আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি নতুন টপিক নিয়ে হাজির হয়েছি। তো আজকে আমি আপনাদের সাথে একদম ভিন্ন ধরণের একটি টপিক নয়ে কথা বলব। আজকে আমি বলতে যাচ্ছি কাউকে মন থেকে ভালোবাসলে কি পাওয়া যায়? তো আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।
বিঃদ্রঃ এই পোস্টটি সম্পূর্ণ আমার মতামতের উপর ভিত্তি করে তৈরি। তাই কোনোকিছু ভুল মনে হলে ক্ষমার চোখে দেখবেন। কাউকে মন দিয়ে ভালোবাসা যাকে ‘সত্যিকারের ভালোবাসা’ ও বলা হয়। একজন ব্যক্তি যখন তার প্রেমিক/প্রেমিকাকে সব দয়ে ভালোবাসে বা একজন আরেকজনের জন্য সব করতে প্রস্তুত এমন অবস্থাকে মন দয়ে ভালোবাসা বা সত্যিকারের ভালোবাসা বলা যায়।
আমরা বিভিন্ন নাটক, ফিল্ম বা গল্পের বইয়ে প্রায়ই দেখতে পায়ই দুইজন ব্যক্তি একে অপরকে ভালোনাসে এবং তারা অনেক সমস্যা ও প্রতিকূলতা অতিক্রম করে একসাথে থাকে এবং তাদের সম্পর্ক সফল হয়। কিন্তু মনে হয় এসব শুধু কল্পনাতেই ঘটে আসল দুনিয়ায় এটি আদৌ ঘটেনা।
এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে একজম ব্যক্তি গড়ে জীবনে ৩-৪ বার প্রেমে পড়ে। অনেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই সংখ্যা বেশি আবার অনেকের ক্ষেত্রে কম। এর মধ্যে মানুষ হয়ত জীবনে একবার সত্যিকারের ভালোবাসার সুযোগ পায়। অনেকে তাও পায় না। বিশেষ করে বর্তমান সময়ে বেশিরভাগ প্রেম ভালোবাসাই মিথ্যা। ধরে নেই দুইজন ব্যক্তি একে অপরকে মন দিয়ে ভালোবাসছে। এখন কি হতে পারে?
১. দুইজন একে অপরকে ৪-৬ বছর বা তারও বেশি ভালোবাসে। একসময় তারা তাদের পরিবারের হাতে ধরা খায়। আমার দেশে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে খারাপভাবে দেখা হয়। তাই স্বাভাবিকভাবেই তাদের পরিবার এই সম্পর্ক রাখতে দিবে না ও বিবাহের জন্য আগাবে না। যদি আগায়ও তাও ফ্যামিলি স্ট্যাটাস ইত্যাদি ইত্যাদি এর জন্যও তাদের সম্পর্ক শেষ হয়ে যাবে। এক্ষেত্রে বিয়ে হওয়া তথা একসাথে থাকা অনেক কঠিন।
২. ধরি তারা তাদের পরিবারকে নিজেরাই বললো যে তারা একে অপরকে ভালোবাসে। সেক্ষেত্রেও পরিবার প্রথম দিকে খুবই অসন্তুষ্ট থাকবে এবং তাদের প্রতি রাগ হবে। পরে তারা বিয়ের জন্য কথা বললেও ৫০/৫০ সুযোগ। আমি আগেও বললাম ফ্যামিলি স্ট্যাটাস, বাবা-মা কি করে ইত্যাদি ইত্যাদি।
৩. তারা পরিবারের কাছে ধরা খাওয়ার পর পরিবারের কোনো সিদ্ধান্ত বা কোনো রাজি বা মানা না মেনেই তারা একে অপরের সাথে পালিয়ে গেল। এক্ষেত্রেও তাদের মধ্যে কয়দিম সম্পর্ক থাকবে তা নিশ্চিত নয়। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রথমত তাদের একজনের কাছেও ওরকম কোনো টাকাও নেই, চাকরি নেই আর তার পাশাপাশি পরিবারও কোনো সাহায্য করবে না। তো তাদের দুইজনের পক্ষে প্রথমদিকে জীবন চালাতে অনেক কষ্ট হবে। তারা যদি প্রথম দুই বছর কাটাতে পারে এবং চাকরির ব্যবস্থা করতে পারে তাহলে ধীরে ধীরে সব ঠিক হয়ে যাবে। এক সময় তাদের পরিবারও তাদের মেনে নিবে। অনেক ব্যক্তিই বর্তমানে এই সিদ্ধান্ত নেয়।
কিভাবে সত্যিকারের ভালোবাসাকে স্বার্থক করা যায়?
আমার মতে দুই কারণে যেকোনো সম্পর্ক শেষ হয়ে যায়। প্রথম হচ্ছে পরিবার ও অপরটি হচ্ছে কোনো ভুল করা বা নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি।
প্রথম কারণটিই বেশিরভাগ সত্যিকারের/সিরিয়াস সম্পর্কের শেষের কারণ। জীবন আমার তাই সিদ্ধান্ত নিব আমি আমার পরিবার আমার জীবনের এতো গুরুত্বপূর্ণ কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিবার রাখে বলে আমার মনে হয় না। আমি যদি কারো সাথে আমার বাকি জীবন কাটাতে পারি তাহলে তাদের সমস্যা কি এটিও একটি বিষয়।
তাই ছেলেমেয়ে যে সিদ্ধান্তই নেয় না কেন তাদের এটি বিবেচনা করা উচিত ও মেনে নেওয়া উচিত। তারা চাইলে তাদের ছেলেমেয়েকে বোঝাতে পারে বা পরামর্শ দিতে পারে কারণ এখনো তাদের বয়স কম এবং তারা আবেগে চলতেছে এর মানে এই নয় যে তারাই আমার জীবনের সিদ্ধান্ত নিবে।
আর দ্বিতীয় যে কারণটি ভুল বোঝাবুঝি সেটা ওরকম কোনো বড় কারণ নয়। তাদের মধ্যে সত্যিই ভালোবাসা ও একতা থাকলে কয়েকদিনের মধ্যেই ঠিক হয়ে যাবে।
উপসংহারঃ
অবশেষে বলব যে প্রতিটি সত্যিকারের ভালোবাসাই অমর। এর কোনো শেষ নেই। কিন্তু বর্তমানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিভিন্ন অবস্থায় পরে এই ভালোবাসার সমাপ্তি ঘটে যদিও তারা একে অপরকে কখনোই ভুলে না। তারপর হাজারো ব্যক্তি ডিপ্রেশনে চলে যায় এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে গড়ে প্রায় ২৭-৪০% ব্যক্তি ব্রেকআপের পর ডিপ্রেশনে চলে যায়।। এমনকি আত্মহত্যার মতো বা আত্মহত্যার চেষ্টাও করে ফেলে। তাদের পরিবার তথা সমাজ তাদের পাশে এসে দাঁড়ালে হয়ত এই আত্মহত্যাটি ঘটত না। সকলের সচেতনতা অত্যন্ত জরুরি।
তো আজকের জন্য এতটুকুই। পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আবার কয়েকদিন পর নতুন কোনো একটি টপিক নিয়ে হাজির হব। ততদিন পর্যন্ত ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন সেই কামনায় আজকের জন্য বিদায় জানাচ্ছি। গ্রাথোরের সঙ্গেই থাকুন।