আসসালামু আলাইকুম সবাইকে
.
আজ আমি আপনাদের সাথে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে কথা বলবো সব বয়সের সকল মানুষের জন্য সমান গুরুত্ব বহন করে। আজকে আমরা কথা বলবো বুকে ব্যথা নিয়ে। আসলে বুকে ব্যথা কেন হয়? কখন হয়? এবং এর থেকে রক্ষা পাওয়ার উপায়, প্রতিকার ও প্রতিরোধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানাবো।
নানা কারনে বুকে ব্যাথা হলেও সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে হৃদপিণ্ড জনিত বুক ব্যথা। আমাদের হার্ট যখন অক্সিজেনসমৃদ্ধ পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ পাইনা, তখন বুক নিষ্পেষিত হচ্ছে, দম বন্ধ হয়ে আসছে এমন মারাত্মক অস্বস্তি অনুভব হলে সে ধরনের বুকব্যথা কে এনজাইনা পেকটোরিস বলে। সাধারণত হার্ট অ্যাটাকের পূর্ব মনে করা হয়।
অ্যানজাইনা লক্ষণ:
১) বুকের পেছনের অংশ থেকে মৃদু ব্যাথা শুরু হওয়া
.
২) ব্যায়াম বা অন্য শারীরিক কাজে, মানসিক চাপ ও অতিরিক্ত ওজন, শীতকাল বা আতঙ্কে বুকে ব্যথা হতে পারে। ব্যাথা ৫ থেকে ৩০ মিনিট স্থায়ী হয়।
.
৩) অ্যানজাইনা গলা থেকে চোয়াল, বাহু, পিঠে, এমন কি দাত পর্যন্ত ছড়াতে পারে।
.
৪) অনেক সময় ব্যথা কোত্থেকে আসছে তাও বোঝা যায়না
.
৫) বুকে জ্বালা পোড়া, চাপ অনুভব সৃষ্টি হয়, অস্বস্তির প্রকাশ ঘটায়।
.
৬) বুকে ব্যথা ছাড়াও হজমের গন্ডগোল ও বমি বমি ভাব হতে পারে।
.
৭) ঘনঘন শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া কিংবা রং ফ্যাকাশে দেখা দিতে পারে।
.
অনেক রোগী ব্যাথা অনুভব করতে পারে না। এ সময় কারো কারো বাহু ভারী হয়ে আসে, বুকে ব্যথার সাথে সাথে ঘাম হয়, মাথা ঝিমঝিম করে, মুখ ফ্যাকাশে হয়ে যায় রোগী চিন্তিত থাকে, মাথা ঝুলে যায়, সারাদিন দুর্বল ও পরিশ্রান্ত থাকা, সহজ কাজ কঠিন মনে হয়।
.
করণীয়:
.
সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হওয়া এবং তা ধরে রাখায় হচ্ছে অ্যানজাইনা প্রতিরোধের প্রধান উপায়। এজন্য বেশ কিছু বিষয়ে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা উচিত। কিছু বিষয় আছে যার নিয়ন্ত্রণ আমাদের হাতে নেই যেমন, বয়স, লিঙ্গভেদ, হূদরোগের পারিবারিক ইতিহাস।
.
তবে যেসব বিষয়ে আমাদের নাগালের মধ্যে রয়েছে তা হলো হাঁটাচলা বা ব্যায়াম, স্থূলতা প্রতিরোধ করা, সুষম খাবার খাওয়া, রক্তচাপ ও কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখা, ডায়াবেটিস প্রতিরোধ বা নিয়ন্ত্রণে রাখা, ধূমপান ত্যাগ করা, মদ পানের ধারেকাছে না যাওয়া, বছরে একবার সম্ভব হলে দুইবার সম্পূর্ণ শরীরের চেকআপ করিয়ে নেওয়া।
বাসে যেতে বা কোথাও যদি আমরা কাউকে বুকে হাত দিয়ে দেখি কেমন যেন করছেন, তখন কিভাবে বুঝবে যে তার হূদরোগ হয়েছে? যদি যদি তার লক্ষণগুলো উপরোক্ত লক্ষণগুলো সাথে হুবহু মিল পাওয়া যায় অথবা কিছুটা হলেও মিল পাওয়া যায় তাহলে তাকে অবশ্যই নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে।
.
আজ এতটুকুই। সবাই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন। নিজের স্বাস্থ্যের উপর যত্ন নেবেন। সুষম খাবার ও হৃৎবান্ধব খাবার খাবেন। পরবর্তীতে হৃদরোগ ও অন্যান্য সকল প্রকার জটিল রোগ সম্পর্কে ও বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের সাথে থাকুন।