আসসালামুয়ালাইকুম সবাইকে। আমার নতুন একটি পোস্টে আপনাকে স্বাগতম। আজকের টপিকটি হলো মিশরের বিখ্যাত পিরামিডের ইতিহাস নিয়ে । এই পিরামিড নিয়ে সকলের মধ্যে অনেক ভুল ধারণা রয়েছে । এ ধারনা গুলো আপনাদের কাছে আজ তুলে ধরব । তো চলুন শুরু করা যাক।
মৃত্যু নিয়ে একটু বেশিই মাতামাতি করত প্রাচীন মিশরীয়রা , তাদের নিয়ে তৈরি মুভি গুলো দেখলে তা-ই মনে হয় । কিন্তু বাস্তবতা ছিল পুরোপুরি এর বিপরীত। আজ থেকে প্রায় ৪৫০০ বছর আগের কথা , পৃথিবী থেকে তখনও বিলুপ্ত হয়ে যায় নি লোমশ ম্যামথ ।এমনই এক যুগের শাসক ফারাও জোসের চিন্তা করলেন ,তারা এমন এক অদ্বিতীয় স্থাপনা নির্মাণ করবেন ,যা সমস্ত পৃথিবীর বুকে মিশরীয় ঐতিহ্যের চিহ্ন হয়ে থাকবে ।সেই সঙ্গে মৃত্যুর পর ফারাওদের মরদেহকে সংরক্ষণ করা হবে সেখানে ।
দেহ সংরক্ষণের কারন ছিল যেন তারা চিরকাল স্বাভাবিক আকারে থাকে । রাজাদের দেহ যেন বিন্দুমাত্র বিকৃত না হয় । দীর্ঘ ২০ বছরের অক্লান্ত প্রচেষ্টায় মাথা উঁচু করে দাঁড়ায় ৪৮১ ফুট উঁচু খুফুর পিরামিড । প্রচলিত ধারণা অনুযায়ী জানা যায় , পিরামিড তৈরিতে প্রচুর দাসহত্যা করা হয় ।এই ধারনাটি সম্পুর্ন সঠিক নয় । পিরামিড নির্মাণ কষ্টসাধ্য হওয়ায় কেউ কাজ করতে চাইতো না ।ফলে প্রাথমিকভাবে বেশ কয়েকজন দাসকে হত্যা করে পিরামিডেই সমাহিত করা হয় । পরবর্তীতে দাসদের প্রতি বেশ যত্নবান হন ফারাওরা । তখন বেশ উচ্চাভিলাষী খাবার ছিল গরুর মাংস । তাই দাসদের যত্নার্থে সেসময় দাসদের নিয়মিত গরুর মাংস খেতে দেয়া হতো ।
পিরামিড মোটেও ভীনগ্রহের প্রানী দ্বারা নির্মিত নয়।গিজার পিরামিডের নির্মানশৈলী এখনকার মানুষকে অবাক করে দিলেও তা অজানা ছিল না সেসময়ের গনিত ও জ্যোতির্বিদদের । পিরামিড নির্মানের ব্যবহৃত একেকটি বালকের ভর ছিল ২৩০০ কেজি ।প্রতিটি ব্লককে একদিনে ১২ টি জায়গায় সরাতে হয়েছে । এই ভারি ব্লকগুলো সরানোর জন্য ব্যবহৃত হতো কাঠের নৌকা , যা তৈরি করা হয়েছিল একধরনের ক্যানাল সিস্টেমে ।
দেখা যায়, গিজার ৩ টি পিরামিড অরিয়ন বেল্টের ৩ জ্যোতিষ্কের সাথে সমান্তরাল অবস্থানে নির্মিত । অরিয়ন ছিল মিশরীয় পুরানের পুনর্জন্মের দেবতার একজন বার্তাবাহক ।আর পিরামিড তৈরি হয়েছিল ফারাওদের পুনর্জন্মের সূচনাকেন্দ্র হিসাবে ।এটাই ছিল তারার সাথে মিল রেখে পিরামিড তৈরির সম্ভাব্য কারণ।
আশা করি এখন সবার ভুল ধারণা গুলো বুঝতে পেরেছেন । আজকের পোস্ট এ পর্যন্তই । সবাই ভাল থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।।