আপনি স্টুডেন্ট হোন, পেশাজীবী হোন, গৃহিণী হোন বা যাই হোন না কেন নিম্নের অপশনগুলো ট্রাই করে আপনি অনলাইনে উপার্জন করতে পারেন খুব সহজেই। এখানে উল্লেখিত উপায়গুলো ভ্যারিফাইড অর্থাৎ কোন আহামরি বা অলৌকিক কিছু নয় বরং পরিকল্পিতভাবে অর্থ উপার্জনের একেকটি উপায়। একদম নিশ্চিন্ত থেকে আপনি এই মাধ্যমগুলোতে কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
এই মাধ্যমগুলোতে আপনাকে ইনভেস্ট করা লাগবে না। তবে যে জিনিসটি বেশি করতে হবে তা হচ্ছে পরিশ্রম। জি, হ্যাঁ, পরিকল্পিত ও সময় নিয়ে কাজ করে গেলে আপনি এই মাধ্যমগুলো থেকে প্রতিমাসে একটি হ্যান্ডসাম আয় করতে পারবেন।
ব্লগিং
ব্লগিং হতে পারে একটি দারুন মাধ্যম যা করে আপনি বেশ ভালো রকমের উপার্জন করতে পারেন। নিজস্ব একটি ব্লগিং ওয়েবসাইট আপনি খুব সহজেই বানাতে পারেন। ব্লগার ও ওয়ার্ডপ্রেস নামক বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট আছে যেখানে গিয়ে আপনি নিজের একটি ব্লগিং সাইট খুলে ফেলতে পারেন। এই সাইটগুলোতে যত বেশি ব্লগ লিখবেন এবং ব্লগগুলো যতবেশি মানুষ পড়বে তত বেশি হবে আপনার আয়। এখানে উপার্জনটা হয় মূলত অ্যাডভারটাইজমেন্ট থেকে। অ্যাডসেন্স বা অন্যকোন অ্যাডভারটাইজমেন্ট নেটওয়ার্কে জয়েন করে আপনি আপনার এই ব্লগগুলো থেকে রেভিনিউ পেতে পারেন।
ফ্রিলান্সার
ফ্রিলান্সার মানে হচ্ছে আপনি কোন একটি কোম্পানির হয়ে কাজ করছেন না। বরং ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির হয়ে একসাথে ভিন্ন ভিন্ন প্রোজেক্টে কাজ করছেন। এখন প্রশ্ন হতে পারে যে ফ্রিলান্সার কীভাবে হওয়া যায়? এক্ষেত্রে প্রথমেই আপনাকে বের করতে হবে যে আপনার ভিতর কোন এমন স্কিল আছে যা ঐ ভিন্ন ভিন্ন কোম্পানির কাজগুলো করার জন্য দরকারি। ফ্রিলান্সারদের জন্য অনেক ওয়েবসাইট রয়েছে যেখান থেকে এই কাজগুলো আপনি পেতে পারেন। প্রথমেই ঐ ওয়েবসাইটগুলোতে গিয়ে আপনাকে রেজিস্ট্রেশন করে আপনাকে কাজ খুঁজতে হবে এবং এই কাজগুলো করে উপার্জন করতে পারেন প্রয়োজনীয় অর্থ। ফ্রিলান্সারদের জন্য উপযুক্ত ওয়েবসাইটগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছেঃ আপওয়ার্ক, ফিভার, ফ্রিলান্সার ইত্যাদি।
অনলাইন সেলার
আপনি অনলাইন সেলার হয়েও বেশ ভালো রকমের অর্থ উপার্জন করতে পারেন। অনলাইন সেলার হচ্ছে এমন একটি উপায় যেখানে আপনি ই-কমার্স সাইটের হয়ে আপনার পণ্য বিক্রি করতে পারেন। উল্লেখযোগ্য ই-কমার্স সাইট গুলোর মধ্যে রয়েছে – অ্যামাজন, আলীবাবা, ই-বে ইত্যাদি। এই সাইটগুলোতে আপনি আপনার প্রোফাইল খুলে সাইটগুলোর মাধ্যমে আপনার প্রোডাক্ট বিশ্বের যেকোন জায়গায় বিক্রি করতে এবং অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এই মাধ্যমের সবচেয়ে বড় সুবিধা হচ্ছে এখানে আপনি অসংখ্য গ্রাহক পেয়ে যেতে পারেন। ফলে লাভের পরিমাণও বেশি।
ইউটিউব
