সহজ কথায় পথ শিশু বলতে পথে পথে ঘুরে বেড়ানো জীবনযাপনকারী শিশুদের বোঝায়। বাস্তহারা।শহরের ছোট বড় পথে আমরা তাদেরকে খেলতে দেখি ছোটাছুটি করতে দেখি মারামারি করতে দেখি।
এ এরাই পথ শিশু। নানা রকম কাজ করে এরা। কেউ জোগালির কাজ করে বা ফাই ফরমাশ করে।এদের কারো বাবা আছে তো মা নেই বাবা নেই আবার কারো বাবা মা কেউ নেই। মানুষের কিল ঘুষি লাথি খেয়ে হোটেলের খাবার খেয়ে এরা বড় হয়। খুব কম বয়স থেকেই চোর গুন্ডা বদমাশ বাটপারি বোমাবাজদের দেখে দেখে বেড়ে।ওঠে ভালো মানুষ রুপি জানোয়ার দের সাথে এদের পরিচয়। আবার সত্তিকারের মানুষের বিপদে-আপদে সাহায্য সহযোগিতা করে।
এরা ব্যবসায়ীদের অপকর্ম রাজনীতিবিদদের পুলিশের খবর রাখে। হাল আমলের নায়ক নায়িকা গানের শিল্পীদের এরা খুব পছন্দ করে। তাদের চলন বলন নকল করে আনন্দ পায়। খারাপ মানুষেরা এদের খারাপ পথে নিয়ে যায়। অবৈধ মাদক দ্রব্যের ব্যবহার করে এদের দ্বারা।
যারা ভালো সে ভাল কাজ করাই ভালো পরামর্শ দেয়। আজকাল পথ শিশুদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালু করা হয়েছে যাতে তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে সুন্দর জীবন যাপন করতে পারে।
বিশেষ করে দেখা যায় যে, গ্রামের থেকে গ্রামের থেকে শহরে এদের সংখ্যা অনেক বেশি।আবার যারা গ্রামে থাকে তারাও এক সময় শহরমুখী হয়ে পড়ে। আমাদের দেশে এই পথ শিশু দের শিক্ষা দেবার মতো তেমন কোনো প্রতিষ্টান নেই। তবে বর্তমানে প্রায় অনেক স্কুল তৈরি করা হচ্ছে তাদের জন্য। এটি সরকারের একটি অনেক বড় পদক্ষেপ।
আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। আমরা তার তরে একটা সাজানো বাগান চাই। শিশুর যে জাতির হোক না শিশু শিশুই। এদের প্রতি জাতি গোত্র বর্ণ নির্বিশেষে সকলেই অন্তত যত্নশীল ও কর্তব্য পরায়ন হতে হবে। শিশুর প্রতি অযত্ন অবহেলা কোন বিবেকবান মানুষের কাম্য হতে পারে না। ফুলের অযত্ন ও শিশু অযত্ন একই কথা।
শিশু ফুলের মত পবিত্র নিষ্পাপ ও আদরের ধন। সুন্দর মানব সমাজ গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে শিশুকে গড়তে হবে। বিত্তবান দেশগুলোর কেউ বিলাস বাসনা কাটাচ্ছে আবার কেউ অস্ত্র প্রতিযোগিতায় মাতোয়ারা এর অর্ধাংশ সমাজ গড়ার জন্য যদি ব্যয় করত তাহলে শান্তির প্রত্যাশা আমাদের জন্য কঠিন হতো না। বাজেটের একটি নির্দিষ্ট অংশ শিশুদের উন্নয়নের জন্য ব্যয় করতে হবে। এদের বিকাশ সাধনের জন্য গড়ে তুলতে হবে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান।
সকল শিশুর সমান অধিকার এবং নিরাপদে বসবাস এটাই হওয়া উচিত বিশ্ব শিশু দিবসের অঙ্গীকার। পৃথিবীতে মোট জনসংখ্যার শতকরা ২৫ ভাগ শিশু।আগামী দিনের কর্ণধার। শিশুরা যদি অবহেলিত বঞ্চিত থাকে শিক্ষা-দীক্ষায় উপযুক্ত হয়েও গড়ে উঠতে না পারে তবে জাতি মুখ থুবরে পড়বে।
আর ভবিষ্যতে হয়ে উঠবে অন্ধকার ছন্ন। তাই শিশুদেরকে ঠিক আছে সুযোগ করে দেওয়া আমাদের অন্তত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজ। শিশুর বিকাশে সুযোগ করে দিয়ে সুনাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ তৈরি করে দেওয়া বিশ্ব শিশু দিবস এর প্রধান উদ্দেশ্য।
আইন করে সনদ দিয়ে শিশুর অধিকার কি আদায় করা যাবে? যদি না মনের দিক থেকে আমরা প্রস্তুত নিতে পারি। সুস্থ সুন্দর শিশু জাতি গঠনে সহায়ক এ টি মূলমন্ত্র হওয়া উচিত। আমরা একদিন শিশু ছিলাম। ছোটবেলায় ফুল নিয়ে খেলা করেছি এই সুন্দর ধরণী তে পরিবেশ এর কাছে থেকে শিক্ষা নিয়ে আজ বড় হয়েছে।
ফুল ছিঁড়ে কলম ধরেছি। এ শক্তি এর চেতনা লাভ করেছি বিকাশের মাধ্যমে। সে জায়গাগুলো শিশুদের দাঁড়ায় পূরণ হবে এবং হচ্ছে। তাই আমাদের অঙ্গীকার হওয়া উচিত খুব সুন্দর ধরণী গড়তে সুন্দর সন্তান চাই। বিশ্ব শিশু দিবসে এটাই হোক আমাদের শ্লোগান।