Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

অসমাপ্ত ভালোবাসা ছোট গল্প

স্নাতক শেষ বর্ষের শেষ ভাইভা পরীক্ষা শেষ। রুবেল ও আনিকা কলেজ ক্যাম্পাসে বট তলায় দীঘির পাড়ে বসে  আছে।আজ তাদের শেষ দেখা।
রুবেল,আমার বাবা কিছুতেই রাজি হচ্ছেন না তোমার সাথে বিয়ে দিতে।তুমি আমাকে ভুলে যাও।

-বাংলা সিনেমার ডায়ালগ দিও না।তুমি থাকতে চাও না,সেটা বলো।

-তুমি আমাকে ভুল বুঝতেছ।আমার কিছু করার নেই।

-আর দশটা প্রেমের বিচ্ছেদের কথা ও এইভাবে শুরু হয়।

-তোমাকে বোঝাতে পারছিনা,ভালো থেকো।

আনিকা উঠে চলে যাচ্ছে।রুবেল তাকিয়ে আছে।আর ভাবছে।কতটা মধুময় ছিলো সেই সময় গুলো। আনিকা ও কতটা মিষ্টি ছিলো। কতটা পাগল-ই না ছিলো সে তার প্রেমে।প্রথম  প্রনয়ের সময় সে বাচ্চাদের মত করে কেদেঁছিল। আর বলেছিল

-আমার তো তোমাকে দেওয়ার মতো আর কিছু নেই।শেষ সম্বল টুকু ও তোমাকে দিয়ে দিলাম।কখনো ছেড়ে যাবে নাতো!বিশ্বাস করো মরে যাবো।

-কখনো যাবো না।কখনো না।ভরসা করো আমায়।

কখনো মনে হয় নি আনিকা এমন টা করতে পারে।

একদিন হয়েছিল কি!একদিন রাতের তিনটা র সময় আনিকার ফোন।রুবেল ফোন ধরতেই সে কি কান্না।অনকবার জিজ্ঞেস করার পর আনিকা বুললো রুবেল কে নিয়ে খারাপ  স্বপ্ন দেখেছে।তাই কাঁদছে।

-আমি তোমাকে কখনো হারাতে পারবো না রুবেল।

আমি ও না।কখনও না।মরে গেলেও  না।

সারাদিন কলেজ ক্যাম্পাসে কাটিয়েছে রুবেল।কতশত স্মৃতি সারাক্ষণ তাকে ভাবিয়েছে। বাড়ি ফিরেছে সন্ধ্যায়। খুব বিষণ্ন হয়ে পরেছে সে।

প্রায় দু’মাস পর

আজ আনিকার বিয়ে,রুবেল কিছুতেই নিজেকে স্থির রাখতে পারছেনা। কি করবে বা করা উচিৎ সে ভেবে পাচ্ছে না।

-আমি মরে যাবো। আমার পক্ষে আর সহ্য করা সম্ভব নয়।

-পাগলামি করিশ না রুবেল।নিজেকে সামলা।যে চলে গেছে সে কখনো ভালোবাসেই নি তোকে।

-নারে সুমন দোস্ত, এত সহজ না।

-অবশ্যই সম্ভব।চল তুই আমার সাথে। আজকে তোকে ছাড়ছি না।সারাদিন আমার সাথে থাকবি।

সেই দিন সুমন আর রুবেল একসাথে থেকেছে। সুমন রুবেলকে নানান কায়দায় শান্ত রেখেছে।রাতভর পাগলের মত কেঁদেছে ছেলেটা।

বছর খানেক পর,

সকালে রুবেল পত্রিকা পড়ছিল।সে এখন নিজেকে অনেকটা -ই সামলে নিয়েছে। বাস্তবতা কে মেনে নিয়েছে।যা-হোক পত্রিকায় চোখ বুলাতে বুলাতে হঠাৎ চক্ষু চড়কগাছ! নিজের স্বামী কে হত্যার দায়ে গ্রেফতার হয়েছেন এক নারী।আর সে নারী আর কেউ নয়।তার আনিকা!

ও মাই গড।আনিকা এটা কি করে সম্ভব!

সারাদিন নিউজ নিয়ে ভাবতে ভাবতেই কাটিয়ে দিলো রুবেল।বিকেলে সুমনের সাথে দেখা করে ঘটনা খুলে বললো।

সুমন আমার কেন জানি  বিশ্বাস হচ্ছে না।

-আমার হইতেছে।যে মাইয়া লোভে পড়ে অন্য কাউরে বিয়ে করতে পারে সে সব পারে।ভালো হইছে তোরে ছাড়ছে।

-নারে সুমন দোস্ত, খটকা লাগতেছে।একবার দেখা করা দরকার।

-আরে তোর  মাথা খারাপ নাকি?পরে ফাঁইস্যা যাবি।কাহিনী হবে প্রেমিকের জন্য জামাই খুন!

রুবেলের  মন মানলো না।পরদিন সে সুমনকে না জানিয়ে কেন্দ্রীয় কারাগারে চলে গেলো আনিকার সাথে দেখা করতে।আনিকা রুবেল কে দেখার পর চিৎকার করে বলতে লাগলো আমি খুন করি নি।আমি খুন করি নি।রুবেলের বুকটা ফেটে যাচ্ছিলো। ইচ্ছে করছিল আনিকাকে গিয়ে জড়িয়ে ধরতে।সেদিন রুবেল র কিছু বললো না।চলে গেল।

সারারাত রুবেলের ঘুম হলো না।আনিকাকে নিয়ে ভাবতে ভাবতেই কেটে গেলো। সকালে রুবেল গেলো আনিকাদের বাসায় গেলো। সেখানে গিয়ে সে যা শুনলো তার জন্য সে বিন্দুমাত্র প্রস্তুত ছিল না।

আনিকা কে আজ মানসিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হবে।ওইখানে ই থাকবে সে।আনিকা সত্যিই তার স্বামী কে মেরেছে। কিন্তু সে কখনো বলছে সে মেরেছে,আর কখনো বলছে সে খুন করেনি।সে আসলে মাল্টিপল পার্সোনালিটি ডিসঅর্ডার  (DID) তে আক্রান্ত।

আনিকাকে রুবেল শেষ বারের মতো দেখেছিল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়।মেয়েটি চোখের নিচে কালি পরে গিয়েছে। খুবই মলিন চেহারা। তবুও কতটা মায়াবী লাগছে।মেয়েটি মুহুর্তে হাসছে,মুহূর্তে ই ভয়ে জড়োসড়ো হয়ে যাচ্ছে। খুব মায়া হচ্ছিল দেখে।

রুবেল প্রায় ই হাসপাতালে যায় দেখতে।সে যে এখনো ভালোবাসে আনিকাকে।অপেক্ষায় আছে যদি কনোদিন সুস্থ হয়ে ফিরে আসে রুবেলের জীবনে।

Related Posts

6 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No