আমাদের সামান্য জব সর্দি কাশি হলে বিরক্ত লাগে। যদি সেটা কয়েকদিন ধরে থেকে যায় আর বলার অপেক্ষা রাখে না। বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা এবং নানান অসুবিধার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় আমাদের। চিকিৎসা করানোর পরে ডাক্তার কিছু বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেন। এদিকে বিছানায় শুয়ে থাকতে থাকতে মেজাজ একদম খারাপ হয়ে যায়। যেকোনো অসুখের এই ধরনের বিরক্তিকর সময় তা কাটিয়ে ওঠা এক ধরনের চ্যালেঞ্জও বটে।
তো বন্ধুরা চলুন জেনে নেই, এসব সামান্য মন খারাপের মাঝে কিভাবে মনকে একটু রাখা যায় সেটা নিয়ে আলোচনা করি।
মিউজিক থেরাপি
নাচ হোক,গান হোক বা যেকোনো ইনস্ট্রুমেন্টাল মিউজিক হোক… সুরের প্রভাব কিন্তু অনেকটাই দীর্ঘস্থায়ী থেকে যায়। আর অনেক উপকারিতাও রয়েছে। গবেষণায় দেখা গেছে, কোন পছন্দের মিউজিক হার্ট রেট ইম্প্রুভ করে, টেনশন কমে যায়, মস্তিষ্কের স্টিমুলেশন ভালো হয়। এর ফলে শরীরের ক্লান্তি ও চলে যায়। মানসিকভাবে একজন রোগী অনেক তাই সজীব অনুভব করেন। ডাক্তারের চিকিৎসার পাশাপাশি এই মিউজিক থেরাপি আপনাদের জীবনে অনেক উপকার আসবে। এই ধরনের মিউজিক থেরাপি নাকি রোগীর সুস্থতার জন্য অনেক বেশি সহায়ক।
বই পড়া,ছবি আঁকা
আমাদের দীর্ঘ দিন অসুস্থ করার ফলে আমাদের অনেক সময় স্কুল-কলেজ,অফিস-আদালত যাওয়া বন্ধ হয়। আর সারাদিন বসে বসে বিষন্ন মনে বাড়িতে সময় কাটাতে হয়। তাই তখন আপনি চাইলেই কোন প্রিয়জনের ছবি কাগজ-কলম নিয়ে ছবি আঁকা বসতে পারেন। কিংবা প্রিয় লেখক এর কোন বই পড়ে ফেলুন। সেটা কোন শিক্ষামূলক কিংবা বিনোদনমূলক বই হোক,আপনার যা পড়তে মন চায় তাই পড়ে ফেলুন।
গল্প-গুজব
গল্প-গুজব মানুষের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। মানুষের স্বাভাবিক প্রবৃদ্ধি ভাবের আদান-প্রদান। ফলে মানুষ কোন কথা না বলে বা না শুনে মানুষ থাকতে পারেনা। তাই প্রিয় মানুষ জনের সঙ্গে প্রণয়ে হোক বা সামনাসামনি বসে হোক তাদের সাথে গল্প করো। পশুর গল্প করুন সে গল্প হোক কাজের গল্প কিংবা মজার কোন গল্প। আপনার বিষণ্নতা কিংবা অসুস্থতার কথা এড়িয়ে যান। দেখবেন মনটা অনেকটাই ভালো লাগবে।
ঘরে বন্দি নয়
আমাদের পরিবার সামান্য অসুস্থ হলে অনেকেই ঘর থেকে বের হতে দেন না। সামান্য অসুস্থ হলে বাড়িতে বসেই দিনের পর দিন কাটাতে হয়। এই বাড়িতে রুমের ভিতরের দেয়ালে দীর্ঘদিন থাকতে-থাকতে শরীর এবং মন প্রচুর পরিমাণে ক্লান্ত হয়ে পড়ে। তাই আপনি বড় ধরনের অসুস্থ না হলে আপনি দিনে একবার হলেও কিছুক্ষণের জন্য বাইরে ঘুরে আসুন। রাস্তায় বেরোনোর উপায় না থাকলে আপনার বাড়ির আশেপাশে ঘুরতে পারেন।প্রতিবেশীদের সাথে বাড়িতে গিয়ে গল্প করতে পারেন দেখবেন মনটা অনেকটাই ভালো হয়ে গিয়েছে। আপনি যেই ঘরে থাকেন অন্তত সেই ঘরের দরজাটা সকালবেলায় খুলে রাখুন। সকালের মৃদু বাতাস আপনার মনকে প্রাণবন্ত করে তুলবে। বাইরের আলো-বাতাস ঘরের ভিতরে ঢুকতে দিন।
পর্যাপ্ত বিশ্রাম
বিশ্রাম ই পারে একমাত্র আপনার অসুখকে পুরোপুরি ভালো করে দিতে। বড় ধরনের কোন অসুস্থ হলে সেই সময় টিভি দেখা বা বই পড়া দেখার মত অবস্থা থাকে না। সে সময় অবশ্যই বিশ্রাম নেয়া ভালো। যদি শরীরে আপনার বেশি ক্লান্ত লাগে তাহলে ঘুমিয়ে পড়ো পর্যাপ্ত ঘুমান। ঘুমালে শরীর বিশ্রাম পায় এবং তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেন।
কবে অসুখ সেরে যাবে ,কবে ছাড়বে, আর কতদিন শুয়ে থাকতে হবে এসব আজেবাজে চিন্তা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। এসব চিন্তা যতই করবেন ততই আপনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়বেন। তাই যথাসম্ভব অসুখের কথা বলে অন্য কোন বিষয়ে মনোযোগ দিন।
সঙ্গীকে কাছে রাখুন
অসুখের জন্য সঙ্গী কাছে থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।যে কোন অসুখে আপনার পাশে প্রিয় মানুষ থাকলে সে ক্ষেত্রে অনেকটাই শক্তি পাওয়া যায়। তাই তাকেও আপনি নিজের বন্ধুর মতন সঙ্গ দেয়ার চেষ্টা করুন। অসুখ ভালো হোক বা খারাপ হোক,তা কাটিয়ে ওঠার জন্য আপনার যেমন ডাক্তারের চিকিৎসা প্রয়োজন ঠিক তেমনি আপনার প্রিয়জনের সেবা যত্নও প্রয়োজন।