আসসালামুয়ালাইকুম
আশা করি সবাই আল্লাহর অশেষ রহমতে ভালো আছেন,সুস্থ আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও অনেক ভালো আছি।
আজকে আমি আপনাদের মাঝে সৎ মায়ের অত্যাচার, অবহেলা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করবো।
তবে সব সৎ মায়েরাই খারাপ হয় না। অনেকে আছেন যারা অনেক ভালো হয়। নিজের মায়ের মতোই আচরণ করেন, ভালোবাসে, স্নেহ করেন।
তাই আমাদের ভাবা উচিত না যে সব সৎ মায়েরাই একরকম।
যাইহোক গল্পে আসা যাক।
,,,,,,
,,,,,,
—–কিরে রায়হান কবে থেকে বলছি আরেকটা বিয়ে কর। নিজের জন্য না হোক ছোট্ট মেয়েটার কথা একটু ভাব । ওরতো এখন মায়ের আদর, ভালোবাসার প্রয়োজন।
—– কিন্তু মা যদি হিতে বিপরীত হয় তখন কি হবে।
—– আরে এত চিন্তা করিস না তো, সব ভালোই হবে। তাহলে কালই আমি মেয়ে দেখছি কি বলিস।
—– তুমি ভালো জানো। আমি আর কি বলব । যেইটা ভালো হয় সেটাই করো।
পরেরদিন,,,,
—- দেখ রায়হান এই অনেক সুন্দর। তোর সাথে বেশ মানাবে।
—-( কিছু না বলে হনহনিয়ে ঘরে গিয়ে দরজা লাগিয়ে দিল)
—– কিরে কিছু বললি না যে। শোন শুক্রবার বিয়ে ঠিক করেছি।
রিমা রায়হানের স্ত্রী।। রিমার ছবি হাতে নিয়ে ,,,
—– কেন রিমা কেন তুমি এত নিষ্ঠুর হলে, কেন আমাকে একা ফেলে চলে গেলে কেন। তুমি যদি থাকতে তাহলে আজ আমাকে এই কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হতো না। আমি যে তোমাকে ছাড়া আর কাউকে ভালোবাসতে পারবো না।
রিমার ছবি বুকে জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ল রায়হান।
সাতমাস হলো রিমা মারা গেছে। রিয়ার তখন দুই মাস বয়স। এখন রিমার নয় মাস বয়স। ছোট্ট মেয়েটার কথা ভেবে আজ রিমার জায়গায় অন্য কাউকে বসাতে হবে।
,,,আজ শুক্রবার
রায়হানের মনের ভেতর তোলপাড় শুরু হয়ে গেছে। কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।
বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। বাসায় ও এসে গেছে সবাই। মেয়েটা বাসর ঘরে বসে আছে।
রায়হান মনে মনে ভাবছে মেয়েটার আর কি দোষ,,, এরকম সাতপাঁচ ভাবতে ভাবতে ঘরে ঢুকলো রায়হান। ঘরে ঢুকেই বেশ অবাক হলো রায়হান,,, মেয়েটা রিয়ার সাথে খেলছে। বেশ খুশি হলো রায়হান।
বেশ সুখে শান্তিতে দিন কাটাচ্ছিলো তারা। রিফা প্রেগন্যান্ট। ।।।
নয়মাস পরে রিপার ফুটফুটে একটা মেয়ে হয়েছে। আর এটাই রিয়ার জীবনে কাল হলো।
রিতার জন্ম হওয়ার পর থেকেই রিফা কেমন যানি বদলে যায়। রিয়ার কোনো খবরই রাখে না। দিন যত যায় রিয়ার প্রতি রিফার অবহেলা তত বাড়তে থাকে।
আজ রিয়ার বয়স সতেরো বছর। দুই বছর আগে রায়হান স্ট্রোক করে মারা গেছে। এখন রিয়ার গায়ে হাত তোলে রিফা।
বাড়ির সব কাজ এখন রিয়াকে দিয়ে করায় । পান থেকে চুন খসলেই অনেক মারধোর করে। রিয়া কেমন সবসময় চুপচাপ থাকে।
পড়াশোনাটাও বাদ দিয়ে দিয়েছে। সবসময় একা একা থাকে।
একদিন একটা কাঁচের গ্লাস ভেঙ্গে ফেলে আর এজন্য অনেক সেদিন অনেক বেশীই মারধোর করে। আর সেদিনের পর থেকে রিয়া আরো চুপ হয়ে যায়। সারারাত নির্ঘুমেই কাটে তার । চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে। কতরাত যে ঘুমায় নি নিজেই জানে না।
পরেরদিন রিয়া অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে। কোনো কাজ না করায় অনেক বকাঝকা করে রিফাত।
অবস্থা খারাপ দেখে ডাক্তার ডাকে রিফা। ডাক্তার এসে পরীক্ষা করে দেখে রিয়ার টাইফয়েড জ্বর হয়েছে। টাইফয়েড জ্বরের কথা শুনে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে রিফা। অনেক টাকা খরচ হবে তাই।
ডাক্তার কিছু ওষুধ লিখে দিয়ে চলে যায় এবং ভালো ডাক্তার দেখাতে বলে কিন্তু রিফা কিছুই করে না। আস্তে আস্তে রিয়া অনেক অসুস্থ হয়ে পড়ে আর একদিন এত কষ্ট সহ্য করতে না পেরে পৃথীবির মায়া ত্যাগ করে চলে যায়।।।।।।।।