পৃথিবীর উত্তর ও দক্ষিণ গোলার্ধে বায়ুমণ্ডল ও সৌরবায়ু এর শক্তিযুক্ত কণার (ইলেকট্রন ও প্রোটন) মিথষ্ক্রিয়া দ্বারা সৃষ্ট প্রকৃতির এক অপার সৌন্দর্যের নাম হলো অরোরা। অরোরা এর বহুবচন নাম হলো “অরোরাস” বা “অরোরাল”।
উত্তর গোলার্ধে অরোরাকে “অরোরা বোরিয়ালিস” বা “সুমেরুজ্যোতি”, এবং দক্ষিণ গোলার্ধে অরোরাকে “অরোরা অস্ট্রালিস” বা “কুমেরুজ্যোতি” বলা হয়।
পৃথিবীর ডিম্বাকৃতি অঞ্চলে উচ্চ অক্ষাংশের বেশিরভাগ অঞ্চলজুড়ে এই ধরনের মিথষ্ক্রিয়া সীমাবদ্ধ থাকে। যা পৃথিবীর চৌম্বকীয় মেরুকে ঘিরে থাকে। যে সময় সূর্যের আলোর উপস্থিতি কম থাকে বা পুরোপুরি অনুপস্থিত থাকে সে সময়ে অরোরা মেরুর দিকে স্থানান্তরিত হয়। অরোরাল নির্গমন সাধারণত প্রায় ১০০ কি.মি. বা ৬০ মাইল উচ্চতায় ঘটে। এগুলি পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে ৮০ থেকে ২৫০ কিলোমিটার বা প্রায় ৫০ থেকে ১৫৫ মাইল এর মধ্যে যেকোনো বায়ুমণ্ডলীয় অঞ্চলে ঘটতে পারে।
অরোরা অনেক রূপ ধারণ করে, যার মধ্যে রয়েছে উজ্জ্বল পর্দা, আর্কস, ব্যান্ড এবং প্যাচ। ইউনিফর্ম আর্ক অরোরার সবচেয়ে বেশি স্থিতিশীল রূপ, কখনও কখনও লক্ষণীয় পরিবর্তন ছাড়াই ঘন্টার পর ঘন্টা ধরে থাকে। আর্কস এবং ভাঁজগুলির নীচের প্রান্তগুলি সাধারণত উপরের অংশগুলির তুলনায় অনেক বেশি তীক্ষ্ণভাবে উজ্জ্বল হয়ে থাকে।
সূর্য এবং পৃথিবীর মধ্যে দড়ির মতো চৌম্বকীয় ক্ষেত্র বরাবর ভ্রমণ করতে থাকা শক্তি যুক্ত কণা থেকে অরোরাল শক্তি সংগ্রহ করে এবং সূর্যের আলোর কম উপস্থিতি বা অনুপস্থিতিতে আকর্ষণীয় দৃষ্টিনন্দন এই আলোক বিচ্ছুরণ ঘটায়।
মূলত, ইলেকট্রন এবং অন্যান্য চার্জিত কণা, যা কলোনাল ভর, সৌর শিখা এবং সূর্য থেকে নির্গত অন্যান্য শক্তি যুক্ত কণা সৌর বায়ুর মাধ্যমে সূর্যের বাহিরের দিকে ছড়িয়ে পড়ে, সেগুলোর মধ্য থেকেই কিছু ইলেকট্রন এবং অন্যান্য চার্জিত কণা ভু-চৌম্বকীয় ক্ষেত্র দ্বারা সংগৃহীত হয়ে মেরু অঞ্চলের দিকে পরিচালিত হয়। আলফভ্যান তরঙ্গ, যা ভু-চৌম্বকীয় অঞ্চলের দিন ও রাতের অংশে এবং ম্যাগনেটোটাইল নামক ভু-চৌম্বকীয় অঞ্চলে উৎপন্ন হয়। এই আলফভ্যান তরঙ্গ সূর্য থেকে আগত চার্জিত কণা গুলোকে ঘণ্টায় প্রায় ৭২ মিলিয়ন কি.মি. বা ৪৫ মিলিয়ন মাইল বেগে বিচ্যুত করে বাহিরের দিকে নিক্ষেপ করে, যা বায়ুমণ্ডলে বিদ্যমান অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন পরমাণু গুলোকে আঘাত করে এবং অয়নগুলি উত্তেজিত অবস্থায় ছেড়ে যায়। এই অয়নগুলিই বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যে বিকিরণ নির্গত করে। যা থেকে উৎপন্ন হয় লাল, সবুজ এবং সবুজাভ নীল রঙের অরোরাল।
সাধারণত নরওয়ে অরোরার জন্য বিখ্যাত হলেও কানাডা, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, গ্রীনল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, উত্তর রাশিয়া, তাসমানিয়া এবং অ্যান্টার্কটিকায়ও অরোরার দেখা মেলে। পৃথিবী ছাড়াও আমাদের সৌরজগতের আরো কয়েকটি গ্রহে অরোরার মতো চৌম্বক ক্ষেত্র রয়েছে। যেমন, বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুন। এছাড়াও বৃহস্পতির চাঁদেও অরোরাল দেখা গেছে।
darun
Thank you!
ভাল লিখেছেন
Wow
Thanks!
Thank you, Rahbir Al Farabi.
অত্যন্ত চমৎকার একটি টপিকের উপর অসাধারণ লেখনি। ধন্যবাদ, আপনাকে। ধন্যবাদ গ্রাথোরকে।
Thank you mrahmantcr
পোস্ট টা ভাল ছিল…ধন্যবাদ
Basharath Ullah Ahmad, thank you!
সুন্দর
Nice.
nc
good
Wow
ভালো লাগলো কথাগুলো।
ভালো লাগছে