অর্থ উপার্জনের জন্য ইউটিউব হতে পারে দারুন এক মাধ্যম। বর্তমানে তরুণদের মাঝে ইউটিউবের জনপ্রিয়তা অনেক। ইউটিউবে আপনি আপনার স্কিল ও মেধা অনুযায়ী ভিডিও তৈরি করে আপলোড করতে পারেন। আপনার ভিডিওগুলো মনিটাইজ করে অ্যাড পাওয়ার মাধ্যমে আপনার এই উপার্জন শুরু হবে। ইউটিউবের কিছু শক্ত নিয়ম কানুন রয়েছে যেগুলো মেনে চললেই কেবল আপনি এই মাধ্যম থেকে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। যেমনঃ আপনার ইউটিউব পেজে নুন্যতম ১ হাজার সাবস্ক্রাইভার, ৪ হাজার ঘণ্টা ওয়াচটাইম এবং ১০ হাজার ভিউজ হতে হবে আর্নিং শুরু করবার আগে। তবে আপনার মেধা ও ইউনিক কন্টেন্ট তৈরি করার সক্ষমতা থাকলে এই নিয়মকানুনগুলো কোন বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না।
সেল ফটোস অনলাইন
আপনি প্রফেশনাল ফটোগ্রাফার হয়ে থাকলে বা ছবি তোলা আপনার শখ হলে অনলাইনে আপনার তোলা ফটোগুলো সেল করতে পারেন। কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে যেমনঃ সাটারস্টক, পিক্সাবে ইত্যাদি ওয়েবসাইটে আপনি আপনার তোলা ফটোগুলো বিক্রি করে অর্থ উপার্জন করতে পারবেন। এই সাইটগুলোতে আপনার প্রোফাইল তৈরি করে ফটো এড করতে হবে। আপনার এড করা ফটোগুলো যত বেশি বিক্রি হবে তত উপার্জন করবেন আপনি।
ড্রপশিপিং ব্যবসা
ড্রপশিপিং হচ্ছে এমন এক মাধ্যম যেখানে যেকোন কোম্পানির মালামাল আপনি আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইট থেকে বিক্রি করতে পারবেন। এখানে আপনাকে কোন ইনভেন্টরি রাখবার দরকার হবে না। উদাহরণস্বরপ মনে করেন আপনি জুতা বিক্রি করবেন। এখন এর জন্য শপিফাইয়ে আপনি একটি স্টোর খুলে ফেললেন এবং বড় বড় ফ্যাক্টরি থেকে মাল এক্সপোর্ট করে নিলেন। এখন যত অর্ডারই আসুক, তা কোম্পানিগুলোই দিবে, তবে এর লভ্যাংশের একটা অংশ বা কমিশন আপনিও পাবেন। অর্ডার যত বেশি আসবে আপনার উপার্জনও তত বেশি হবে।
অনলাইন টিচিং
অনলাইন টিচিং বা অনলাইনে পড়িয়েও আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। বেশ কিছু এডুকেশনাল ওয়েবসাইট আপনি পেয়ে যাবেন যেখানে আপনি প্রোফাইল বানিয়ে, আপনার কোর্স লিস্ট করে কিংবা লাইভে শিক্ষার্থীদের পড়িয়ে ইনকাম করতে পারেন।
এফিলিয়েট মার্কেটিং
যে ই-কমার্স ওয়েবসাইটগুলো রয়েছে সেই ওয়েবসাইটগুলোতে এফিলিয়েট পার্টনার হয়ে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনি ঐ ওয়েবসাইটগুলো থেকে এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে যত প্রোডাক্ট সেল করতে পারবেন তত কমিশন মানি পেয়ে যাবেন। আপনাকে এফিলিয়েট মার্কেটার হিসেবে ঐ ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট প্রোডাক্টের লিংক জেনারেট করে আপনার কোন ওয়েবসাইট বা কোন জায়গায় এটি পেস্ট করতে হবে। ঐ প্রোডাক্টের খরিদদার যদি আপনার লিংক থেকে গিয়ে ঐ প্রোডাক্টটি ক্রয় করে তবেই আপনি পেয়ে যাবেন আপনার কমিশন।
ওয়েবসাইট মেকিং এন্ড সেলিং
আপনি যদি ওয়েবসাইট বানাতে পারেন কিংবা ওয়েবসাইট ডিজাইনিং এ পারদর্শী হয়ে থাকেন তবে ফ্রিলান্সার হিসেবে অন্যের ওয়েবসাইট বানিয়ে দিয়ে বা ওয়েবসাইট সেল করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।
অনলাইনে পুরনো প্রোডাক্ট বিক্রি
অনলাইনে পুরনো প্রোডাক্ট বিক্রি করেও আপনি ভালো রকমের অর্থ উপার্জন করতে পারেন। কুয়েকার, ওয়েলেক্স নামক ওয়েবসাইট রয়েছে যেখানে আপনি পুরনো জিনিস বিক্রি করে উপার্জন করতে পারেন। অনেকেই বলতে পারেন যে এটা আবার কেমন উপায়? তবে এটাও এক দারুন উপায় হতে পারে যদি আপনি এখানে ভালো সময় দিতে পারেন।