হ্যালো বন্ধুরা কেমন কেমন আছেন সবাই? আশা করি ভালই আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভাল আছি।
যে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব সেটা হচ্ছে বিটকয়েন। যারা স্বপ্ন দেখেন লাখোপতি বা কোটিপতি হবার, আজকের ব্লগ টি শুধুমাত্র তাদের জন্যই। আর যারা মনে করেন অনলাইনে বিনিয়োগ করার মাধ্যমে দেশের সম্পদ আপনি নষ্ট করবেন। শুধুমাত্র আপনার পকেটের টাকায় নষ্ট হবে, বাহির থেকে কিছু দেশে নিয়ে আসতে পারবেন না। তারমানে আপনার সেই জ্ঞান বা দক্ষতা নেই, তারা দয়া করে এই ব্লগ টি এড়িয়ে যাবেন।
১/ বিটকয়েন কি বা বিটকয়েন বলতে আমরা কি বুঝি?
বিটকয়েন (BTC) হল একটি ডিজিটাল মুদ্রা বা ভার্চুয়াল মুদ্রা। এটা কোনও কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ বা ব্যাংকগুলির সাথে পরিচালনা করতে পিয়ার-টু-পিয়ার প্রযুক্তি ব্যবহার করে; নেটওয়ার্কের মাধ্যমে লেনদেন পরিচালনা এবং বিটকয়েন জারি করে সম্মিলিতভাবে পরিচালিত হয়। বিটকয়েন ওপেন সোর্স; এর নকশাটি সর্বজনীন, বিটকয়েনের মালিকানা বা নিয়ন্ত্রণ কেউ নেই এবং প্রত্যেকে অংশ নিতে পারে। আজকে প্রতি বিটকয়েনের মূল্য ৭,৮২,০৯৪.৫২ টাকা।
২/ বিটকয়েন এর ইতিহাস?
আসুন এবার বিজ্ঞানের ইতিহাস সম্বন্ধে একটু জানা যাক। ১৮ই আগস্ট ২০০৮ সালে bitcoin.org ডোমেইন নাম নিবন্ধন করা হয়। একই বছরের নভেম্বরে সাতোশি নাকামোতো রচনাকারে বিটকয়েন কি এবং কিভাবে কাজ করে তা প্রকাশ করেন metzdowd.com ওয়েবসাইটের মেইলিং লিস্টে। এরপরে ২০০৯ সালে সাতোশি বিটকয়েনের সোর্সকোড উন্মুক্ত করে সোর্সফর্য নামে একটি প্লাটফর্মে। এই মাসে বিটকয়েন নেটওয়ার্ক সম্প্রচার করা হয় এবং সাতোশি ব্লকচেইনের সর্বপ্রথম ব্লক মাইন করে যা “জেনেসিস ব্লক” নামে স্বীকৃতি পায়। সর্বপ্রথম বিটকয়েন লেনদেন ঘটেছিলো সাতোশি নাকামোতো এবং হাল ফিনি নামক এক ব্যক্তির সাথে। উল্লেখ্য লেনদেনে সাতোশি ১০ বিটকয়েন দিয়ে থাকেন হান ফিনিকে। প্রথম বছরের মধ্যে সাতোশি প্রায় ১০ লক্ষ বিটকয়েন মাইন করেছিলেন। অতঃপর ২০১০ সালে সাতোশি নাকামোতো বিটকয়েন নেটওয়ার্ক কিই এবং বিটকয়েন কোর (সফটওয়্যার ওয়ালেট যেখানে বিটকয়েন সংরক্ষণ করা হয়) এর কোড রিপোজিটরির দখল গ্যাভিন অ্যান্ড্রেসেন নামে এক সফটওয়্যার ডেভেলপার এর কাছে হস্তান্তর করেন। এরপরেই গ্যাভিন অ্যান্ড্রেসেন বিটকয়েন ফাউন্ডেশোনের প্রধান ডেভেলপার হিসেবে পদপ্রাপ্ত হন। উল্লেখ্য বছরের পর থেকে সাতোশি নাকামোতোর আর কোন খোঁজ পাওয়া যায়নি।
৩/ বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে?
