তোমার অশ্রু অসহ্য।
-তাহলে দূরে চলে যাও।
-না,না।
-লক্ষ্মীটি চলে যাও। আমাকে ছেড়ে দাও। একলা!
-আমি মারা যাব।
-নিষেধ করেছিলাম। এমন কথা বলতে।
-অমান্য করব। বারবার করব।
-যবানিকাপাত ঘটবেই। আমার তোমার সকলের।
-তোমার অন্তিমে আমার হৃদয়ক্ষরণ হবে যে!
-প্লিজ এমন করে বোলো না।
-আগলে রাখবে আমাকে?
-অপরাগ যে!
-তাহলে সক্ষম হও। আমি আছি।
-যেতে বলেছি না। কথা শুনছো না কেন?
-শুনব না! আমি এখানে থাকবো।
-ওগো রাগ করো না! চলে যাও। প্লিজ!
-হারিয়ে ফেলব তোমাকে।
-আমি আছি তো তোমার হৃদয়তে।
-উহু! আমার সর্বাঙ্গ জুড়ে।
-যাও এবার!
বাহিরের দুনিয়া অন্ধকারে আচ্ছাদিত। আকাশ মেঘমেদুর হয়ে গেছে। এদিকে বাতি জ্বালাতে দিচ্ছে না ফাহেদা। বারবার সে বলছে,
-প্লিজ! আমার কাছে এসো না। এই অন্ধকারে থাকতে দাও আমায়। নির্জন, নিঃশব্দে আমি শুধু তোমার স্মৃতি বিচরণ করতে চাই। প্লিজ এসো না আমার কাছে।
ফাহেদার বারণ খালেদ মানতে নারাজ। খালেদ বারবার ফাহেদার কাছে আসতে চায়। কিন্ত! অজানা কিছু সর্তকবাণীর কারণে খালেদ কাছে আসতে পারে না ফাহেদার কাছে। এই কিসের সর্তকবাণী?
ফাহেদা আবার বলে উঠল,
-ওগো চলে যাও। তুমি আছো তো আমার হৃদয়তে!
খালেদের অন্তরে এক অশান্তি ঢেউ বয়ে যাচ্ছে। সে পূর্বের উত্তর ন্যায় উত্তর দিল,
-উহু, আমার সর্বাঙ্গে জুড়ে।
-হ্যা গো তোমার সর্বাঙ্গে জুড়ে । প্লিজ চলে যাও এবার! লক্ষ্মীটি!
খালেদ দূর হতে মাথা নাড়ছে। সে ফাহেদাকে একলা রেখে কোথাও যাবে না। কিন্তু ফাহেদা দূরে কেন? কিসের সর্তকবাণীতে খালেদ এতো দূরে?
ফাহেদার চোখ হতে অশ্রুর ফোঁটা বেয়ে বেয়ে কান দিয়ে পড়ছে। এই অশ্রুর বেদনার না! সুখের আনন্দের। এমন জীবনসঙ্গী পেয়ে ফাহেদা ধন্য। খালেদের এমন একনিষ্ঠ নির্ভেজাল ভালোবাসায় ফাহেদার অন্তর মুখরিত।
খালেদ বলছে,
-কাছে এসে তোমার আঙুল স্পর্শ করি?
ফাহেদার তাৎক্ষণিক উত্তর,
-না।
-তাহলে তোমার কপালে একটা চুমু এঁকে দিই।
-না।
-তাহলে তোমার নাকের সাথে আমার নাকের মিলন করি?
-না। ওগো না। চলে যাও তুমি!
খালেদ দুকদম এগিয়ে আসল। খালেদ চায় না তার ও ফাহেদার মাঝে এতো দূরত্ব হোক। খালেদ ফের বলল,
-এই দূরত্ব অসহ্য।
ফাহেদা কিছু বললো না। চুপ করে রইল। বাহিরে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। বৃষ্টির প্রতিটি ফোঁটা ফাহেদা আলিঙ্গন করতে চায়। খালেদের সাথে বৃষ্টিতে ভিজতে চায়। কিন্তু এখন অপারাগ সে।
অপরদিকে খালেদও যেন নিশ্চুপ হয়ে গেল। বৃষ্টির স্পন্দন শুনতে চায় সে। চুপে চুপে কানে কানে ফাহেদার সাথে।
হঠাৎ-ই সাদা এপ্রোন পড়া এক মহিলা এসে খালেদকে রাগান্বিত স্বরে বলল,
-আপনি এখোনো যাননি। কথাবার বলেছি আপনার স্ত্রীর করোনা হয়েছে। চলে যান!