- পাকিস্তানের প্রথম গভর্নর জেনারেল মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ ১৯৪৮ সালে উর্দুকে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই মূলত স্বাধীনতা আন্দোলনের বীজ বপন করা হয়। রাষ্ট্রভাষা হিসেবে উর্দুকে রোধ করার জন্য গঠিত হয় সর্বদলীয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম পরিষদ।১৯৫২ সালে পুনরায় উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা ঘোষণা দিলে ছাত্র-জনতা পুনরায় বিক্ষোভে ফেটে পড়ে।১৯৫২ সালে “রাষ্ট্রভাষা বাংলা চাই”আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। এ আন্দোলনকে থামানোর জন্য গুলি করা হয় ছাত্রদের উপর। শহীদ হন সালাম, রফিক, জব্বার, বরকত সহ আরো অনেকে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে মুসলিম লীগের ভরাডুবি এবং যুক্তফ্রন্টের অভূতপূর্ব বিজয় লাভ পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর ক্ষমতার ভিতকে নড়বড়ে করে দেয়। ১৯৬৫ সালে মৌলিক গণতন্ত্রের নামে আইয়ুব খান এক প্রহসনের নির্বাচন দিয়ে এদেশের মানুষের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করে নেয়। তখন থেকেই স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলন তীব্র হয়ে ওঠে। বাঙালির স্বাধিকার আদায়ের লক্ষ্যে ১৯৬৬ ছেলে ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি উত্থাপিত হয়। ১৯৬৮ সালের আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা সাজিয়ে শেখ মুজিবুর রহমানকে কারাগারে আটক করা হয়। কিন্তু গণআন্দোলনের মুখে তাকে আটকে রাখা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। শেখ মুজিবুর রহমান সহ অন্যান্য রাজনৈতিক নেতাদের ছেড়ে দেয়া হয়। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করলেও পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী ক্ষমতা হস্তান্তরের নামে টালবাহানা শুরু করে। ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) “এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম” বলে জাতিকে মুক্তি সংগ্রামে ঝাঁপিয়ে পড়ার আহ্বান জানান। সারা বাংলায় শুরু হয় তুমুল আন্দোলন আন্দোলন। আপস আলোচনার নামে কালক্ষেপ করে ইয়াহিয়া খান পশ্চিম পাকিস্তান থেকে গোপনে সৈন্য এবং অস্ত্রশস্ত্র এনে শক্তি বৃদ্ধি করে;বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে পুনরায় গ্রেপ্তার করা হয় এবং ১৯৭১এর ২৫ শে মার্চের গভীর রাতে পাকবাহিনী ঝাঁপিয়ে পড়ে নিরস্ত্র বাঙালির ওপর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন ছাত্রাবাস,ইপিআর ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনে নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞ চালায়।