বাংলাদেশের ভৌগলিক অবস্থান ও প্রাকৃতিক দূর্যোগ ঘূর্ণিঝড়, বন্যা ও মহামারী করোনার কারণে বাজারের নিত্য পণ্যের দাম ক্রমেই বেড়ে চলেছে। পেঁজাজের দাম বৃদ্ধির সাথে সাথে দৈনন্দিন জীবনের যাবতীয় নিত্য পণ্যের দাম ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে যার কারণে ভোক্তারা চরম ভোগান্তির ভেতর দিন কাটাচ্ছে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে একবার পন্যের দাম বৃদ্ধি পেলে সচারচর পন্যের দাম নিয়ন্ত্রণে আসতে দীর্ঘ সময় লেগে যায়। কাঁচাবাজারের সবজির দাম এখন লাগামছাড়া পর্যায়ে চলে গিয়েছে। পেঁয়াজের দাম কিছুটা কমলেও অন্যান্য সবজির দাম বাজারে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। আলু, শিম, গাজর, টমেটো ও অন্যান্য সবজির দাম আশংকাজনকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে যার ফলে সাধারণ ভোক্তাদের ভোগান্তির কোন শেষ নেই।
সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক দূর্যোগের কবলে পড়ে হেক্টর হেক্টর কৃষি জমি পরিত্যক্ত হবার কারণে সরকার অন্যান্য দেশ হতে পেঁয়াজ, আলু, শিম, গাজর, টমেটো ও অন্যান্য সবজি আমদানি করে থাকে। কিন্তু এরপরও মাঝে মাঝে ভোক্তাদের চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হয় সরকার। পেঁয়াজের দাম সর্বোচ্চ ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রয় করা হয়ে থাকে। কিন্তু মাঝে মাঝে পেঁয়াজের দাম ২০০ টাকা কেজি দরেও বিক্রয় করা হয়ে থাকে। এছাড়াও চিনি, ভোজ্যতেল, ডাল, শুঁকনো মরিচ, হলুদ ও অন্যান্য জিনিষের দাম লাগামহীনভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বাজারে।
ভোজ্যতেলের দাম ৫ লিটারে প্রায় ২৫০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে যা ভোক্তাদের কাছে ক্রয় অনেকটাই কঠিনসাধ্য বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনসি বলেছেন যে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা হবে। শুধু পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে আনা গেলে পুরো বিষয়টির সমাধাণ কখনই হচ্ছেনা। মহামারী করনাভাইরাসের কারণে বাংলাদেশ অর্থনৈতিকভাবে দারিদ্রের চরম পর্যায়ে ধাবিত হচ্ছে। এছাড়াও আমদানীকৃত পন্যের দামও বেশ চওড়া।
আমদানীকৃত পণ্যের দাম ভোক্তাদের কাছে চওড়া হবার অন্যতম কারণ হচ্ছে আমদানী করার সময় ডলারের বিপরীতে টাকার মানকে তুলে ধরা হয়েছে। আমদানী ব্যবসার ক্ষেত্রেও বর্তমানে প্রতরণার করা শুরু হয়েছে। বিগত কয়েক বছর পূর্বে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা আমদানী ব্যবসা পরিচালনা করতো। কিন্তু বর্তমানে বৃহৎ ব্যবসায়িক গ্রুপ এই আমদানী ব্যবসার সাথে সংযুক্ত হয়ে পুরো আমদানী ব্যবসা তাদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে তাদের ইচ্ছেমতো পণ্যের দাম বাজারে বৃদ্ধি করছে ও কমাচ্ছে। এছাড়াও বাজারের গুদামে পর্যাপ্ত চাল মজুত না থাকায় চালের দামও কেজি দরে ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা দরে বৃদ্ধি পেয়েছে।
এজন্য কৃষকেরা মহামারী করোনাভাইরাস, ঘূর্ণিঝড় ও বন্যাকেই প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচিত করছে। বিশিষ্ট কৃষিবিদরা বলেছেন যে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক দূরবস্থার কারণে সামনের বছরও পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে সংকট অতিক্রম করে এবং অর্থনৈতিক আবকাঠামো মজবুত করে বাংলাদেশ সামনের দিকে এগোবে এইটি প্রত্যাশ্যা সাধারণ খেঁটে-খাওয়া মানুষের।
সূত্র: প্রথমআলো