বেকারত্ব- আজকের দুনিয়া প্রতিনিয়তই টাকার কাছে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে।মানুষ আজ টাকা ছাড়া কিছুই বুঝতে চায় না।কিন্তু টাকা তো আর সবার কাছে ধরা দেয় না।আল্লাহ যাজে ইচ্ছা টাকা ধারা বা সম্পদ ধারা পরীক্ষা করেন। সাজ্জাদ এই টাকার দুনিয়াতে আজ নিতান্তই একজন ফকির বলা চলে।তার উপরে আবার সাজ্জাদ এই যুগের সবচেয়ে মারাত্মক বিপদের সম্মুক্ষিন।কারন সে বেকার।তার কাছে নেই কোন পৈএিক সম্পদের ভান্ডার। নেই কোন গুপ্তধন।নেই চাকরি দেবার জন্য কোনো প্রকার চাচা মামা।তাই ক্ষনে ক্ষনে তাকে তীব্র বেদনা সহ্য করতে হয়।
সাজ্জাদের বাবা মারা যায় প্রায় ৫ বছর আগে।হঠাত করেই তিনি সারা দেন আল্লাহর ডাকে।সাজ্জাদ এবং তার পরিবারের উপর নেমে আসে এক শোকের ছায়া।বাবার ছিলোনা কোনো টাকার ভান্ডার। কিন্তু ছিলো শুধু অনেক অনেক বেশি ঋনের বোঝা।মানুষের নানান কথায়,শোকে,কষ্টে,চাপে মারা যান সাজ্জাদের বাবা।
এদিকে বাবা মারা যাবার পর মা ও অসুস্থ হয়ে যায় সাজ্জাদের।কিডনিতে সমস্যা।শরীরের প্রতিটি অংশে পানি জমা হয়ে গেলো সাজ্জাদের মায়ের।এখান সেখান থেকে সাজ্জাদের মাকে দেখতে আসলো অনেক আত্তিয়-স্বজন। সবাই বলাবলি করতে লাগল,আর মনে হয় বাচবে না।মানুষের এই রকম মন্তব্য শুনে হঠাৎ হঠাৎ কেদে উঠে সাজ্জাদ।কারন বাবা তো নেই মা ই যে তার একমাত্র সম্বল।আর মায়ের যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে তার ৫ বছরের ভাইটা কে নিয়ে কিভাবে দিন কাটাবে সে।
কিন্তু আল্লাহর অশেষ রহমতে বেচে যায় সাজ্জাদের মা।আজ প্রায় ৫ বছর হয়ে গেলো আলহামদুলিল্লাহ সাজ্জাদের মা এখনো সুস্থ আছেন।কিন্তু কথা হচ্ছে একটা বিপদ সাজ্জাদ কে আজও ছাড়তে নারাজ।আর তা হলো বেকারত্ব।আজকের বিশ্বে বেকারত্ব হচ্ছে এক নিরব ঘাতক।এই বেকারত্ব সাজ্জাদ কে তিলে তিলে ক্ষয় করে যাচ্ছে।সাজ্জাদ বেকার কারন তার কাছে নেই কোন টাকার জোড়,নেই কোন সাহায্যকারী মামা-চাচা।
সাজ্জাদের বাবা ব্যাংকার ছিলেন। যদিও ব্যাংকারদের পেনশন পাবার একটা বিষয় থাকে,কিন্তু সাজ্জাদের বাবা তা পায় নি।সাজ্জাদের বাবা জিবনে যেই ঋণ করেছিলো তার অন্যতম কারন হলো সাজ্জাদের চাচারা।সাজ্জাদের বাবা ছাড়া আরও তিন চাচা ছিলো।সাজ্জাদের বাবা তাদের প্রত্যেকের জন্যই ভালো কর্মক্ষেত্রের ব্যবস্থা করে ছিল আল্লাহর রহমতে।কিন্তু সেগুলো করতে গিয়ে অনেক ধার দেনা করতে হয় সাজ্জাদের বাবাকে।অথচ সাজ্জাদের চাচারা সাজ্জাদের বাবার সেই ধার দেনা পরিশোধ করা তো দূরের কথা উল্টো সাজ্জাদের বাবাকে দোষারোপ করতে থাকে।
মানুষ কতোটা সার্থপর।সাজ্জাদের চাচাদের এরূপ মন্তব্য তার বাবার মনে এক সময় বাচার ইচ্ছাই ছেড়ে দিয়েছিলেন।কিন্তু আল বাবা সেই দেনা পরিশোধ করতে গিয়ে ব্যাংক থেকে অনেক টাকা লোন নিয়েছিলেন।সেই লোনের টাকাই তার পেনশন থেকে কেটে নেওয়া হয় পুরোপুরি।সাজ্জাদের আজ কোন উপায় নেই।কোথায় চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার মতো ভালো বেশভূষা ও তার নেই,আর গেলেও চাকরির বাজারে আজ টাকার জোর বেশি।বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই টাকা দিয়েই চাকরি নিতে হয় আজ।সাজ্জাদ জানেনা কবে তার বেকারত্ব দূর হবে।শুধু জানে আল্লাহ যখন চায় তখনই হবে।