Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

সমুদ্রের পানি মিষ্টি হয়ে গেলে কি হবে?

হেলো বন্ধুরা,আশা করি সবাই ভালো আছেন। বন্ধুরা ছোট বড় সকলে জানে পানির অপর নাম জীবন। পানি ছাড়া জীবন কোন ভাবেই বিকশিত হতে পারেনা । আমরা সবাই জানি পৃথিবীর তিনভাগ জল আর একভাগ স্থল। তবে বেশিরভাগ পানি রয়েছে সমুদ্রে। আর সমুদ্রের পানি লবণাক্ত যেসব মানুষের ব্যবহারযোগ্য নয়।

ধরুন কাল সকালে ঘুম থেকে উঠে যদি জানতে পারেন সমুদ্রের সব পানি মিষ্টি হয়ে গেছে তাহলে কি হবে একবারও ভেবেছেন কখনো।
যদি না ভেবে থাকেন, তবে একবার ভাবুন।আর এটাও জেনে নিন সমুদ্রের পানি মিষ্টি হয়ে গেলে আমাদের উপর তার কেমন প্রভাব পড়বে ।

প্রথমে জেনে নেওয়া যাক সমুদ্রের পানি এতো লবণাক্ত হয় কেন?
এখানে বলে রাখা দরকার সমুদ্রের পানি সবসময় এমন নোনতা ছিলনা। আজ থেকে প্রায় ৩.৮ বিলিয়ন বছর আগে ভূপৃষ্ঠ ঠান্ডা হতে শুরু করেছিল ফলে বাষ্পায়ীত পানি ধীরে ধীরে তরলে পরিণত হতে শুরু করে।আর তখনকার সেই পানি নোনতা ছিলনা।অর্থাৎ বহু বছর আগে সমুদ্রের পানি মিষ্টি ছিল।কিন্তু সেটা বেশিদিনের জন্য ছিলনা আর এর কারণ বৃষ্টি। অবাক হয়ে গেলেন তো! বৃষ্টি কিভাবে সমুদ্রের পানিকে লবণাক্ত করতে পারে?
ব্যাপার টা এমন যে বৃষ্টির পানি যখন বাতাসের মধ্য দিয়ে ভূপৃষ্ঠে পরে তখন বাতাসের কার্বন ডাইঅক্সাইড এর সাথে মিশে কিছুটা অম্লীয় অর্থাৎ এসিডিক হয়ে যায়।আর এই সামান্য অম্লীয় বা এসিডিক পানি যখন পাথরের উপর পরে তখন পাথর ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে কোন নদী বা জলাশয়ে পরে।আর এর সাথে খনিজ পদার্থ এবং লবণ মিশে যায়।আর এ পানি সমুদ্রে গিয়ে মিশে।এটা ছাড়া সমুদ্রের তলদেশে অগ্নুৎপাত সমুদ্রের পানিকে লবণাক্ত করে চলেছে।আর এই পুরো ব্যাপার টা ৩.৮ বিলিয়ন বছর ধরে চলমান রয়েছে। সুতরাং অনেক লবণ মিশে সমুদ্রের পানিকে লবণাক্ত করেছে।

এখন আপনি হয়তো ভাবতে পারেন কতটুকু লবণ আছে।জানলে অবাক হবেন, ৪০ তলা ভবনের সমান উঁচু লবণের স্তর।আর এই লবণ দিয়ে সমগ্র পৃথিবীকে ঢেকে ফেলা যাবে।

পৃথিবীর ৯৭% পানি লবণাক্ত আর ৩% পানি মিষ্টি। এমতাবস্থায় সমুদ্র থেকে সব লবণ তুলে নিলে তো ভালোই হয়।এতে করে যেসব দেশে পানীয়জলের অভাব দেখা দিয়েছে সেই সমস্যা দূর করা যাবে।

কিন্তু এই ব্যাপারটা মোটেও জীবকুলের বেচে থাকার জন্য সহায়ক নয়।কারণ নোনা জলে বাস করা সকল সামুদ্রিক প্রাণির বিনাশ ঘটবে।আবহাওয়া এবং তাপমাত্রার উপর অত্যন্ত খারাপ প্রভাব পড়বে।

প্রায় দুই লক্ষ আটাশ হাজার চারশো পঞ্চাশ (২২৮৪৫০) সংখ্যক আবিষ্কৃত প্রজাতি এবং প্রায় দুই মিলিয়ন প্রজাতি এখনও আবিষ্কৃত বাকি, যদি সমুদ্রের পানি মিষ্টি হয়ে যায় তবে এসব প্রাণী ধ্বংস হয়ে যাবে।তবে যেসকল প্রাণী মিষ্টি এবং লোনা পানিতে বাচতে পারে সেসকল প্রাণী জীবিত থাকবে।

সবচেয়ে বড় যে ক্ষতিটি হবে সেটা হলো বাতাসের কার্বন ডাই অক্সাইড এর পরিমাণ বৃদ্ধি।কারণ সমুদ্রের পানির নিচে থাকা উদ্ভিদ গুলো বিশেষ করে আলগী পৃথিবীর অর্ধেক সালোকসংশ্লেষ সম্পন্ন করে।সালোকসংশ্লেষ বা ফটোসিনথেটিস এর সাহায্যে পৃথিবীর অর্ধেক অক্সিজেন জোগান হয়। আর আমরা এই অক্সিজেন এর মাধ্যমে বেচে আছি।আর এতে করে শুধু অক্সিজেন এর পরিমাণ কমবে তা নয়, বাতাসে কার্বব ডাই অক্সাইড এর পরিমাণ বৃদ্ধি পাবে।আর বাতাসে কার্বন ডাই অক্সাইড এর পরিমাণ বৃদ্ধি মানেই গ্রীনহাউজ ইফেক্ট। আর গ্রীণহাউজের ফলে পৃথিবীর বিশেষ কিছু জায়গায় তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে।

আর এতে করে বৃদ্ধি পাবে জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড়, সাইক্লোন। এমতাবস্থায় প্রকৃতির সাথে যুদ্ধ করে বেশিদিন টিকে থাকা সম্ভব হবেনা।

সুতরাং লবণ ছাড়া খাবার যেমন স্বাদহীন তেমনি সমুদ্রের পানিতে লবণ না থাকলে এই পৃথিবী থেকে সবচেয়ে বুদ্ধিমাণ প্রাণীগুলো ধ্বংস হয়ে যাবে।

তাই বন্ধুরা খাবার খাওয়ার সময় অবশ্যই একবার ভাববেন এই ক্ষুদ্র কণা গুলো কিভাবে পৃথিবীর ভারসাম্য বজায় রেখে চলেছে।

 

 

ধন্যবাদ সবাইকে।

Related Posts

8 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No