- রাত প্রায় ১২ টার মতো হবে,
শুয়ে শুয়ে ফেসবুকে স্ক্রল করতেছিলাম, যদিও বা এই সপ্তাহে বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু কিছু জরুরি কাজের জন্য যায়া হয়নি?
নোটিফিকেশন আসছে বুঝতে পেরে চেক করতে গেলাম, দেখলাম রিকোয়েস্ট মেসেজ চেক করতে বলা হলো।
.
তার আইডি চেক করে দেখলাম অনেক দিন ধরে ঝুলে আছে আইডিটা,
.
আমি সাধারণত একটিভ কোন আইডি হলে ঝুলিয়ে রাখিনা,
অপরিচিত হলেও, কিন্তু আইডিটার অদ্ভুত নামের কারণে ঝুলিয়ে রাখছি।
.
মেসেজ চেক করে বুঝতে পারলাম সে আমার ১৫ গুষ্ঠির সবাই কে চিনে, সেই ধরনেরই লম্বা একটা মেসেজ দিছে।
.
যায় হোক অনেক কথা হলো তার সাথে। নাম জিজ্ঞাসা করাতে বলল আমার নাম নাবিলা,
ঢাকাতে থাকে, ইন্টার প্রথম বর্ষে লেখাপড়া করতেছে, কিন্তু আমাকে কি ভাবে চিনে সে কথার কোন উত্তর মেয়েটা দিলনা, পরে বলবে বলে অনলাইন হতে বাহির হয়ে গেল। কিন্তু আমার রাতের ঘুম হারাম হয়ে গেল কে হতে পারে এটা?
.
পরের দিন দুপুরে নেটে আসার পর আবার তার মেসেইজ পেলাম,
“এখন কি আর আগের মতো সকাল সকাল উঠে মেসেইজ চেক করতে আসা হয়না বুঝি? তোমার জিপি সিম টা চালু কর,অনেক কিছুই অপেক্ষা করছে তোমার জন্য।
.
প্রশ্ন টা শুনে খুভ খটকা লাগলো, এ আর অন্য কেউ হতে পারেনা, আনিকা ছাড়া। সাথে সাথে মানিব্যাগের চিপা হতে জিপি সিম টা বের করে চালু করলাম। এবং কয়েক টা মেসেজ পেলাম।
.
ফোন দিলাম সে নাম্বারে, কিন্তু নাম্বার বিজি বলে বুঝা যাচ্ছে, বুঝতে পারলাম আমার নাম্বার ব্লক লিষ্টে।অন্য নাম্বার হতে ফোন দিলাম, ২ বার রিং হওয়ার পর ফোন রিসিভ করার সাথে সাথেই মেয়েলি কন্ঠে বলে উঠল কেমন আছ আরিফ?
.
হইতো ভাপচ হটাৎ করে তোমাকে কেন খুঁজে নিলাম? কি কারণে তোমাকে ফোন দিলাম? তার উত্তর একটাই, অপরাধের ক্ষমা চেয়ে ফিরে আসতে চাই তোমার কাছে। অর্থের লোভে অন্ধ হয়ে আমি চাঁদ চিনতে ভুল করে ফেলেছি। আমি জানি তুমি এখনো আমাকে ভালোবাস, আর আমার জন্য অপেক্ষা করতেছ,
“যান আরিফ”! আসলে সে আমাকে ঠকিয়েছে,
সে সরকারি চাকরি করেনা, সে একটা প্রাইভেট কোম্পানির কম্পিউটার অপারেটর হিসাবে কাজ করে, আরো অনেক মিথ্যা প্রলোভন ছিল তার, যার কারনে এই দুই বছর অনেক ঝগড়াঝাটি করার পর এখন আমি একটা এন জিও কোম্পানি তে চাকরি করতেছি, আর তাকে আমি ডিভোর্স দিয়েছি, আমি আবার আমার আরিফ কে ফিরে ফেতে চাই।
.
মন্ত্র শুনার মতো করে এতক্ষণ তার কথা গুলো শুনছিলাম, আর নিরবে চোখের জল ফেলতেছিলাম ২ বছর ১ মাস ১৪ দিন পর চিরচেনা সেই কন্ঠ শুনে। এবার আমি মুখ খুললাম।
.
দেখ আনিকা আমি বুঝতে পারছি তোমার কথা, কিন্তু একটা বিষয় কি তুমি যান? মানুষের সব সময় এক রকম থাকে না, যখন নিজে নিঃস্ব ছিলাম তখন তুমি ছলনার মায়া জালে আবৃদ হয়ে চিফসের খালি পেকেটের মতো আমাকে ছেড়ে চলে গিয়েছিলে সেই লোক টার কাছে। আজ যখন আমার অবস্থান ফিরে এসেছে ফিরতে চাচ্ছ তুমি আমার নিড়ে? যদি কখনো আবার আমার দুরবস্থা আসে তখন তুমি ছেড়ে যাবেনা তার কি কোন গ্যারান্টি আছে? একা আছি ভালো আছি, স্মৃতি গুলো আর মনে করতে চাইনা।
.
প্রতিদিন কতো স্বপ্নই না সাজাতাম আমরা দুই জন মিলে,
আমার একটা চাকরি হলেই তোমাকে বিয়ে করে নিব, ২ জন মিলে সংসার সাজাব,তুমি ছোট বেলায় বাবা মাকে হারিয়েছে,আমার বাবা মাকে নিজের বাবা মায়ের মতো সেবা করবা । প্রতি বন্ধের দিনে আমরা ঘুরতে বের হব, শহরের অলিতে গলিতে রিক্সা নিয়ে ঘুরব সারা বিকেল টা।
.
আমাদের প্রথম সন্তান টা ছেলে হলে নাম রাখব মাহির, আর মেয়ে হলে মায়েশা নাম রাখব। বৃষ্টির দিনে ঝুম বৃষ্টিতেও ২ জন পাশাপাশি বসে বৃষ্টিতে এক সাথে ভিজবো।
.
কিন্তু কে জানত হটাৎ করে সে মেয়েটা বদলে যাবে অজানা কারণে, বুঝতে পারি নাই অন্য এক জন ছেলের ছলনার মায়াজালে জড়িয়ে পরবে সে মেয়েটা। এই সব স্মৃতি আর মনে করতে চাইনা আমি, একা আছি ভালো আছি,সুখে আছি,নিজের মতো করে বাঁচতে চাই আমি,তুমি প্লিজ তার কাছে ফিরে যাও।
.
স্বার্থপর মেয়ে।
লেখা ইমাম হোসেন আরিফ
( বিরানি পাগলা)