বায়োমেট্রিক পদ্ধতি মানে কী শুধুই আঙুলের ছাপ?

আজকের আর্টিকেলটি বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি সম্পর্কে। বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতির কথা উঠলেই সবার আগে আমরা যেটি চিন্তা করি তা হলো মোবাইলের ফিঙ্গারপ্রিন্ট, আর সিম কার্ড রেজিস্ট্রেশনের জন্য মেশিনে দেয়া হাতের ছাপ।ফিঙ্গারপ্রিন্ট সম্পর্কে সবাই জানেন। মোটামুটি প্রায় সব ধরণের স্মার্টফোন গুলো তেই এই ফিচার রয়েছে।যাইহোক বায়োমেট্রিক পদ্ধতি মানে যে শুধুই ফিঙ্গার প্রিন্ট নয় তা কিছুক্ষণ পরই বুঝতে পারবেন।
বায়োমেট্রিক্স মূলত একটি গ্রিক শব্দ।গ্রিক শব্দে বায়ো মানে জীবন আর মেট্রিক মানে মাপা।অর্থাৎ বায়োমেট্রিক্স হলো বায়োলজিকাল ডেটা মাপার একটি পদ্ধতি।বায়োমেট্রিকস এ শুধুই আঙুলের ছাপ ব্যবহার করা হয় না,এতে ডিএনএ,চোখের রেটিনা এবং আইরিস,হাতের মাপ,মুখের আকৃতি ইত্যাদির ডেটা ব্যবহার করা হয়।বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতির দুটি আলাদা বিভাগ রয়েছে এগুলো হলো-
ক)দেহের গঠন ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স ও
খ)আচরণগত বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স।

ক)দেহের গঠন ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্সঃএই পদ্ধতিতে মুখ,ফিঙ্গারপ্রিন্ট, হ্যান্ডজিওমেটরি,আইরিস,রেটিনা,শিরা ইত্যাদি দিয়ে।
মুখঃআমাদের সবার মুখের ই আলাদা একটা জ্যামিতিক গঠন আছে, আর এই জ্যামিতিক গঠন ব্যবহার করেই এখনকার স্মার্টফোনে ফেসলক ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে।

ফিঙ্গারপ্রিন্ট ঃএটি সম্পর্কে হয়ত সকলেই জানি।আমাদের সকলেরই আঙলের ছাপ ভিন্ন।অ্যালগরিদম এ পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হয়।একটি মজার তথ্য হচ্ছে আঙুলের মতো জিহ্বার ছাপও ব্যক্তিক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন হয়।

হ্যান্ড জিওমেতরিঃমুখের মতো আমাদের হাতেরও নির্দিষ্ট জ্যামিটিক প্যার্টান রয়েছে।আর এই জ্যামিতিক ভিন্নতার সুযোগ নিয়ে হ্যান্ড জিওমেট্রিক সিকিউরিটি সিস্টেম ব্যবহার করা হয়।

আইরিসঃআমাদের চোখের মণির চারপাশের বেষ্টিত রঙিন রলয় রয়েছে।ব্যক্তিক্ষেত্রে এই বলয়টিও ভিন্নতর হয়।তাই আইরিস আইডেন্টিফিকেশন সিকিউরিটি সিস্টেম অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে ব্যবহার করা হচ্ছে।

রেটিনাঃচোখের পিছরের অক্ষিপটের একটি নির্দিষ্ট মাপ আছে যেটি সবার ক্ষেত্রেই ভিন্ন হয়,তাই রেটিনা আইডেন্টিফিকেশন ও একটি ভালো নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা।তাই সিকিউরিটি সিস্টেমে এটি ব্যবহার করা হচ্ছে।

শিরাঃখুবই আশ্চর্যজনক একটা সিকিউরিটি ব্যবস্থা। এমনকি অনেকের হাতের শিরার প্যার্টান ও ভিন্ন হয়।তাই এই পদ্ধতি সিকিউরিটি ব্যবস্থায় যুক্ত করা হচ্ছে।একটু অন্যরকম না ব্যাপারটা?

দেহের গঠন ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স ছাড়াও আচরণগত বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি ব্যাপকভাবে সাড়া পাচ্ছে।
এগুলো হলোঃকন্ঠস্বর,সিগনেচার,টাইপিং কি স্ট্রোক।
কন্ঠস্বরঃমানুষের কন্ঠস্বর ভিন্ন হওয়াতে, এই পদ্ধতি সিস্টেম সিকিউরিটি ব্যবস্থাপনায় স্থান পেয়েছে।তবে কণ্ঠস্বর নকল করে সিকিউরিটিকে ব্রেক করা কিছুটা সহজ হয়ে পড়ে।

সিগনেচারঃযেহেতু একেকজনের সিগনেচার স্টাইল একেকরম। তাই এই পদ্ধতিও ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে এইক্ষেত্রে সঠিকভাবে শনাক্তকরণ প্রক্রিয়াটি একটু কঠিন।

টাইপিং কি স্ট্রোকঃএটা অনেকটা সাধারণ পাসওয়ার্ড ব্যবহারের সাথে যুক্ত।

এগুলোই হচ্ছে আমাদের বায়োমেট্রিকস।এখন কী মনে হয় এটি শুধুই ফিঙারপ্রিন্ট?যাহোক আপনার কাছে কোন বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিটি ভালো লেগেছে? আমার কাছে কিন্তু দেহের গঠন ও শারীরবৃত্তীয় বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতিটি আচরণগত বৈশিষ্ট্যের বায়োমেট্রিক্স পদ্ধতি অপেক্ষা সুবিধাজনক আর ভালো মনে হয়েছে।
আজ একটুকুই ভালো থাকবেন,সুস্থ থাকবেন,ধন্যবাদ সবাইকে।

Related Posts

9 Comments

মন্তব্য করুন