আসসালামু আলাইকুম বন্ধুরা। কেমন আছেন সবাই? আপনাদের দোয়ায় ও আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও বেশ ভালো আছি। আজ অনেকদিন পর আপনাদের সামনে চলে এলাম কয়েকটি মজার গল্প নিয়ে। চলুন পড়ে দেখি, মানুষের জীবনে ঘটে যাওয়া সেসব হাস্যরসাত্মক গল্প…
গল্প-১: একটা জায়গার নাম ছিলো মাইগপাড়া। নামটা শুনতে একটু খারাপ লাগলেও ওই পাড়ার মানুষেরা খুবই ভালো এবং ভদ্র ছিলেন। তবে কেন ওই জায়গার নামটা এমন? জানা যায়, ব্রিটিশ আমলে এখানে পতিতালয় ছিলো। ব্রিটিশ বাহিনী ও তৎকালীন কমান্ডারেরা এখানে রোজ আসতো। কিন্তু বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে এই নামটা তো মেনে নেওয়া যায়না! অতি শীগগির এই এলাকার নাম পাল্টাতে হবে…
বহুদিন ধরে এই ব্যাপার নিয়ে চিন্তিত ছিলেন এলাকার মুরুব্বীরা। শেষে সিধান্ত নেওয়া হয়, সমাজের সকলের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের চাঁদা তোলা হবে এবং সেই চাঁদা দিয়ে বড় করে একটা খাওয়ার আয়োজন করা হবে। সে আয়োজনে এলাকাবাসী এবং এলাকার আশে পাশের সবাই উপস্থিত হবে। মনের আনন্দে সবাই খাবে এবং সবাইকে ডেকে বলে দেওয়া হবে, এলাকার নাম মাইগপাড়া থেকে মল্লিকপাড়া করে দেওয়া হবে।
যথাসময়ে সকলে উপস্থিত হলো। সবাই পেট পুরে খেলো। সবাইকে ডেকে মাইকিং করে জানিয়ে দেওয়া হলো, অত্র এলাকার নাম আজ থেকে “মল্লিকপাড়া”। সবাই সেটা সমঃস্বরে মেনে নিলো। আজ থেকে এ পাড়ার নাম ” মল্লিকপাড়া”।
একটু পর সবাই যার যার এলাকায় চলে গেলো। অতঃপর এক লোক আরেক লোককে ডেকে বলছে,
“কিরে মনার বাপ! মাইগপাড়ায় যাওনাই খাইতে? খুব ভালো রান্না হইছে কিন্তু…”
আরেক লোক তার সহযাত্রীকে ডেকে বলে, “আইজ কিন্তু বেজায় খানা চইলছে মাইগপাড়ায়! কি বলো তমিজের বাপ..”
অতঃপর মল্লিকপাড়া -নামটা মুছেই গেলো সকলের মন থেকে…
গল্প-২: এক বন্ধু তার আরেক বন্ধুকে ম্যাসেজ দিয়ে বলছে,
– মামা, আজ কিন্তু মেয়ে দেখতে যাচ্ছে আমার মা..
– কি বল মামা! তোর বিয়ে তাহলে হয়েই যাচ্ছে এই মাসে!
– হাঁ দোস্ত..
– দোস্ত, পেয়ে গেলে একলা খাইছনা…
– মানে?
– সারাজীবন তো পড়ে আছে, আমারেও একটু দিছ তোর বউটা…
– কেন মামা?
– আরে মামা বুঝোসনা.. তোর বউ মানে তো আমারও বউ, তাইনা?
– আরে বেটা কথা পুরোটা শুনবি তো..
– হাহা! বল.. বল..
– আমার মা তোর বাসায় যাচ্ছে; তোর মেঝ বোনকে আমার জন্য দেখবে..
গল্প-৩: রাতের বেলায় দুই বন্ধু আম চুরি করতে গিয়েছে কবরস্থানের পাশের গাছটাতে। প্রথম বন্ধু গাছে উঠলো। কয়েকটা আম পেড়ে বস্তাতে নিলো। কয়েকটা আম নিচে দাঁড়িয়ে থাকা দ্বিতীয় বন্ধুকে খেতে দিলো।
ওইসময় কবরস্থানের পাশ দিয়ে একটা লোক যাচ্ছিলো। বাজার থেকে কয়েকটা মুরগি নিয়ে বাড়ির দিকে এগোচ্ছিলো। সে একজন দর্জি ছিলো। হঠাৎ তার মোবাইলে কল আসে কর্মচারীর,
– দাদা, জামাটা কিভাবে বানাবো বুঝতেছিনা..
দর্জি বলে, “হাত দুইটা কেটে রাখ, আর গলাটা অল্প কেটে রাখিছ। আমি আসছি পুরোটা কাটতে..”
এই শুনে আম গাছের উপরে থাকা প্রথম বন্ধুটা ভাবে তাদেরকে ভূতে পেয়েছে! কিসব হাত পা কাটার কথা বলছে! নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সে উপর থেকে পড়ে যায় মাটিতে!
হাতে থাকা আমগুলো থেঁতলে গিয়ে কিছুটা রক্তের মতো লাগছিলো তার গায়ে..
আর বিকট আওয়াজ শুনে দর্জি এসে দেখে একটা কিছু মাটিতে পড়ে রক্তমাখা হয়ে আছে। তাকে ভূত মনে করে সেও অজ্ঞান হয়ে যায়!
আর নিচে দাঁড়িয়ে থাকা দ্বিতীয় বন্ধুটা তাড়াতাড়ি গিয়ে প্রথম বন্ধুকে দেখে রক্তমাখা হয়ে পড়ে আছে! একটু দূরে দর্জিকে দেখে, দর্জির পাশে থাকা কাটা মুরগির ব্যাগটা থেকে মুরগির রক্ত ঝরার কারণে মনে হচ্ছিলো সে আদমখোর!
এসব দেখে দ্বিতীয় বন্ধুটাও জ্ঞান হারায়!
তাদের এসব ঘটনা দেখে সত্যিকারের ভূতগুলো প্রচুর হাসছিলো! সেই সাথে আমি আপনিও হাসছি… 😃
কেমন লেগেছে গল্পটা, কমেন্ট বক্সে জানাতে ভুলবেননা কিন্তু। সামনে আরও অনেক গল্পের ঝুলি নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবো আমি মারুফ আহমেদ… দোয়া করবেন…