ভালবাসা পৃথিবীর প্রত্যেকটি মানুষের মনে দাগ কেটে নেওয়ার মত একটি শব্দ। আচ্ছা ভালোবাসা মানেই হলো দুটি মানুষের কাছে আসা? ভালবাসা মানেই কি একটি সুন্দর সম্পর্কের সফল পরিণতি। কিছু কিছু সম্পর্কে তা হয়ে উঠে না। একসময় সুধু অনুভুতিগুলো টিকে থাকে সৃতি হয়ে, কিন্তু পাশের মানুষটিকে আর পাওয়া হয়ে উঠেনা।
আমাদের আজকের গল্পটি কোন রুপকথা নয়। আজকের গল্পটি যাদের ঘিরে তারা হল শুভ্র আর নীলিমা। নীলিমার জীবনে যেমন প্রেম সম্পর্কে কোন ধারনা ছিল না। ঠিক তেমনি শুভ্রও কোনদিন প্রেম নিয়ে মাথা ঘামায়নি। তাই তাদের দুজনের কাছে প্রেম শব্দটি নাটক, সিনেমা, বন্ধু বান্ধবীর প্রেমের গল্প শোনার মধে সীমাবদ্ধ ছিল।
বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম ফেইসবুকের মাধ্যমে পরিচয়ের শুত্রপাত এই দুজনের। দুজনের ডিপার্টমেন্ট এক হলেও ভার্সটি ভিন্ন ভিন্ন। তাই তাদের প্রথম কথাই হলো এই ডিপার্টমেন্ট এর সাবজেক্ট নিয়ে। একদিন ল্যাব রিপোর্ট করার প্রাক্কালে নীলিমা কৌতহল বসত টেক্সট করে শুভ্রকে। সেটাই ছিল তাদের প্রথম কথা বলা। যদিও প্রথম কথপোকথন ততটা দীর্ঘ ছিল না তবে প্রথম কথপোকথনে শুভ্রের দেয়া টেক্সটগুলো নীলিমাকে কেমন জানি একটা অচেনা মায়ায় আবদ্ধ করে ফেলল।
প্রথম কথপোকথন এর পর ঠিক দুই দিন শুভ্রের কোন খোজ পাচ্ছিল না নীলিমা। তারপর হঠাৎ নীলিমা শুভ্রকে অনলাইনে পেয়ে টেক্সট করল। শুভ্রের কাছে জানতে চাইল হঠাৎ সে কোথায় হারিয়ে গেল? বিনিময়ে শুভ্রের সহজ সরল উত্তর তার ফেইসবুক ভাল লাগেনা তবে মাঝে মাঝে হোয়াটসঅ্যাপে থাকে।
পরবর্তীতে নীলিমাও শুভ্রের সাথে হোয়াটসঅ্যাপ এ এড হয়ে নিল। ঠিক সেই দিনের পর থেকে হোয়াটসঅ্যাপ যেন মেয়েটির বসবাসের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠল। শুভ্র খুব কম কথা বলত আর নীলিমা ঠিক তার উল্টো প্রকৃতির। হয়ত এজন্য বেশ জমত তাদের। এভাবে কথা বলতে বলতে কেমন জানি এক অদ্ভুত মায়ায় জড়িয়ে পড়ল তারা। নীলিমা নিজেই বুঝতে পারছিল না তার সাথে কি হচ্ছে? কেন হচ্ছে? তাই নীলিমা হঠাৎ করেই শুভ্রের সাথে দুই দিন সমস্ত যোগাযোগ বন্ধ করে দিল।
ঠিক ওই সময়টায় নীলিমা উপলব্দি করল শুভ্র শুধু তার মায়া নয়, শুভ্রের শুভ্রতা তার মনে ভালবাসার সঞ্চার করেছে। নীলিমা উপলব্ধি করল সে শুভ্রের প্রেমে পড়ে গেছে। কিন্ত শুভ্র ছিল তার এই আবেগ থেকে পুড়াই অজানা।নীলিমা যদিও বলার চেষ্টা করত কিন্ত কথা না হবার ভয়ে তা বলার সাহস তার হয়ে ওঠেনি।এভাবে মাসের পর মাস যেতে লাগল।কিন্ত মজার ব্যাপার হল তারা তখনো কেউ কাউকে দেখেনি,মোবাইল ফোনেও তাদের কথা হয়নি।
শুভ্র সমসময় তার কাজের প্রতি সিরিয়াস থাকত।তাই তার পড়াশোনা বা কোন ধরনের কাজে সে প্রায় ব্যস্ত থাকত।কিন্ত যখনই সময় পেত যতটুকু সময় পেত নীলিমার সাথে কথা বলত।নীলিমার ও অপর দিকে শুভ্রের কাজের প্রতি ডেডিকেশান থেকে আরোও মুগ্ধতা বাড়তে লাগল।
একদিন হঠাৎ আসল সেই মাহেন্দ্রক্ষণ যখন শুভ্র নীলিমাকে তার অনূভুতির কথা জানায়।তখন নীলিমার আনন্দ আর কে দেখে। শুভ্রের শুভ্রতা নীলিমাকে যেন সর্গ সুখে ভাসাচ্ছিল।
শুভ্র নীলিমার প্রত্যেকটি কাজে নীলিমাকে খুব সাপোর্ট করত। শুভ্র যেমন খুব সাপোর্টটিভ তেমনি খুব কেয়ারিং।নীলিমার ছোট বড় সকল সমস্যায় শুভ্র পাশে থাকার চেষ্টা করত। শুভ্র নীলিমার প্রেমিক থেকেও ভালো একজন বন্ধু, নীলিমার একজন বেস্ট ফ্রেন্ড হয়ে উঠল। একজন সত্যিকারের লাইফ পার্টনারের মধ্যে যে সকল গুন থাকা দরকাল প্রায় সবটুকু গুণ নীলিমার মধ্যে বিদ্যমান।
আর এভাবেই শুরু হলো নিলয় আর শুভ্রের পথচলা। আর এভাবেই তারা সুখে দুঃখে একজন আরেকজনের নির্ভরতার প্রতীক হয়ে উঠল।
সারাদিন শুধু ভালবাসি বললে ভালবাসা হয়ে উঠেনা। কাউকে প্রকৃত ভালোবাসতে হলে সেই ভালবাসার মানুষটির পাশে থাকার চেষ্টা করুন।তার সুখে দুঃখে যদি আপনাকে পাশে পায় তাহলে সে মানুষটি যে কোনো ধরনের যুদ্ধ জয় করার সাহস রাখে।