আমি আবির, আমি লেখাপড়ার জন্যে সিলেট থাকি। হঠাত করে আমার নানা মারা যায়।আমি খবর পাওয়ার কিছুখন পরই রওনা হই বাড়ির উদ্দেশ্যে। আমি বাড়িতে পৌঁছে ব্যাগটা রেখে নানা বাড়িতে চলে যায়।
আমার নানা বাড়ি আমাদের বাড়ি থেকে দুরে নয় ১ঘন্টার পথ। আমার নানা কে কবর দিতে একটি পুরনো কবরস্থানে গিয়েছিলাম।
কবরে মাটি দিয়ে আসার সময় আমার একটা পা একটা গর্তে পড়ে যায় এবং আমার শরির সবটুকু পরে যায়।
তখন কিছুটা বুঝতে পারি এটা একটা পুরনো কবর।
পায়ে একটা হাড় ঢুকে গেছে
কোনরকমে হাড়টা বের করে যা দেখলাম তাতে আমি অবাক না হয়ে পারছিলাম না
কারণ সেটি কোন হাড় ছিল না
ওটা একটা সর্ণের আংটি।
আংটিটাকে পকেটে রেখে বাড়িতে চলে আসলাম
রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে আংটিটাকে একবার দেখে নিলাম।
কবরের ভিতর আংটি কি করে আসতে পারে
মৃতকে তো আর আংটি পড়িয়ে কবর দেবে না
এসব ভাবতে ভাবতে একসময় ঘুমিয়ে গেলাম
গভীর রাত
আমি স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি কেউ একজন আমাকে ডাকছে।
কিন্তু কে ডাকছে তা আমার জানা নেই।
ভয়ে চোখ খোলারও সাহস পাচ্ছি না।
হঠাৎ আস্তে আস্তে চোখ খুললাম।
কিন্তু কাউকেই দেখতে পেলাম না।
বিছানা থেকে উঠে বসলাম,
দরজার দিকে চোখ যেতেই আমি শিউরে উঠলাম
একটা কালো অবয় আমার দরজার সামনে দাড়িয়ে আছে
যেন একটা ছায়া।
যার সারা শরীর থেকে ধোয়ার মতো কিছু বের হচ্ছে
আস্তে আস্তে সে আমাার সামনে থেকে পুরো অদৃশ্য হয়ে গেলো
আমি চারপাশে তাকে খুজতে শুরু করলাম
কিন্তু সে কোথাও নেই
এই মুহুর্তে আমার মনে অনেক প্রশ্ন
কে ছিল সে?
আর অদৃশ্য ই বা কিভাবে হলো
এসব ভাবতে ভাবতে শুয়ে পড়লাম
হঠাৎ আমি খেয়াল করলাম
আমার পায়ে ঠাণ্ডা কোন কিছু বা কারো শীতল হাত স্পর্শ করেছে।
আমার মনে হচ্ছিল হয়তো ডিপ ফ্রিজ থেকে কোন কিছু বের করে আমার পায়ের উপর উপর রাখা হয়েছে
আমি এতোটাই ভয় পেয়েছিলাম যে পায়ের দিকে তাকাতেও ভয় করছিল
কিন্তু আমি অনুভব করছিলাম এটা কারো একটা হাত
কিন্তু কারো হাত এতোটা হিম শীতল হতে পারে কিভাবে, আমি অনেক ভয় পেয়ে যা।
এরপর আমি কোনকিছু ভাববার সময় ও পায় নি
সেই হাতটি আমার পা ধরে টানতে শুরু করে
আমি ভয়ে চিৎকার করতে থাকি
কিন্তু আমার মনে হচ্ছিল আমি চিৎকার তো করছি কিন্তু আমার মুখ থেকে কোন আওয়াজ বের হচ্ছিল না, আমি আমার শরীরের সমস্ত শক্তি দিয়ে চিৎকার করছিলাম
কিন্তু আমার গলা ধরে আসছিল তাই আমি আর চিৎকার করতে পারিনি।
আমি শুধু সেই কালো অবয়বের দিকে তাকিয়ে ছিলাম এবং ভয়ে কাপছিলাম।
সে তখনো আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছিল
একসময় আমাকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে গেল যেই জায়গাটা ছিল খুবই অন্ধকারাচ্ছন্ন
আমি কিছুই দেখতে পাচ্ছিলাম না
আমি সেই অবয়ের দিকে তাকিয়ে অবাক হয়ে যাই।
কারণ এতোক্ষন শুধু ছায়া ছিল কিন্তু এখন তার উপর একটা সাদা শাড়িও রয়েছে
রয়েছে একটা মুখ
হয়তো কোন মেয়ে
হঠাৎ
মেয়েটি কান্না করতে শুরু করলো
অদ্ভুদ ধরণের কান্না
মনে হচ্ছে
অনেক কষ্ট লুকানো আছে এই কান্নায়
এমন কান্না হয়তো আগে কোথাও কেউ শুনিনি কান্নার মাজে কোন প্রকার রহস্য লুকিয়ে আছে।
কান্নাটা এতোটাই তীব্র যে আমার মাথা ব্যাথা করছিল
আমি আমার মাথা ধরে বসে পড়ি
কিন্তু কান্নার প্রখরতায় মনে হচ্ছিল আমার কান ফেটে রক্ত বের হবে
এতোটাই জোরে কান্না করছিল সে
এভাবে কতোক্ষন ছিলাম
আমার জানা নেই
আমি অজ্ঞান হয়ে যাই
সকালে
আমার যখন জ্ঞান ফেরে তখন আমি অবাক দৃষ্টিতে চারপাশ দেখতে থাকি
এ আমি কোথায়???
ভালো করে দেখে বুঝলাম আমি কবরস্থানে আছি
আর আমার অর্ধেক শরীর একটা পুরনো কবরের ভেতর রয়েছে
আমি অনেক কষ্ট করে কবর থেকে উপরে উঠলাম
আমার পুরো শরীর ব্যাথা করছিল
ভালো করে তাকিয়ে দেখি আমি ঠিক সেই কবরস্থানে যেখানে কালকে আমার নানাকে কবর দিতে এসেছিলাম
কবরে মাটি দিয়ে আসবার সময় আমি একটা পুরনো কবরে পরে গিয়েছিলাম
আর ঠিক সেই কবরেই আমি রাতে ছিলাম সবকিছু কেমন জানি ঘোলাটে লাগছে
কাল রাতে তাহলে এখানেই এসেছিলাম
সারা শরীর এতোটাই ব্যথা করছিল যে মামার বাড়িতে যাওয়ার শক্তিও ছিল না।
কবরস্থানের বাইরে লোক দেখে তাদের ডাক দিলাম
তারা আমাকে দেখতে পেয়ে এগিয়ে এলো
তারপর তারা আমাকে হাসপাতালে ভর্তি করলো
আমার মা-বাবা ও বোন ও মামা খালা সবাই এলো
এসেই সবাই জিজ্ঞাসা করছিল
কিভাবে এমনটা হলো
কে করেছে
পায়ে পাঁচটা আঙ্গুলটা একেবারে ফুলে উঠেছে
কারো চোখেই তা এড়ায় নি
ডাক্তারও কনফিউস হয়ে গেছে এটা দেখে
সবাই আতংকিত হয়ে গেছে
কিন্তু আমি কাউকে কিছুই বলি নি
আমি আমার মুখের ভাষায় হারিয়ে ফেলেছিলাম
কি বলব তা নিজেও বুঝে উঠতে পারছিলাম না
জানি না কি বলা উচিত
রাতে যে ঘটনাটা ঘটে গেলো তা নিয়ে ভাবছি
এমন ঘটনার পর বেঁচে থাকাটাই ভাগ্যের ব্যাপার
কোনদিন ভাবিওনি জীবনে এমন কোন রাত আসতে পারে
সেদিন কোনরকমে কেঁটে গেলো
রাতে হাসপাতালে শুয়ে আছি কিছুতেই ঘুম আসছে না
বাড়ির সবাই আমার পাশেই থাকার ব্যাবস্থা করেছে
সবাই ঘুমিয়ে গেছে
চোখ বন্ধ করে শুয়ে থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি তা নিজেও জানি না
একটা মেয়েলি ডাকে ঘুম ভেঙ্গে গেলো
তাকিয়ে দেখি সবাই ঘুমাচ্ছে
তাহলে কে ডাকলো???
আবার কি কিছু হতে চলেছে??
To be continue
লেখক :সাখাওয়াত হোসেন আবির