আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। সৃষ্টিকর্তার ইচ্ছায় আমিও ভালো আছি। আজকে আপনাদের কাছে উপস্থাপন করার চেষ্টা করব তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সূচি ২০২২ ও নিয়ম সম্পর্কিত কিছু তথ্য নিয়ে। তাহলে আর দেরি না করে শুরু করা যাক।
তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সূচি ২০২২
তাহাজ্জুদ এমন একটি ইবাদত যেটি আল্লাহর কাছে অধিক প্রিয় একটি ইবাদত। তাহাজ্জুদ নামাযের ফজিলত জানলে আপনি ও অবাক হয়ে যাবেন। সকল ইবাদত এর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর ও অতুলনীয় একটি ইবাদত হলো তাহাজ্জুদ। তাহাজ্জুদ পড়ে আপনি আল্লাহর কাছে প্রিয় বান্দা হিসেবে আল্লাহর কাছে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারবেন। আজকের পোস্ট এ আমি আপনাদের কে জানিয়ে দিব তাহাজ্জুদ নামাজ এর ফজিলত কি? তাহাজ্জুদ নামাজ পড়লে কি হয়? তাহাজ্জুদ নামায কখন পড়তে হয়? এসব নানান ধরনের প্রশ্নের উওর আজকের এই পোস্টে আমি আপনাদের কে জানিয়ে দিব। ( ইসমে আজম পড়ার সময় )
তাহাজ্জুদ নামাজ কি ও এর ফজিলত
তাহাজ্জুদ শব্দের অর্থ জেগে ওঠা। অর্থাৎ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের জন্য মধ্য রাতে জেগে ওঠে তাহাজ্জুদ এর নিয়তে নামাজ আদায় করাই হলো তাহাজ্জুদ নামাজ। সকল নফল ইবাদতের মধ্যে অন্যতম হলো তাহাজ্জুদ। এর পুরস্কার স্বরুপ আল্লাহ জান্নাতুল ফেরদৌস দান করতে পারেন তাই এই নামাজের ফজিলত ও গুরুত্ব অনন্য।
তাহাজ্জুদ নামাজের সময় সূচি ২০২২ ও নিয়ম
তাহাজ্জুদ পড়ার সর্বোত্তম সময় হলো মধ্য রাত হতে ফজরের আজানের আগ পর্যন্ত। অর্থাৎ ২টা থেকে ৪টা হলো সর্বোত্তম সময় হলো তাহাজ্জুদ নামাজ এর সময়। তবে ইশার নামাজ এর পরও এই নামাজ আদায় করার সুযোগ রয়েছে।
তাহাজ্জুদ নামাজের নিয়্যত
نَوَيْتُ اَنْ اُصَلِّىَ رَكَعَتِى التَّهَجُّدِ – اَللهُ اَكْبَر
অর্থ: দুই রাকাআত তাহাজ্জুদের নিয়ত করছি…
অতঃপর ‘আল্লাহু আকবার’ বলে নিয়ত বেঁধে নামাজ পড়া।
মহানবি হযরত মুহাম্মদ (স.) এর আঙ্গিকে তাহাজ্জুদ নামাজঃ
পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হওয়ার পূর্বেই আমাদের নবী কারীম (স.) এর ওপর তাহাজ্জুদ এর নামাজ ফরজ হয়। তিনি নিয়মিত এই নামাজ আদায় করতো। তিনি তাহাজ্জুদ নামাজ এর পর যে দোয়াটি পড়তো সেটি হলোঃ
প্রিয়নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম গভীর রাতে তাহাজ্জুদের নামাজ আদায়ের জন্য ওঠে কুরআনের এ আয়াতসহ সুরা আল-ইমরানের শেষ পর্যন্ত পড়তেন। – (বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত)
رَبَّنَا مَا خَلَقْتَ هَذا بَاطِلاً سُبْحَانَكَ فَقِنَا عَذَابَ النَّارِ – رَبَّنَا إِنَّكَ مَن تُدْخِلِ النَّارَ فَقَدْ أَخْزَيْتَهُ وَمَا لِلظَّالِمِينَ مِنْ أَنصَارٍ – رَّبَّنَا إِنَّنَا سَمِعْنَا مُنَادِيًا يُنَادِي لِلإِيمَانِ أَنْ آمِنُواْ بِرَبِّكُمْ فَآمَنَّا رَبَّنَا فَاغْفِرْ لَنَا ذُنُوبَنَا وَكَفِّرْ عَنَّا سَيِّئَاتِنَا وَتَوَفَّنَا مَعَ الأبْرَارِ
উচ্চারণ: রাব্বানা মা খালাক্বতা হাজা বাত্বিলান, সুবহানাকা ফাক্বিনা ‘আজাবান্নার। রাব্বানা ইন্নাকা মাং তুদখিলিন্নারা ফাক্বাদ্ আখঝাইতাহু, ওয়া মা লিজজ্বালিমিনা মিন্ আংছার। রাব্বানা ইন্নানা সামি’না মুনাদিআই ইউনাদি লিল ইমানি আন আমিনু বিরাব্বিকুম ফাআমান্না; রাব্বানা ফাগফিরলানা জুনুবানা ওয়া কাফ্ফির আন্না সাইয়্যেআতিনা ওয়া তাওয়াফ্ফানা মাআ’ল আবরার।’
অর্থ: হে আমাদের প্রতিপালক! এসব তুমি অনর্থক সৃষ্টি করনি। পবিত্রতা তোমারই জন্য। আমাদেরকে তুমি জাহানড়বামের শাস্তি থেকে বাঁচাও। হে প্রতিপালক! নিশ্চয়ই তুমি যাকে জাহানড়বামে নিক্ষেপ কর তাকে অপমানিত কর। আর যালিমদের জন্য কোন সাহায্যকারী নেই। হে আমাদের প্রভু! আমরা ঈমান আনার জন্য একজন আহবানকারীকে আহবান করতে শুনে ঈমান এনেছি। হে আমাদের পালনকর্তা! তুমি আমাদের সকল গোনাহ মাফ করে দাও। আমাদের সকল দোষ-ত্রুটি দূর করে দাও। আর নেক লোকদের সঙ্গে আমাদের মৃত্যু দাও।
তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়ে শেষ কথা
তাহাজ্জুদ নামাজ এমন একটি ফজিলত ও বরকতময় নামাজ যেটি আপনার ভাগ্য ও জীবন কে বদলিয়ে দিতে পারে। তাই যে ব্যক্তি তাহাজ্জুদ নামাজ নিয়মিত আদায় করতে পারবে সে ব্যক্তি জীবনে ও আখিরাতে ততই আল্লাহ’র প্রিয় বান্দা হিসেবে সমৃদ্ধ লাভ করতে পারবে। তাই প্রত্যেক মুসলমান ব্যক্তির উচিত তাহাজ্জুদ নামাজ কে তাদের নিয়মিত ইবাদত এর সামিল করা। কেননা তাহাজ্জুদ নামাজই হলো একমাত্র আল্লাহ’র সাথে সরাসরি দোয়া প্রকাশ করার মাধ্যম।
কেননা মধ্য রাতে আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন বান্দার জন্য নেমে আসেন এবং তাদের ইচ্ছে গুলো শোনার জন্য সেসব বান্দা দের জন্য অপেক্ষা করেন যারা তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করে নিজেদের ইচ্ছে গুলো আল্লাহ’র কাছে বলেন। তাই এই তাহাজ্জুদ নামাজ জীবন ও আখিরাত কে সুন্দর করার অন্যতম মাধ্যম।
আজ এই পর্যন্তই। পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।