করোনা ভাইরাসের আবিষ্কারের সাথে সংযুক্ত অক্সফর্ডের টিকার পরীক্ষা স্থগিত হয়ে গেছে। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি অগ্রসর যে টিকাটির কথা বলা হচ্ছিলো এবং আশা করা হচ্ছিলো যার সফলতা তা স্থগিত হয়ে গেছে।
এ ভ্যাক্সিনটি উৎপাদনের সাথে সম্পৃক্ত অ্যাস্ট্রোজেনেকা ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়। এটি পরীক্ষার চুড়ান্ত ও শেষ ধাপে ছিলো। কিন্তু একজন অংশগ্রহণকারী হটা অসুস্থ হয়ে যাওযায় এটির পরীক্ষা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
ঠিক কি কারনে পরীক্ষায় অংশগ্রহণকারী ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তা এখন অব্দি জানা যায় নি, তবে এটিকে তারা তাদের পরীক্ষার অংশ হিসেবেই দেখছেন।
এ পর্যন্ত যে কয়টি টিকা চুড়ান্ত পর্যায়ে পরীক্ষাধীন রয়েছে তাদের মধ্যে অন্ততম। তাদের এ ভ্যাক্সিনটি সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় হিসেবে দেখা হচ্ছিলো।
এমনকি বাজারে সবার আগে আসবে বলেও ধারণা করা হয়েছিলো। প্রায় ত্রিশ হাজার মানুষের দেহে এর তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। দেশ গুলোর মধ্যে রয়েছে ব্রিটেন, ব্রাজিল, আমেরিকা ও অন্যন্য দেশ গুলো।
তবে তারা বলছেন তৃতীয় ধাপের পরীক্ষাটি কয়েক মাস থেকে কয়েক বছর অব্দি চলতে পারে। যাতে এ ধরণের ঘটনা অস্বাভাবিক কিছু নয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, পুরো বিশ্বে প্রায় ১৮০টি টিকা আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে। তবে মাত্র কয়েকটি ভ্যাক্সিন তাদের চুড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছে।
যতদিন পর্যন্ত না অসুস্থ হয়ে পড়া ব্যক্তির বিষয়ে জানা যাবে ততদিন অব্দি তাদের এ পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। পরিবর্তিতে কবে নাগাদ আবার শুরু হবে তার নিশ্চয়তা দেওয়া যাচ্ছে না।
তাকে সতন্ত্র ভাবে যাচাই করার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে যে এ পরীক্ষা চলমান থাকবে নাকি বন্ধ হয়ে যাবে। এ ধরনের বড় পরীক্ষার ক্ষেত্রে এসব বিষয় স্বাভাবিক
তবে এ ভ্যাক্সিনের ক্ষেত্রে এবারই প্রথম এমন ঘটলো তা নয়। এর আগেও একবার এর পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিলো। কিছুদিনের মধ্যেই আবার পরীক্ষা শুরু হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। অসুস্থ ব্যাক্তির অসুস্থতার কারন জানা না গেলেও। তিনি শিঘ্রয় সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
এদিকে নভেম্বরের মধ্যেই টিকা পাওয়ার আশা করছে আমেরিকা। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচণী প্রচারণার অংশ হিসেবে এমন আশা করছেন। যা তাকে আসন্ন নির্বচনে জয়ী হতে সাহায্য করতে পারে।
তবে টিকা উৎপাদনের সাথে জড়িত ৯টি প্রতিষ্ঠান এক ভিডিও কনফারেন্স এ গুনগত মান বজায় রাখার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। ফলে তাড়াহুড়োর কোনো সুযোগ নেই।
তৃতীয় ধাপের সফলতার পর কর্তৃপক্ষের অনুমতির পর টিকা বাজারে আনতে পারবে। এর আগে সম্ভব নয়।
এছাড়া অন্য যেসব প্রতিষ্ঠান আবিষ্কারের শেষ পর্যায়ে আছে তারা হলো জনসন এন্ড জনসন, বাইয়োএনটেক, গ্ল্যাক্সোস্মিথক্লেইন, পিফিজের, মের্ক, মর্ডানা, সানোফি এবং নোভাভ্যাক্স।
সবসময়েই নিরাপত্তা এবং টিকা দেয়া ব্যক্তিদের সুরক্ষার বিষয়টিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেবে বলে তারা নিশ্চয়তা দিয়েছে। তবে এখনো ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শেষ করতে পারেনি।
এদিকে এবং রাশিয়া স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত টিকার প্রয়োগ করতে শুরু করেছে। তবে এগুলো বৈশ্বিক ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে না। একই ভাবে তৃতীয় ধাপের পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগেই হয়তো আমেরিকাতেও করোনাভাইরাসের টিকার অনুমোদন দেয়া হতে পারে।
তবে আমরা আশা করি যেকোন অন্তত একটি টিকা সফল হোক, আমরাও হাফ ছেড়ে বাঁচি।
সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। ধন্যবাদ।