আমাদের সবার সাথে এই বিষয়টা সবসময় ই হয়ে থাকে যে আমরা সপ্ন দেখছি যে আমরা আমাদের সপ্নের জীবন অতিবাহিত করতেসি, আপনি কোন কলেজ এ বক্তব্য দিচ্ছেন এবং সকল দর্শক এবং ছাত্র-ছাত্রিরা আপনার মূল্যবান কথা শুনছে, আপনি আপনার জীবনের সব কিছু অর্জন করে ফেলেছেন আপনার যা যা সপ্ন ছিল এবং তখনি জোরে জোরে অ্যালার্ম বাজতে শুরু হয় আর আপনি ঘুম থেকে উঠে পরেন ,আপনার ফোন চেক করেন তারপর অফিস বা আপনার নিত্যদিনের মত এলোমেলো কাজ করে দিন কাটিয়ে দিন। এটি ই হচ্ছে আমাদের ৯৫% মানুষের দৈনন্দিন সূচি । কিন্তু আপনি যদি জিবনে বড় কিছু অর্জন করতে চান তাহলে আপনি ওসব কাজ করতে পারবেন না যেগুলো ৯৫% মানুষ করে।
আপনাকে প্রতিদিন কিছু না কিছু নতুন শিখতে হবে আপনার চিন্তাশক্তি বিকাশের জন্য।আপনার পরিশ্রম বাকি ৯৫% এর চে ভিন্ন হবে। একজন সাধারণ মানুষ সপ্তাহে ৪০ ঘণ্টা কাজ করে কিন্তু আপনাকে সফলতা পেতে হলে ৮০-১০০ ঘণ্টা কাজ করতে হবে যেটি এলন মাস্ক এবং বাকি সফল বাক্তিরা করে থাকেন। তো এই প্রতিদিন ১২-১৩ ঘণ্টা কাজ করার জন্য সকালে ঘুম থেকে উঠে কিছু সকালের নিয়ম মেনে চললে সারাদিন কাজ করা আমাদের জন্য অনেক সহজ করে দেয়। আমাদের চিন্তাশক্তি এবং কর্ম দক্ষতা এমন হবে যা সাধারণ মানুষ চিন্তা করে না।যদি আপনি প্রতিদিন এই দৈনন্দিন অসাধারন টিপস গুলো করতে পারেন তাহলে আপনার সফলতা আসতে বাধ্য। কি এমন কাজ যা ৯৫% মানুষ করে না। চলুন জেনে নেয়া যাক দ্যা মিরাকেল মর্নিং বই থেকে যেটি লিখেছেন হেল এলরড । তিনি আমার একজন প্রিয় লেখক।
হেল এলরড এর মতে দিন কে ম্যাজিকাল ভাবে শুরু করার এবং পুরো দিন উত্পাদনশীল ভাবে কাটাতে হলে সকালে ঘুম থেকে উঠার পর কিছু নিয়ম মেনে চলতে হয় যা বাধ্যতামূলক। হেল এলরড এই নিয়ম টাকে নাম দিয়েছেন মর্নিং সেভারস ।
১। প্রার্থনা এবং মেডিটেসন করা (১৫ মিনিট)
২। যে কোন হাঁধর্মী কথা বলা মনে মনে (৫ মিনিট)
৩। কল্পনা করা যে আমি যে সপ্ন দেখসি সেটি বাস্তবায়ন হয়ে গিয়েছে (৫ মিনিট)
৪। ব্যায়াম করা (১০ মিনিট)
৫। বই পরা (১৫ মিনিট)
৬। লিখালিখি করা (১০ মিনিট)
যে এই ৬ টি নিয়ম প্রতিদিন ১ ঘণ্টা করে করবে, ঘুম থেকে উঠে তার দিনটি খুবই চমৎকার এবং উত্পাদনশীল হবে এবং এটির ফলে আপনার সৃতিশক্তি দিগুণ বৃদ্ধি পাবে।
