দিন যত যাচ্ছে করোনাভাইরাসের প্রভাব ততো দ্রুত বিস্তার লাভ করছে। এজন্য অনেকেই নিজ উদ্যোগে কোয়ারেন্টাইন অর্থাৎ সঙ্গরোধে যাচ্ছেন। এ ভাইরাসের প্রকোপে বহু কর্ম প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে কর্মীদের ঘরে বসে কাজ করারও নির্দেশ দিয়েছে। করোনাভাইরাস রোধে ও কর্মীদের স্বাস্থ্যের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই মূলত এই কাজ করা হয়েছে। যা বর্তমান প্রেক্ষাপটে খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি উদ্যোগ।
তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে নিজ ঘরে সঙ্গরোধে থাকা মানে যেমন খুশি তেমনভাবে থাকাকে বোঝায় না। কোয়ারেন্টাইন অর্থাৎ সঙ্গরোধে থাকার অর্থ হল, আপনাকে বেশ কিছু নিয়ম মেনে নিজ বাসায় অবস্থান করতে হবে। সঙ্গরোধে থাকাকালীন অবস্থাতেও যে নিয়মগুলো অবশ্য পালনীয় সেগুলো জানা অবশ্যই দরকার। তো চলুন বিষয়গুলো একে একে জানা যাক।
বাসার সুইচ ব্যবহার করুন কনুইয়ের সাহায্যেঃ বিষয়টি অনেকের কাছেই হাস্যকর মনে হতে পারে। কিন্তু বর্তমানে যে পরিস্থিতি তাতে এই কাজটি আপনাকে করতেই হবে। এখন ঘরের বিভিন্ন সুইচ ব্যবহারের সময় হাতের আঙ্গুলের ব্যবহারকে ভুলে যান। সুইচ অন-অফ করার সময় এখন থেকে কনুই ব্যবহার করুন। হাত সাবানের সাহায্যে ধুয়ে এসে যদি সুইচ স্পর্শ করা হয় তবে হাত ধোয়া বা না ধোয়া সমান হয়ে যায়। এজন্য এখন থেকে কুনইয়ের সাহায্যে এই কাজটি করুন।
দরজা ব্যবহারে কাঁধ করুনঃ দরজা-জানালার হাতলকে জীবাণুনাশক তরলের সাহায্যে পরিষ্কার করে রাখার পরেও, যথাসম্ভব চেষ্টা করুন এই হাতলগুলো ব্যবহার না করার জন্য। বাসার প্রধান দরজা ব্যতীত সকল দরজা কাঁধের সাহায্যে খোলা এবং বন্ধ করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে এখন থেকে। ওয়াশরুমের দরজা ব্যবহারের ক্ষেত্রে দরজা ব্যবহারের পর অবশ্যই ভালো করে হাত ধুয়ে নিন।
খাবার হতে হবে ভালোভাবে সিদ্ধ ও রান্না করাঃ অনেকেই আছে যারা হাফ বয়েলড ডিম ও ডিম পোচে ডিমের কুসুম নরম খেতে পছন্দ করেন তাদের জন্য এটা একটু দুঃসংবাদই বটে। বর্তমান পরিস্থিতিতে কোন খাবারই আধা সিদ্ধ অবস্থায় খাওয়া ঠিক হবে না। যে খাবারই খাওয়া হোক, তা সম্পূর্ণ ও ভালভাবে সিদ্ধ ও রান্না করা অবস্থাতেই খাওয়ার চেষ্টা করুন। একটা প্রশ্নঃ প্রতিদিনের খাবারেও কি করোনাভাইরাসের উপস্থিতি থাকতে পারে? এমন কোন প্রমাণ বিজ্ঞানীরা এখনো পাননি। তবে সচেতন থাকাই এখন সবচেয়ে বেশি জরুরি বিষয়।
এড়িয়ে যান ফিল্টারের পানিঃ এটা কি বললেন আপনার মাথা ঠিক আছে তো? হ্যাঁ ঠিকই বলছি। ফিল্টারের পানি পরিশুদ্ধ হলেও এখন বর্তমান সময়ে ফিল্টারের পানি পান না করা হবে সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ। পানি আধা ঘন্টা কিংবা চল্লিশ মিনিট ফুটিয়ে ছেঁকে নিয়ে ঘরোয়া তাপমাত্রায় এনে তবেই পান করা উচিৎ।
খেতে বসুন দূরত্ব বজায় রেখেঃ বাসায় সবার সাথে বসে যখন একসাথে দুপুর কিংবা রাতের খাবার খেতে বসেন তখন নিশ্চয় সকলে কাছাকাছি বসা হয়। যতই খারাপ লাগুক না কেন, আপাতত এই অভ্যাসটিকে বিদায় জানান। পরিবারের সকলে একসাথে খেতে বসলেও এখন দূরত্ব বজায় রাখা জরুরী।
রেলিংয়ে হাত দিবেন নাঃ কোয়ারেন্টাইনে থাকা মানেই হলো নিজ বাসায় অবস্থান করা ও বাসা থেকে একেবারেই বের না হওয়া। তবে প্রয়োজনে ও জরুরি কোন কাজে যদি কখনো বের হতেই হয়, তবে নিজের হাতকে সামলে রাখুন। কারণ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায়, সিঁড়ি ব্যবহারের নিজের অজান্তেই সিঁড়ির রেলিংয়ে হাত চলে যায়। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই কাজটিও একেবারেই করা যাবে না।
সর্বোপরি সচেতনতা বজায় রাখুন। ভয় না পেয়ে কীভাবে নিজেকে ও আশেপাশের সবাইকে সচেতন করা যায় সে বিষয়ে ভাবুন।