চলার পথে আমরা কত মানুষের সাথেই পরিচিত হই। আমাদের জীবন যাপন পদ্ধতি যেমনই হোক না কেন, মানুষ আমাদের নিয়ে কথা বলবেই। তাদের কথা আমাদের উপর প্রভাব বিস্তার করে। মানুন বা না মানুন কিন্তু এটাই সত্য। কারণ মানুষ সামাজিক জীব এবং আমরা তাদের সাথেই নিজের জীবনটা কাটাই।
স্বাভাবিক ভাবেই আমাদের জীবনধারায় তাদের প্রভাব থাকবে। কিন্তু সব সময় কি আমরা সবার মন জুগিয়ে চলতে পারি? উত্তরঃ না। কারণ আমরা সব সময় নিজের দিকটাই আগে বুঝি। কে কি বললো, কেন বললো আর কি কারণেই বা বললো, তা নিয়ে প্রথমেই আমরা মাথা ঘামাতে চাই না। নিজের যুক্তি অন্যের ধোপে না টিকলে আমরা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করি। কিন্তু সব সময় এই তর্কে জিতে যাওয়ার সম্ভাবনাও কিন্তু খুব বেশি নেই। এমন ক্ষেত্রে আমরা চুপ হয়ে যাই।
চুপ হয়ে যাওয়ার মাঝে ক্ষতি নেই বরং লাভটাই বেশি। প্রতিপক্ষ আপনার পরবর্তী ধাপ কখনোই টের পাবে না। আপনার মৌন চিত্ত বুঝে ওঠা তাদের পক্ষে সম্ভব না। যেহেতু সম্ভব না, সেহেতু আপনার ব্যাপারে তাদের নীতিগত অবস্থান পরিবর্তন হবে। তারা এবার বোঝার চেষ্টা করবে যে আপনি কি বোঝাতে চেয়েছেন। এবার হয়তো তাদের মনের দেয়ালে ঝুলবে আপনার যুক্তি আর উন্মুক্ত হবে সম্ভাবনার এক নতুন দ্বার।
তবে একটা কথা। হতে পারে আপনার কথায় কেউ চুপ হয়ে গেছে। যেকোন কারণ হতে পারে কিন্তু সেই চুপ থাকা ব্যক্তিকে কখনও দূর্বল ভাবা উচিত না। আপনি সময় নিন। বোঝার চেষ্টা করুন। হতে পারে তার মাঝে এমন এক সম্ভাবনা লুকিয়ে আছে যা পরবর্তীতে আপনার এবং বাকি সবার উপকারে আসবে৷ তাই আমাদের এটাই কর্তব্য হওয়া উচিত যে আমরা কাউকে কষ্ট না দিয়ে তার মাঝে লুকিয়ে থাকা কথাগুলো উপলব্ধি করি।
কেউ যখন আপনার কথার সাথে একমত পোষণ করতে পারে না এবং আপনাকে দূরে ঠেলে দেয়, আপনি শুধু অপেক্ষা করুন। সময় সবাইকে সুযোগ দেয় নিজেকে প্রমাণ করার। আপনি যদি নিশ্চিত হন যে আপনার অব্যক্ত কথা সত্যিই তাৎপর্যপূর্ণ এবং শুধুমাত্র ভুল বুঝার কারণে আপনার কথা তারা মেনে নেয় নি, তাহলে অবশ্যই আপনার ধৈর্য ধরতে হবে। সুযোগ আসবেই একদিন। তখন নিজের কথা আপনি উপস্থাপন করতে পারবেন।
চুপ থাকা মানে শক্তিহীন না। এটা আপনার ধৈর্যের সর্বোচ্চ স্তর। সঠিক সময়ে আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করবেন। অন্যদিকে আপনার প্রতিপক্ষও সময় পাবে আপনাকে বোঝার। তারপর তারা নিজেরাই বিজয়ের মালা নিয়ে আপনাকে বরণ করে নেবে। নিজের উপর আস্থা রাখুন। ভরসা করুন। বিজয় আপনার প্রাপ্য। সোনার তরী এই এলো বলে।