সাধারণত সূর্যের দিকে মুখ করে থাকে বলে এই ফুলের নাম করণ করা হয় সূর্যমুখী। তাছাড়া ফুলটা দেখতেও অনেকটাই সূর্যের মতো ।
সূর্য যখন পূর্ব আকাশে থাকে তখন ফুলটিও পূর্ব দিকে মুখ করে থাকে আবার পশ্চিম আকাশে সূর্যের উপস্থিতিতে ফুলটিকে ঝুকে থাকতে দেখা যায় পশ্চিম আকাশের পানে।
সূর্যমুখীর সৌন্দর্য প্রায় সব মানুষেরই মন কাড়ে । সারি সারি ফুলের সমাহার অনায়াসেই চুরি করে নিতে পারে যে কোন মানুষের মন। সূর্যমুখী মূলত এক ধরনের একবর্ষী ফুল গাছ।
সূর্যমুখী গাছ টি লম্বায় ৩ মিটার (৯.৮) ফুট হয়ে থাকে এবং একেকটি ফুল প্রায় 30 সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে।
- সূর্যমুখীর তেল কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেকাংশেই কমিয়ে দেয়। তাই সূর্যমুখী হৃদরোগীদের জন্য বেশ কার্যকর। এই তেল অন্যান্য রান্নার তেল থেকে অনেক ভালো ।
- সূর্যমুখীর তেল ঘি এর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার হয় , যা বনস্পতি তেল নামে পরিচিত।এই তেলে কোলেস্টেরলের মাত্রা অনেক কম।
এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, ডি ও ই রয়েছে তাই এই তেল মানে গুণেও অনন্য।
প্রতিদিনের রান্নায় সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায় ; ফলে আমাদের হার্ট সুস্থ থাকে।
তাই প্রতিদিনকার রান্নায় সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করলে অনেক উপকার পাবেন। আর যাদের হৃদরোগের সমস্যা নেই তারাও সূর্যমুখী তেল খেতে পারেন এতে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যাবে । সারা বিশ্বে সূর্যমুখী ফুলের ব্যাপক চাহিদা চোখে পড়ার মতো।
আমাদের দেশেও এই ফুলের চাহিদা কম নয় । তবে ষাটের দশকে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে সূর্যমুখীর চাষ শুরু হয় । বর্তমানে পাবনা, দিনাজপুর , নাটোর , রাজশাহী , কুষ্টিয়া, যশোর, টাঙ্গাইল , গাজীপুর সহ অনেক জেলাগুলোতে বর্তমানে এই ফুলের চাষ হচ্ছে ।
সূর্যমুখী ফুলের বীজ সারি করে বুনতে হয়। সারি থেকে সারির দূরত্ব রাখতে হয় ৫০ সেন্টিমিটার এবং গাছ থেকে গাছের দূরত্ব হয় ২৫ সেন্টিমিটার।
মূলত সারা বছরই করা যায় এ ফুলের চাষ। তবে অগ্রহায়ন মাসই এই ফুল চাষের জন্য উপযুক্ত সময় । উপকারী ফুলে রয়েছে ভিটামিন ই ।
আর ভিটামিন ই এর অনেক কার্যকরী ভূমিকা রয়েছে ।
- ভিটামিন ই এর দুটি উল্লেখযোগ্য কাজ হল মসৃণ মাংসপেশি বৃদ্ধি ও প্রদাহ নিবারণ যা হৃদরোগের ক্ষেত্রে উপকারী ভূমিকা পালন করে।
কারণ প্রদাহ নিবারন ও মাংসপেশির কোষ প্রবৃদ্ধির ফলে রক্তনালী সংকীর্ণ হতে পারে না। ফলে হৃদযন্ত্র ক্ষতিগ্রস্ত হয় না।
- সূর্যমুখীর তেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ভিটামিন ই থাকায় ক্যান্সার প্রতিরোধেও এটি সাহায্য করে।
সূর্যমুখী তেলের উপকারিতা তো জানলাম এবার চলুন এর বীজের উপকারিতা সম্পর্কে কিছু কথা জেনে নেওয়া যাক। সূর্যমুখীর বীজও রয়েছে হাজারগুণ।
- সূর্যমুখীর বীজ সুস্থ হাড় গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ সুস্থতায় ম্যাগনেসিয়াম ও ক্যালসিয়াম দুটোই খুব জরুরী। আর এ দুটি উপাদানই সূর্যমুখীর বীজে পর্যাপ্ত পরিমাণে পাওয়া যায়।
সূর্যমুখী বীজে রয়েছে ভিটামিন বি-৬ যা মাথার স্ক্যাল্পে অক্সিজেন সরবরাহ করে। এতে চুল পড়া কমে যায় এবং নতুন চুল গজাতেও সাহায্য করে। আবার সূর্যমুখীর বীজে প্রচুর ম্যাগনেশিয়াম থাকার কারণে স্নায়ুতন্ত্র সঠিকভাবে কাজ করার ক্ষমতা লাভ করে ।
কারণ ম্যাগনেশিয়াম শরীরের অতিরিক্ত ক্যালসিয়ামের মাত্রা হ্রাস করে ফলে স্নায়ুতন্ত্রের দূর্বলতা অনেক টাই কমে যায় ।
তাছাড়া যা জ্বালাপোড়া গ্যাস্ট্রিক আলসার ইত্যাদি রোগ আছে তারা সূর্যমুখী তেল ব্যবহার করতে পারেন।
কারন এসব রোগ সারাতে সূর্যমুখী কার্যকরী ভূমিকা পালন করে । তাছাড়া দেহের দুর্বলতা কাটাতে ও সূর্যমূখীর উপকারি ভূমিকা পালন করে।
তাই প্রতিদিনকার রান্নায় ব্যবহার করুন উপাদেয় এই সূর্যমুখীর তেল। এতে করে নানা সমস্যা থেকে রেহাই পেতে পারেন।