আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (সঃ) – এর একজন কালো সাহাবী ছিলো । সকল সাহাবীর মধ্যে সেই সবচেয়ে বেশি কালো । কিন্তু নবীজির ভালবাসায় যারা জীবন দিতে প্রস্তুত সেই সাহাবীও তাদের মধ্যে একজন । প্রিয় নবীও অনেক ভালবাসতেন তাকে । একদিন সেই কাল সাহাবীকে নবীজি বললেন তুমি সারাক্ষন আমার সাথেই থাক তাই আমি তুমার কাছে কিছু জানতে চাই । তখন সাহাবী নবীজির কাছে মাথা নীচু করে বল্লো হুজুর আমার জান হাজির আপনার জন্য, আপনি শুধু বলুন কি জানতে চান । তখন নবীজি বললো তুমার বিয়ের সময় হয়েছে তুমি কি কারো জন্য প্রস্তুত । কালো সাহাবী মাথে নেরে বল্লো হুজুর আমি যে এত কালো আমার কাছে কে মেয়ে বিয়ে দেবে । নবীজি বললো তুমি বিয়ে করবে কিনা বল তুমার জন্য আমি মেয়ে দেখব । এ কথা শুনে কালো সাহাবী খুশিতে কেদে ফেললো । আর বললো হুজুর আপনি আমার জন্য মেয়ে দেখবেন আমার কাছে এর চেয়ে বড় পাওয়া আর কি হতে পারে । তখন নিবীজি একটি পত্র লিখলেন আর তা কালো সাহাবীর হাতে দিয়ে বোললেন এই পত্রটি নগরীর বড় বাড়িতে দিয়ে উত্তর জেনে তারপর আমার কাছে আসবে । কিন্তু কাল সাহাবী জানেনা এর ভিতরে কি লিখা ছিলো । নবীজির কথা অনুযায়ী পত্রখানি নিয়ে নগরীর বড় বাড়ির মালিকের হাতে দিলো । নবীজির কথা শুনে তারাতারি পত্রটি খুলে ফেললো মালিক । আর এর মধ্যে লেখা আছে আসসালামু আলাইকুম, আমি মোহাম্মদ (সঃ) আপনার কাছে আমার কালো সাহাবীর জন্য আপনার মেয়ের বিয়ের প্রস্তাব করলাম আশা করছি আপনি প্রস্তাব গ্রহন করবেন এবং আপনার সুন্দরি মেয়ের সাথে আমার কালো সাহাবীর বিয়ে দিবেন ইতি মোহাম্মদ (সঃ) । বড়বাড়ির মালিক নবীজির কথা শুনে কেদে ফেললো । আমার একমাত্র মেয়ে মদিনায় যাকে হুরে মদিনা বলেই সবাই ডাকে । কিতাবে আছে মেয়েটি এতই সুন্দর যার জন্য মদিনার সবাই তাকে হুরে-মদিনা বলেই ডাকতো । আমি এখন কি করি নিবীজি বলেছেন এত আনন্দের কথা কিন্তু ছেলেটি যে অনেক কালো । বিভিন্ন চিন্তায় মালিক চিন্তিত কালো সাহিবি বললো নবীজি কি লিখেছেন । আমাকে বলেছে উত্তর নিয়ে যেতে মালিক বললেন নবীজি বলেছেন তুমার সাথে আমার মেয়েকে বিয়ে দেয়ার জন্য । তখন মালিক সাহাবিকে বললেন বাবা তুমি এখন যাও নবীজিকে গিয়ে বলবে আমার মেয়ের সাথে পরামর্শ করে উত্তর পাঠিয়ে দিব । তখন নবীজির কালো সাহাবী মন খারাপ করে ফিরে যাচ্ছিলো । এমন সময় ঐ মেয়েটি দৌড়ে এসে তার বাবাকে বল্লো বাবা দেখলাম একটি লোক হাসি মুখে আসলো কিন্তু যাবার সময় মন খারাপ করে চলে যাচ্ছে । এর কারন কী ? বাবা মেয়ের কাছে সব খুলে বল্লো কথাটা শুনে মেয়েটি খুশিতে আত্তহারা হয়ে বললো । বাবা কি বলছেন নিবীজি পত্র লিখেছেন আমার বিয়ের জন্য আর আপনি ফিরিয়ে দিলেন । বাবা ওই সাহাবী নবীজির কাছে পৌছানোর আগেই তাকে ফিরিয়ে নিয়ে আসুন নাহলে আল্লাহ্র কাছে আমরা অপরাধী হয়ে যাবো । বাবা নবীজি পত্র লিখেছেন এতে মনে হয় মদিনার সবচেয়ে সৌভাগ্যবতী মেয়ে আমি । মেয়ের মুখে এই কথা শুনে বাবা আলহামদুল্লিহ বলে ওই সাহাবীকে ফিরিয়ে নিয়ে আসল । বললো তুমি যে আমার মেয়েকে বিয়ে করবে দেনমোহর হিসেবে কি দেবে । তখন