আসুন এবার জানা যাক বিটকয়েন কিভাবে কাজ করে। বিটকয়েনের লেনদেন হয় পিয়ার টু পিয়ার বা গ্রাহক থেকে গ্রাহকের কম্পিউটারে। এটি কোন কেন্দ্রীয় নিকাশঘরের মধ্য দিয়ে যায় না কিংবা এটি নিয়ন্ত্রণের জন্য কোন নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠান নেই। বিটকয়েনের সমস্ত প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয় অনলাইনে একটি উন্মুক্ত সোর্স সফটওয়্যারের মাধ্যমে। বিটকয়েন মাইনারের মাধ্যমে যে কেউ বিটকয়েন উৎপন্ন করতে পারে। বিটকয়েন উৎপন্ন হওয়ার প্রক্রিয়াটা সবসময় অনুমানযোগ্য এবং সীমিত। বিটকয়েন উৎপন্ন হওয়ার সাথে সাথে এটি গ্রাহকের ডিজিটাল ওয়ালেটে সংরক্ষিত থাকে। এই সংরক্ষিত বিটকয়েন যদি গ্রাহক কর্তৃক অন্য কারও একাউন্টে পাঠানো হয় তাহলে এই লেনদেনের জন্য একটি স্বতন্ত্র ইলেক্ট্রনিক সিগনেচার তৈরী হয়ে যায় যা অন্যান্য মাইনার কর্তৃক নিরীক্ষিত হয় এবং নেটওয়ার্কের মধ্যে গোপন অথচ সুরক্ষিতভাবে সংরক্ষিত হয়। একই সাথে গ্রাহকদের বর্তমান লেজার কেন্দ্রীয় তথ্যভাণ্ডারে হালনাগাদ হয়। বিটকয়েন দিয়ে কোন পণ্য কেনা হলে তা বিক্রেতার একাউন্টে পাঠানো হয় এবং বিক্রেতা পরবর্তীতে সেই বিটকয়েন দিয়ে পুনরায় পণ্য কিনতে পারে, অপরদিকে সমান পরিমাণ বিটকয়েন ক্রেতার লেজার থেকে কমিয়ে দেওয়া হয়। প্রত্যেক চার বছর পর পর বিটকয়েনের মোট সংখ্যা পুনঃনির্ধারন করা হয় যাতে করে বাস্তব মুদ্রার সাথে সামঞ্জস্য রাখা যায়। এছাড়াও শুধু বিটকয়েন কেনা বেচার মাধ্যমে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। ধরুন আপনি যখন বিটকয়েন কিনেছেন তখন এটি বাজার মূল্য কম ছিল, যখনই এর রেট বেড়ে গেল আপনি কি বিক্রি করে দিলেন। এভাবে বিটকয়েন কেনা বেচা করে আপনি লাভ করতে পারেন। তবে এর বিপরীত টা হয়ে থাকে। অর্থাৎ রেট পড়ে গেলে আপনার তখন ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে।
৪/ বিটকয়েনের বৈধতা আছে কি?
বাংলাদেশে বিটকয়েন অবৈধ। বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ২০১৪ সালে বিটকয়েন লেনদেনকে অবৈধ বলে ঘোষণা দেয়া হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের মতে, “এসব মুদ্রায় লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংক বা অন্য কোন নিয়ন্ত্রক সংস্থা কর্তৃক অনুমোদিত নয় বিধায় এসব ভার্চুয়াল মুদ্রার ব্যাবহার বৈদেশিক মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ আইন এবং মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন এর দ্বারা সমর্থিত হয় না”।
৫/ বাংলাদেশে বিটকয়েন কেন অবৈধ?
কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক নিজের টাকায় হ্যাকারদের হাত থেকে রক্ষা করতে পারে না। আর পুরোপুরি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে এসব ভার্চুয়াল মুদ্রা কেনাকাটার সুযোগ করে দিলে দেশে যত ব্ল্যাকমানি আছে সব বিদেশে পাচার হয়ে যাবে। এ কারণে বিটকয়েন বাংলাদেশে অবৈধ।
৬/ তাহলে কি বিটকয়েন ইনভেস্ট করবো না?
আপনি যদি কালো টাকার মালিক হয়ে থাকেন তাহলে করবেন না। এটা আপনার জন্য অবৈধ। আর যদি আপনার কষ্টার্জিত টাকা ব্যাংকে পড়ে আছে, কোথায় ইনভেস্ট করবেন বুঝতে পারছেন না, তারা বিটকয়েনের কথা চিন্তা করতে পারেন।
৭/ বিটকয়েন এ কিভাবে বিনিয়োগ করব?
বিটকয়েনের বিনিয়োগ করতে হলে আপনাকে আন্তর্জাতিক বিটকয়েন কেনাবেচা করে এরকম বিশ্বস্ত একাউন্ট খুলতে হবে। বর্তমান বিশ্বে বিটকয়েন কেনা বেচার জন্য অনেক ব্রোকার হাউজ রয়েছে। তারমধ্যে সব চাইতে পরিচিত এবং আমরা বাংলাদেশিরা সচরাচর যে ব্রোকার হাউসে বিনিয়োগ করে থাকে তার লিংকটি নিচে দেয়া হল-
https://www.coinbase.com/join/kamruz_6k
৮/ বিটকয়েন অটো মাইনিং এর পাঁচটি জনপ্রিয় সাইট-
বিটকয়েন কিছু কিছু ওয়েবসাইট অটো মাইনিং করে দেয়। আপনাকে যেটা করতে হবে ওই বুঝছেন গুলোতে একাউন্ট খুলতে হবে। এখনো খোলা ফ্রী। তবে এই গুলো হতে টাকা পেতে হলে হয় আপনাদের কিছু ইনভেস্ট করতে হবে অথবা রেফারেল আনতে হবে। সাইটের লিংক গুলো নিচে দেয়া হল-
Top 5 auto Bitcoin mining sites. You can earn Bitcoin free. Also increase the rate of earning by sharing with the referral.
1. https://coinbitcoinmining.com/SignUp.php?boss=boss38941
2. https://solidminer.io/ref/216786
3. https://freemining.co/188590
4. https://hashrapid.io/953788
5. https://mining-up.com/ref/zaman_miningup
৯/ গেমস খেলে বিটকয়েন আয় করা যায়?
হ্যাঁ এটা সত্যি গেমস খেলে আপনি বিটকয়েন আয় করতে পারবেন। তোদের এর পরিমাণ খুবই সামান্য। আমি নিজেও দেখেছি। খুবই ট্রাস্টেড একটি গেম সাইড। গেমসের 500 গোল্ড কয়েন হলেই আপনি টাকা গ্রহণ করতে পারবেন। প্রতি 500 গোল্ড কয়েন এর কয়েনের মূল্য বাংলাদেশি টাকায় 0.4 টাকা।
বিটকয়েন রিসিভের প্রুফ নিচে দেয়া হল-
গেমস এর লিংক- https://play.google.com/store/apps/details?id=app.getloaded.bitcoinblast
গেমস এর রেফারেল ইউটিউব ভিডিও নিচে দেয়া হল-
https://youtu.be/Yr7Mq7QgG6c
১০/ বিটকয়েন মাইনিং এর রেফারেল ইউটিউব ভিডিও-
https://youtu.be/aB7HzGashUg
এছাড়াও আপনারা ইউটিউবে দেশি-বিদেশি অসংখ্য বিটকয়েন সম্বন্ধে ভিডিও পাবেন।
আজকের মতো এখানেই শেষ করছি। ধন্যবাদ সবাইকে।
মোঃ কামরুজ্জামান