সিটে হেলান দিয়ে হা করে ঘুমিয়ে আছে রাকিব। মশা, মাছির আনাগোনা হলে এতক্ষণ পেটে এদের গুণগুণ আর ভনভন শব্দ শোনা যেত। ঝকাঝক ঝক শব্দে ট্রেন হেলে দুলে চলছে। ব্রীজ পার হচ্ছে ট্রেন। ঝনঝন শব্দে ঘুম ভেঙ্গে গেল রাকিবের। ষ্টেশনে ব্রেক কশলো ট্রেন। সিঁড়ি থেকে নামতে গিয়ে একেবারে প্রণামীর কায়দায় উপুর হয়ে পড়লো রাকিব। হাতের ব্যাগ দুই হাত দুরে। কোনো রকমে উঠে ব্যাগ হাতে নিলো রাকিব। বাংলা পাঁচের মত মুখটা তার বেকিয়ে গেছে। একজন মূর্তমান প্রবাদ হয়ে দাড়িয়ে আছে সে। কিছুদুর যেতেই রাস্তার কাঁদায় পা পিছলে একেবারেই নাজেহাল অবস্থা । কাঁদা আর পানিতে একটা ভূতরে অবস্থা। দূরে যুবক শ্রেনির একদল হেসেই একসার- শালা বলদ নাকি? কেউ মুখ ভেংচিয়ে চলে যাচ্ছে। কাদার উপর চিৎ হয়ে শুয়ে পড়লো রাকিব। আকশের দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে রইলো। নিজের প্রতি বড় অভিমান হচ্ছে তার। কোন রকমে উঠে পাশে থাকা ট্যাপের এপাশ ওপাশ ঘুরালো কয়েকবার, কাজ হলো না। হাত দিয়ে নাড়াচাড়া করলো, একফোটা পানি বের হলো না। ধ্যত্ত্যরি, কপালটাই এমন তার। কোন কাজ করতেই ভয় পায় এখন সে। রাস্তার একটা টিউবওয়েলে নিজেকে ধূয়ে নিলো সে। মূয়াজ্জিনের সুমধুর সুরে যোহরের আযান ভেসে আসলো ততক্ষণে। হোটেল গুলো থেকে খাবারের ঘ্রাণ তাকে পাগল করে তুলেছে। গোস্ত ভোনা তার খুবই প্রিয়। হোটেলে ঢুকে গোস্তের অর্ডার দিলো । ওয়েটার এসে হাড্ডিওয়ালা গোস্ত দিলো তাকে। এ কি সহজেই কি ছেড়া যায়। মুখ দিয়ে টেনে ছিড়তে পারলোনা সে। অবশেষে প্লেটে রেখে হাত দিয়ে টান দিতেই ঘটে গেল চরম ঘটনা। গোস্তের টুকরা ছটাং করে ছুটে লাগলো হা করে মহিলার গালে।কিছুক্ষণ ভরাট গলায় উ…উ করলো মহিলা। মনে হয় খাবার আটকে গেছে। ব্যস্ তারপর শুরু হয়ে গেল- ইতর, অভদ্র, গেয়ো আর কত কি? রাকিব ততক্ষণে গো গ্রাসে খাবার শেষ করেছে। স্যরি আপু আমার ভুল হয়ে গেছে বলতেই মহিলার ঝাঝালো কন্ঠে উত্তর কিসের স্যরি, কার স্যরি, ক্যান স্যরি চাষার বাচ্চা চাষা কোথাকার? মহিলা বলতেই থাকলো, রাকিব হাওয়া। গায়ের ছেলে রাকিব, শহরে নতুন। শহরের আলাদা কালচার, ঝলমলে অবস্থা আর গতিময় জীবন নতুন লাগে তার। অল্প সময়ে জীবন বিষিয়ে উঠেছে তার। গাঁয়ের ধারের পুকুর পাড় , সাজি বাড়ির বিল, গাঁয়ের মেঠো পথ তার জীবনের সাথে একাকী হয়ে মিশে আছে। শহরের এই কোলাহল তার ভালো লাগে না। বিভিন্ন সাতকাহন ভাবতে ভাবতে কখন যে রাস্তার মাঝপথে চলে এসেছে নিজেও জানেনা। এই লাগলো লাগলো বলতে বলতে ডিমের বোঝাওলা সাইকেল নিয়ে হুরমুর করে পড়ে গেল। ভাগ্যিস ডিমের বোঝাটা রাকিবের ওপর। ডিমের পুরো ভান্ডার তার মুখে। সার্কাসের জোকার । কেক হলে নয় চেটে খাওয়া যেত। এদিকে ডিমের বিকট গন্ধ, আর তাকানো তো যাবেই না। এক কথায় চোখ, মুখ, নাক বন্ধ করে দাড়িয়ে রয়েছে এক জ্যান্ত জোকারম্যান।
– চলবে।
Hmm
nice
বেশ ভালো
nice
nice
Nice.
ভাল লাগল
Nc
Nice
Ok
দারুণ কবিতা
nice post
❤️
bahut acha