কাল সাহাবী বললো আমার কাছে নবীজির ভালবাসা ছাড়া আর কিচ্ছু নেই । ওই মেয়েটি বললো বাবা আপনার তো অনেক টাকা আজ নবীজির ভালবাসার জন্য কিছু টাকা দেনমোহরের জন্য ওকে দিয়ে দিন । মালিক আরও বললো বিয়ে যে করবে কিছু কেনাকাটা করেছো আমার মেয়েকে সাজানোর জন্য কালো সাহাবীর উত্তর আমার কাছে কোন টাকা নেই । ওই মেয়েটি আবারো বললো নবীজির ভালবাসার জন্য বিয়ের কেনাকাটার জন্য ঐ লোকটিকে কিছু টাকা দিয়ে দিন । অবশেষ নবীজির ভালবাসার খাতিরে মালিক সাহাবীকে কিছু টাকা দিয়ে বললো যাও বিয়ের বাজার করে নিয়ে এসো । আজকের ভিতেরই আমি নবীজির কথায় আমার সুন্দরীর মেয়ের সাথে তুমার বিয়ে দিব । নবীজির কালো সাহাবী মনের আনন্দে বিয়ের বাজার করতে রওনা হল । বাজারে গিয়ে কিছু কিনাকাটাও করে । হঠাৎ দেখলো মানুষ দৌড়াদৌড়ি করছে । কালো সাহাবী বললো কি হলো সবাই এমন দৌড়াচ্ছে কেন ? দুকানের মালিক বললো তুমি যা কিনবে তা পরে এসে কিনো । আমাদের সম্পদ মুসলিম বিশ্বের রহমত হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) কে শুত্রুরা আক্রমন করেছে । এই বলে দুকান বন্ধ করে চলে গেলো । কাল সাহাবী অন্য দুকানে গিয়ে বিয়ের বাজারের টাকা দিয়ে একটি তরবারি কিনলো । হঠাৎ আবার মনে হল সেই মদিনার সুন্দরি মেয়ে তার জন্য অপেক্ষা করছে । তখন নিজেকে বুঝালো যেই নবী না হলে আমি হতাম না এই দুনিয়া হতনা সেই নবীর চেয়ে সুন্দরী মেয়ে আমার কাছে বড় হয় কিভাবে । এই বলে নবীজির কালো সাহাবী তলোয়ারটি নিয়ে যুদ্ধের ময়দানে চলে গেলো । কিতাবে আছে ঐ যুদ্ধে নবীজির ৭০ জন সাহাবী শহীদ হয়েছিলো । তার মধ্যে কালো সাহাবী একজন । নবীজি অশ্রুশিক্ত হয়ে বল্লো আমার আদরের সাহাবীদের রক্ত মাখা অবস্থায় দাফন করে দাও । কিয়ামতের ময়দানে আমি আল্লাহ্র দারবারে এই রক্ত মাখা শরিল দেখিয়ে কোটি কোটি গুনাহগার উম্মতের নাজাতের দাবি করবো । হটাৎ নবীজির চোখ পরলো কালো সাহাবীর দিকে রক্ত মাখা শরিল নিয়ে পরে আছে সে । নবীজি চিৎকার দিয়ে বললো এই আমার কালো সাহাবীর লাশ আজকে তার বিয়ে হওয়ার কথা ছিলো । কয়েক জন সাহাবী বল্লো হুজুর আপনার কাল সাহাবী বিয়ের বাজার করতেই গিয়েছিল যখন শুনলো শত্রুরা আপনার উপর আক্রমন করেছে তখন সে যুদ্ধের বাজার করেছে ।নবীজি কান্না অবস্থায় কালো সাহাবীর কবরের দিকে তাকালো কিছুক্ষনপর হাসি মুখে বল্লো দাও তুমরা আমার কালো সাহাবীকে দাফন করে দাও । সাহাবীরা বল্লো বেয়াদবি মাফ করবেন আপনি কান্না অবস্থায় কালো সাহাবীর দিকে তাকালেন আবার হাসি মুখে দাফন করতে বললেন কারন কি বলবেন হুজুর ? নবীজি বললেন তাহলে শুন আমার কাল সাহাবী বিয়ের বাজার দিয়ে যে যুদ্ধের বাজার করেছে আমার ভালবাসায় ইসলামের পথে শহীদ হয়েছে আমি তাকে তাকিয়ে দেখি ঐ হুরে-মদিনা বেহেস্তের হুর হয়ে তার সেবা করছে । সুবাহানআল্লাহ্ আপনাদের কাছে অনুরোধ গল্পটি ভালো লাগলে গল্পটি শেয়ার করবেন । ধন্যবাদ ।
মেয়েদের সম্পর্কে কিছু বাস্তব কথা
আমাদের প্রচলিত সমাজে মেয়ে হয়ে জন্মানো একটা অভিশাপও বটে। একটা মেয়ে সবসময় অসহায়, চলতে-ফিরতে, উঠতে-বসতে।মন চাইলে নিজের ইচ্ছেমতো চলতে পারে...