আইনস্টাইন কে বা তিনি কত বড় মাপের বিজ্ঞানী তা আমার নতুন করে বলার মতো কিছু নেই। জীবন ও জীবনের মোটিভ বদলে দেওয়ার মতো একটি গল্প আপনাদের মাঝে শেয়ার করতে যাচ্ছি।
আইনস্টাইন তাঁর জীবদ্দশায় পেশারত বা গবেষণার কাজে বিভিন্ন স্থানে ঘোরে বেড়াতেন। আচার অনুষ্ঠান ও বিভিন্ন ধরনের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে যোগদান করতেন ও ভাষন দিতেন। এই সকল ক্ষেত্রেই তার সঙ্গী হতো তার গাড়ির ড্রাইভার। তাঁর গাড়ির ড্রাইভার একদিন তাকে হাস্যেচ্ছলে বললো৷ স্যার, আপনি প্রতিটি সভায় যে ভাষণ দেন সেই ভাষনগুলো আপনার কাছ থেকে শুনে শুনে আমার একদম মুখস্থ হয়ে গেছে। ড্রাইভারের মুখে একথা শুনে আইনস্টাইনতো পুরোপুরি অবাক হয়ে যান! এ কথা শুনার পর আইনস্টাইন তখন বললেন, বেশ তাহলে, আমারতো প্রায়ই বিভিন্ন সভায় ভাষন দিতে হয়। তো এর পরের বার মিটিংয়ে আমরা যেখানে যাবো সেখানে তারা কেউ আমাকে চেনেন না। কোনোদিন আমাকে দেখেওনি। এই সুযোগে পরবর্তী সভায় তুমি আমার হয়ে ভাষণ দিয়ে দিও। আর আমি তুমি যে কাজ করতে সেই কাজ করবো। অর্থাৎ আমি তোমার ড্রাইভার হয়ে বসে থাকবো।
এরপরে যেই কথা সেই কাজ। পরবর্তী সভায় ড্রাইভার হুবহু আইনস্টাইনের মতো ভাষণ দিলেন। গড় গড় করে বলে গেলেন। এতটুকুও মনে হলোনা যে অন্য কেউ ভাষন দিচ্ছে। আইনস্টাইন আবারও রীতিমতো অবাক হলেন। উপস্থিত বিজ্ঞজনের তুমুল করতালি দিয়ে তাকে অভিবাদন জানালেন। সভা ও ভাষন শেষ হওয়ার পর আয়োজকরা ড্রাইভারকে আইনস্টাইন ভেবে গাড়িতে পৌঁছে দিতে এগিয়ে এলেন।
সেই সময় সেখানে উপস্থিত একজন অধ্যাপক ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করলেন “স্যার, আপনি আপেক্ষিক এর যে সঙ্গাটা বললেন সেই সংজ্ঞাটা আর একবার একটু সংক্ষেপে বুঝিয়ে দেবেন, প্লীজ?” আসল আইনস্টাইন দেখলেন এ তো মহা বিপদ! এবার তো ড্রাইভার নিশ্চিত ধরা পড়ে যাবে! তৎক্ষনাৎ বুদ্ধি খাটিয়ে ড্রাইভার যা বললো তা আরও বেশি অবাক হওয়ার মতো।তিনি ড্রাইভারে উত্তর শুনে রীতিমতো আবারও তাজ্জব হয়ে গেলেন। ড্রাইভারের উত্তরটি ছিল…
“আজব! এই সহজ জিনিসটা আপনার মাথায় ঢোকেনি? আপনি এটি আমার ড্রাইভারকে জিজ্ঞেস করুন সেই আপনাকে বুঝিয়ে দিতে পারবে।”
ড্রাইভারের এই উত্তর থেকে আমরা এটাই বুঝতে পারলাম যে, আপনি যদি একজন জ্ঞানী ব্যক্তির সাথে চলাফেরা করেন তাহলে আপনিও তার মতো জ্ঞানী হবেন। অর্থ্যাৎ, আপনি যেমন মানুষের সাথে চলাফেরা করবেন আপনিও তেমনই হবেন।
আর এই জন্যই কথায় আছে-
সৎ সঙ্গে স্বর্গ বাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ।