💜যদি জমজ বাচ্চা থাকে, তাহলে ওজন ৭০০ গ্রাম
করে সপ্তাহে বাড়বে।💜
বাচ্চা → ৩৫০০ গ্রাম
গর্ভফুল → ৯০০-১৩০০ গ্রাম
জরায়ু → ৯০০-২২০০ গ্রাম
এমনিওটিক ফ্লুইড → ৯০০-১৩০০ গ্রাম
স্তনের বৃদ্ধি→ ৯০০-১৩০০ গ্রাম।
রক্ত সাপ্লাই → ১৮০০ গ্রাম
ফ্যাট ও দুগ্ধ উৎপাদন → ৩০০০ গ্রাম
এভাবেই আপনার পুরাে গর্ভকালীন অতিরিক্ত ওজনটা বিভিন্ন ক্ষেত্রে বন্টন হয়ে থাকে।
💪গর্ভাবস্থায় ডায়েট কন্ট্রোল করা যাবে?💪
যদি আপনি আগে থেকেই মােটা স্বাস্থ্যের অধিকারিনী হােন, সেক্ষেত্রে আপনাকে কিছুটা ওজন কমাতে হতে পারে। তবে নিজে থেকে খাওয়া কমিয়ে ডায়েট করতে যাবেন না। ডাক্তার পরামর্শ ক্রমে ডায়েট করবেন। আর আপনি যদি স্বাভাবিক বা পাতলা স্বাস্থ্যের হােন, সেক্ষেত্রে ডায়েট কন্ট্রোলের প্রশ্নই আসে না।
🔥 ওজন বৃদ্ধিতে করণীয়🔥
প্রতিদিন ৬ বার খাওয়ার চেষ্টা করুন। ৩ বার প্রধান খাবার, মাঝে আরও ৩ বার হালকা শুকনাে খাবার বা নাস্তা করতে পারেন। হাতের কাছে সবসময় শুকনাে খাবার রাখুন। যাতে খিদে পেলেই খেতে পারেন। দিনে ২.৫-৩ লিটার পানি পান করুন। রাতে ৮ ঘন্টা ও দিনে ২ ঘন্টা ঘুমাবেন। বাকী সময়ে হালকা কাজ করে সময়
কাটান।মনে রাখবেন, আপনি যদি সক্রিয় জীবন-যাপন করে, তাহলে আপনার ভিতরে ক্ষুধার চাহিদা সৃষ্টি হবে। তাই সারাদিন শুয়ে-বসে থাকবেন না। অতিরিক্ত বমি, নানা অসুস্থতার কারনে মানুষের খাওয়ার চাহিদা কমে যায়। তাই এই সমস্যাগুলাের চিকিৎসা নিন। নয়লে আপনার খাওয়া রুচি নষ্ট হয়ে যাবে। বাইরের অস্বাস্থ্যকর, ফাস্টফুড খাবার খেতে খুবই সুস্বাদু। কিন্তু এগুলাে আপনাকে পুষ্টিকর প্রাকৃতিক খাবারের প্রতি অনিহা সৃষ্টি করবে।