বিশাল এই মহাবিশ্বে ক্ষুদ্র একটি স্থান আমাদের আকাশগঙ্গা ছায়াপথ, তার মাঝে ক্ষুদ্র একটি বিন্দু আমাদের সৌরজগত।
আর সেই সৌরজগতের এক ক্ষুদ্র অংশ আমাদের স্বপ্নের পৃথিবী। সেই পৃথিবীর বুকে দাড়িয়ে আছে প্রায় আটশো কোটি মানুষ।
আজ এই ক্ষুদ্র মানুষেরা ছুটে চলেছে বিশাল মহাবিশ্বকে জানার জন্য। জয় করেছে অসাধ্য সাধন।
কিন্তু এত আনন্দের ভেতর দুঃখজনক বিষয় কি জানেন? আমরা আমাদের চাহিদা পূরণ করার লালসায় এই সুন্দর পৃথিবী কে ধ্বংসের পাথে এগিয়ে দিচ্ছি।
আসুন ছোট পরিসরে জেনে নেওয়া যাক, কি করে পরিবেশ দূষিত হয়?
এই পৃথিবীতে রয়েছে অসংখ্য জীব আর জীবের জীবন ধারণের জন্য বিভিন্ন উপাদান যেমন : মাটি,পানি,বায়ু ইত্যাদি।
বর্তমান সময়ে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার
বিভিন্ন ধরনের চাহিদা যেমন: অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থান, চিকিৎসা ইত্যাদি মেটাতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের স্বপ্নের এই পৃথিবী ও জীবন ধারণের সকল উপাদান।
পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্ত হলে বিশেষ করে বনাঞ্চল ধ্বংস হলে বৃষ্টিপাতের হার কমে যায়,চাষাবাদের যথেষ্ট ক্ষতি হয়।গ্রিনহাউজ গ্যাস বেড়ে গেলে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়,যাকে গ্রিনহাউজ গ্যাস বলে। গ্রিনহাউজ গ্যাস এর বৃদ্ধি ঘটলে পৃথিবীর ওজোন স্তর ধ্বংস হয়।গ্রিনহাউজ গ্যাস বৃদ্ধির ফলে সমুদ্রের পানির উচ্চতা বেড়ে যাবে,উপকূল অঞ্চল তলিয়ে যাবে,আবহাওয়া পরিবর্তন হবে,বনাঞ্চল ধ্বংস হয়,বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হয় যার প্রভাবে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়।ঝড়,জলোচ্ছ্বাস বেড়ে যাবে,পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে।
পৃথিবীর পরিবেশ সুরক্ষিত থাকলে মানুষের মৌলিক চাহিদাগুলো যেমন: অন্ন,বস্ত্র,বাসস্থান, ঔষধ, জ্বালানি, পানিসহ প্রয়োজনীয় উপকরন পরিবেশ থেকে নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে পাওয়া যাবে।
পরিবেশ রক্ষার উপায় সমূহ:
মানুষ বর্তমানে তার নিজের অস্তিত্ব রক্ষার্থে পরিবেশকে সংরক্ষণের কথা জোরেশোরে বলা শুরু করেছে। সুস্থ পরিবেশ রক্ষার জন্য সমগ্র বিশ্বকে এগিয়ে আসতে হবে।
বৃক্ষ পরিবেশের এক বিশেষ উপাদান।তাই আমাদের উচিত বেশি বেশি বৃক্ষরোপণ করা।বৃক্ষরোপণ কে শুধুমাত্র মাস বা সপ্তাহে সীমাবদ্ধ না রেখে প্রতিদিন যে গাছ কাটা হবে ঠিক তার দ্বিগুণ গাছ লাগানোর ব্যবস্থা করতে হবে।কোনো এলাকায় শিল্পকারখানা নির্মাণের পূর্বে সেই এলাকার উপর বিরুপ প্রভাব বিবেচনা করতে হবে, পাশাপাশি শিল্পবর্জ্যের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করতে হবে।পরিকল্পিত নগরায়ণ করতে হবে।নগরায়ণের সাথে সাথে অবশ্যই বৃক্ষায়ন করতে হবে।
জ্বালিনি ব্যবহার আমাদের নিত্যপ্রয়োজনীয়, তাই জ্বালানি হিসেবে কাঠ ব্যবহারের পরিবর্তে সৌরশক্তি ব্যবহার করতে হবে এবং এর ব্যবহার বাড়াতে হবে।
অধিক ফসল উৎপাদনের জন্য বর্তমানে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করা হয়।কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহার মাটির গুণাগুণ নষ্ট করে,উপকারী জীবাণু ধ্বংস হয়,জলজ ও মাটির বাস্তুতন্রকে নষ্ট করে।তাই রাসায়নিক সার ব্যবহারের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করতে হবে।
মাত্রাতিরিক্ত জনসংখ্যা বিভিন্নভাবে পরিবেশের বিপর্যয় ঘটায়।জনসংখ্যা সীমীত রেখে সচেতন ও শিক্ষিত জনগোষ্ঠী গড়ে তুলতে হবে।
গ্রিনহাউজ গ্যাস উৎপাদন হ্রাস করতে হবে।উপকূলীয় অঞ্চলে ভূমিক্ষয় রোধ করতে প্রচুর পরিমাণে বৃক্ষরোপণ করতে হবে।এতে করে জলোচ্ছ্বাস ও ভূমিকম্প রোধ হবে।
পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য জীব বৈচিত্র্য অত্যাবশ্যক। সেই লক্ষে যে সকল উদ্ভিদ ও প্রাণী প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাবার উপক্রম হয়েছে তাদেরকে বিশেষ প্রক্রিয়ায় সংরক্ষণ করতে হবে।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিবেশ নীতিকে যথাযথ ভাবে অনুসরণ করতে হবে।
পরিশেষে বলা যায় যে,
কেবল মাত্র আমাদের হাতেই আমাদের স্বপ্নের পৃথিবীকে সংরক্ষণ করা সম্ভব।
ধন্যবাদ সবাইকে।