Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

চানাচূর (একটি ভয়ের গল্প)

লন্ঠনের আলোয় গ্রামের মেঠোপথ ধরে হেটে চলেছি আমি।ইদানিং কেমন যেন নিশাচরের মতো স্বভাব হয়েছে আমার।রাত-বিরেতে অকারণেই জঙ্গলের পথ ধরে হেটে বেড়াই,এই আজ যেমন হাঁটছি।অন্যদিন আমার  সাথে  আরেকজনও থাকে এই নৈশ অভিযানে।তবে আজ নেই।ওয়াসিম ভাইয়ের সাথে আর কোনদিনও দেখা হবে না ভাবতেই কান্না পাচ্ছে আমার।সৃষ্টিকর্তা পৃথিবীতে এমন কয়েকটা নিয়ম তৈরি করেছেন যেটা তাঁর সৃষ্টির কাছে অপ্রিয় বটে তবে অলঙ্ঘনীয়!মৃত্যুও তেমনই একটা বিষয়।আচ্ছা,মৃত্যু বিষয়টা কি খুব বিচ্ছিরি? কই আমারতো তেমন মনে হয় না।এসব হাবিজাবি ভাবছি হঠাৎই খেয়াল করলাম, আমার ঠিক সামনে থেকেই আরেকটা লন্ঠন জ্বালিয়ে কেউ একজন আসছে!এতরাতে কে হতে পারে?আমি আর ওয়াসিম ভাই ছাড়াতো…

“কিরে,কোথায় যাচ্ছিস,আকবর?নে চানাচূর খা।” বলে আমার দিকে চানাচূরের একটি ঠোঙা  এগিয়ে দিল লোকটি।আমার শিরদাড়া বেয়ে ভয়ের একটা হিমেল স্রোত বয়ে গেল সঙ্গে সঙ্গে! “ওয়াসিম ভাই, আ..প..নি?” তোতলাতে শুরু করলাম।

“হু আমি,কেন কি হয়েছে?আমার চেহারা এর আগে কখনো দেখিস নি নাকি?আমাকে দেখে ছাগলের তিন নাম্বার বাচ্চার মতো কাঁপছিস কেন?”

“আপনি এখানে আসলেন কিভাবে?”আওয়াজ নয় যেন গোঙানি বেরিয়ে এলো আমার কন্ঠ থেকে!

“মায়া জিনিসটা বড়ই অদ্ভুত জিনিস রে ভাই,এত সহজেই কি আর সেটা ত্যাগ করা যাবে?তোর মায়া এখনও কাটিয়ে উঠতে পারিনি আমি, বুঝলি?তাইতো…” কেমন যেন রিনরিনে কন্ঠে ওয়াসিম ভাই বললেন কথাগুলো। আমার গাটা ছমছম করে উঠল।খেয়াল করলাম একটা চেনা অথচ অদ্ভুত গন্ধ বেরোচ্ছে ওয়াসিম ভাইয়ের গা থেকে।গন্ধটা এর আগেও পেয়েছি আমি। কিন্তু কোথায় থেকে সেটা ঠিক ঠাওর করতে পারছি না এখন।আবারও আগের মতো রিনরিনে কন্ঠে বলে উঠল সে,

“ওই ঘটনার পর থেকে মানে রোড অ্যাক্সিডেনোটর কথা বলছি আর কি, বারবার শুধু একটা কথাই ভেবেছি জানিস?কিভাবে তোর সাথে দেখা করতে পারব আবার।কিভাবে তোর কাছে ফিরে আসতে পারব?যে মারা গেছে সে কি…” আচমকা মাঝপথে কথা থামিয়ে দিলেন ওয়াসিম ভাই।আমার দিকে তাকালেন অদ্ভুত দৃষ্টিতে! একটু আগের  গন্ধটা আরো বেড়ে উঠেছে এখন।

“আপনি ফিরে যান ওয়াসিম ভাই।সত্যটাকে গ্রহণ করতে শিখুন।মৃত্যুকে মেনে নিতে পারাটাই তো জীবন,তাই না?” কেন জানি না ওয়াসিম ভাইকে এখন আর আগের মতো ভয় করছে না আমার।

“সেটা তো এখন আর সম্ভব নয় ব্রাদার!”

“কেন?” গলাটা কেঁপে উঠল আমার।এতক্ষণে গন্ধটা চিনতে পেরেছি আমি।

“কারণ তোর কাছে আসার জন্য আত্মহত্যা করতে হয়েছে আমাকে!”

মূহুর্তে কয়েকঘন্টা আগের কিছু এলোমেলো স্মৃতি আমার ভীড় করল আমার মস্তিষ্কে!আমি রাস্তা পাপর হচ্ছি …একটা বাস…ছুটে আসছে…ফুলস্পিডে…আর ভাবতে পারলাম না আমি।চোখ বন্ধ করে ফেললাম!

Related Posts

31 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No