বই এর লেখক হেল এলরড একদম হতাশ এর সাথে এই মর্নিং সেভারস শুরু করেছিলেন কারন, তার ব্যবসা অনেক নিচে নেমে গিয়েছিল, এবং তার টাকার পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছিলো। তিনি এই মর্নিং সেভারস শুরু করার ২ মাসের মাথায় সফলতা পেয়েছিলেন যেটা তার কল্পনার বাহিরে ছিল। এজন্য তিনি বই টির নাম দিয়েছেন দ্যা মিরাকেল মর্নিং। কারণ এটি কোন মিরাকেলের চে কম কিছু নয়। আপনি নিয়ম গুলো করলে বুজতে পারবেন ।
এবার আসুন জেনে নেয়া যাক এই ৬ টি মর্নিং সেভারস নিয়ম কিভাবে করবেন
বেশি কিছু না শুধু মাত্র প্রতিদিন ঘুম থেকে উঠার পর সৃষ্টিকর্তার প্রতি প্রার্থনা করা ,তারপর একটি কোলাহল পূর্ণ জায়গায় বসে একটু মেডিটেসন করা, এরপর যে কোন একটি আপনার প্রিয় হাঁ বোধক বাক্য বলা যেমন- “আজকের দিনটি আমার, আমি দিনটি আজকে জিতে নিব ই“- এরকম বাক্য বলা ।তাহলে দেখবেন অনেক ইতিবাচক মনভাব চলে এসেছে আপনার মধ্যে। এরপর আপনি আপনার দুই চোখ বন্ধ করে একটু কলপনা করুন যে আপনার যা যা গোল আছে তা পূর্ণ হয়ে গিয়েছে এবং আপনি ভাবুন যে তখন আপনার কেমন অনুভব হয়, শুধু তাই ই নয় আপনি ভাবুন যে আপনাকে কি কি করতে হবে আপনার সপ্ন কে বাস্তবে রুপ দিতে।
এরপর আপনি একটু শারীরিক কসরত করুন ,অনেকের ধারণা এই যে ব্যায়াম করলে পেট এর চর্বি কমবে । হাঁ সেতা ঠিক কিন্তু ব্যায়াম এর ফল ত আর ও ভিন্ন কিছু , সকালে উঠার পর ব্যায়াম করলে আপনার বিষণ্ণতা দূর হবে আপনার শরীর থেকে ব্রেইন এর কর্ম দক্ষতা অনেক গুন বৃদ্ধি করবে। এরপর আপনি কিছুক্ষণ একটি বই পরতে পারেন বা আপনার পরতে ইচ্ছে না হলে আপনি অডিও বই শূনতে পারেন যা আপনাকে নতুন কিছু শিখতে সাহায্য করবে ।এবং শেষ কাজ টি হল কিছু লিখালিখি করা যেমন- আজকে দিন এ আপনি কি কি কাজ সম্পূর্ণ করতে চান তার লিস্ট বানানো ইত্যাদি।
আপনাকে প্রথম দিন থেকে যে প্রতিদিন ১ ঘণ্টা করে এইগুল করতে হবে এমন না। আপনি এই নিয়ম গুলো ১ মিনিট করে মোট ৬ মিনিট করুন এবং প্রতিদিন আস্তে আস্তে সময় বারিয়ে দিন। এগুলো করার ফলে আপনার জিবনে যে কি রকমের পরিবর্তন আসবে তা আপনি নিজে ই বিশ্বাস করতে পারবেন না।
মনে রাখবেন, আপনার সাফল্যর স্তর টি আপনার বাক্তিগত উন্নয়ন এর উপর নির্ভর করে। আজকে যতটুকু উন্নতি করবেন কালকে চেষ্টা করবেন তার থেকে একটু হলে ও বেশি উন্নতি করতে।তাহলে দেখবেন এই ছোট ছোট উন্নতি গুলো দীর্ঘ মেয়াদী সফলতা এনে দিয়েছে ।
এই সবগুলো কথা আমি দ্যা মিরাকেল মর্নিং বই থেকে আপনাদের কাছে শেয়ার করেছি।আশা করি আপনাদের বিষয়গুলো উপকারে আসবে।
ধন্যবাদ সবাইকে। ভাল লাগলে কমেন্ট এ জানাতে পারেন আপনার মতামত।