আর্থিক সফলতার চাবি কাঠি

ফল হতে হলে কষ্ট করতে হবে এ কথাটা কিন্তু একেবারে সত্য না । ধরুন এখন আপনি সফল হওয়ার জন্য সারাদিন মাটি কাটলেন তাহলে কি সফল হতে পারবেন ? কিন্তু এখানে কথা একটা আছে যে আপনি কষ্ট করেন ঠিক আছে কিন্তু সেটা জাইগা মত । একটা সত্য কথা কি মানুষ ভাবে টাকা কামানো অনেক কঠিন তাই আমি সফল হতে পারছি না । কিন্তু আমি বলি না টাকা কামানো কঠিন না কঠিন হলো টাকা জমিয়ে রাখা । সবাই টাকা কামাতে পারে কিন্তু কয়জন পারে সেই টাকা জমিয়ে কিছু একটা করতে । আমি বলবো টাকা কামানোর পাশাপাশি টাকা জমানোর কৌশলটাও শিখে নিন তাহলেই দেখবেন সফল হতে আপনার বেসি দেরি লাগবে না । আরেক কথা হলো বিলাশিতা আমরা অল্প কিছু বারতি টাকা ইনকামের সোর্স পেলেই সেটা দিয়ে বারতি ব্যয় করতে থাকি আর সেটা হলো আমাদের সফলতার পথের সবচেয়ে বড় কাটা । বিলাশিতা ত্যাগ যতদিন পর্যন্ত না করবেন ততদিন আপনি সফল হতে পারবেন না ।

তারপর আছে অপচয় আমরা অনেকে অপচয় করি কিন্তু সেটা পরিমানে অনেক কম বলে হিসাবে ধরি না । কিন্তু এদিকে ঐ অল্প অপচয়টাই যে আস্তে আস্তে করে অনেক বড় হয়ে যায় সেদিকে আমরা খেয়ার করি না । আর এই ছোট ছোট অপচয়ের মাঝে পরে তেল, সাবান, গুড়া সাবান, বডিস্প্রে, ইলিক্ট্রিসিটি , টিভি ফ্যান, ইত্যাদি । আমরা যেখানে একটা সাবানের ১ ঘষাতেই কাজ হয় সেখানে আমরা পারলে আরও ২-১ টা ঘষা বেশি দেই – হা হা এটা উদাহরন সরুপ বললাম । মোট কথা আমাদের জীবলে সফল হতে হলে এমন ভাবে চলতে হবে যেন আমরা কোন জিকিস প্রোয়জনের চেয়ে বেশি ব্যবহার না করি । এটা মেনে চললেই দেখবেন সফলতা আমাদের জীবনে নিজে থেকেই ধরা দিতে আসবে ।
আবার অনেকেই আছি যে শুধু অন্যদের কে দেখানোর জন্য আমরা আমাদের অন্য ভাবে সাজাতে পছন্দ করি এটা কিন্তু একটা বদ অভ্যাস এটাও সফলতার কাটা বলে আমি মনে করি । কেন ভাই অন্যের চোখে ভাল দেখানোর জন্য আমি নিজেকে সার্কাসের জোকারের মত সাজাবো । আমার যতটুক সামর্থ আমি ততটুকুই করবো এতে করে কে আমাকে কি বল্লো তা দেখার সময় আমার নেই । যখন আমরা আমাদের এই সব উটভব স্বভাব গুলোর পরিবর্তন করতে পারব তখনি বুঝব সফলতা আমাদের অতি সন্নিকটে ।

ছোট একটা গল্প বলি এটা আমার জীবন থেকে নেয়া যখন আমার বয়স ১৫-১৬ তখন আমার বন্ধুরা আমাকে অনেক মানতো কিন্তু দেখা যেত তারা আমার চাইতে অনেক ভাল পোশাক আশাক পরতো । এই যেমন আমি যেখানে লুঙ্গি পরে যেতাম সেখানে তারা ভালো সার্ট প্যান্ট পরে যেত আর আমি যেখানে ভালো সার্ট প্যান্ট পরে যেতাম সেখানে তারা পায়ে দামি জুতো হাতে ঘড়ি মাথায় ক্যাপ চোখে সানগ্লাস । কিন্তু যে যাই পরুক না কেনো সবাই কিন্তু আমার কথার একটা মর্যাদা দিত । সেটা কিসের জন্য জানেন তখন আমার কাছে সবসময় টাকা থাকত । আমাকে আমার বাবা শার্ট কেনার জন্য ৫০০ টাকা দিলে আমি ৩০০ টাকার গেঙ্গি কিনে বাকি ২০০ টাকা নিজের কাছে রেখে দিতাম বাবা জিজ্ঞেস করলে বলতাম এটা আমার হাত খরচের জন্য রেখে দিয়েছি এতে করে বাবাও খুশি হতেন । আর অন্য বন্ধুরা দুকানে গিয়ে কোনটা নতুন স্টাইল কনটা নতুন এসেছে সেটা দেখে কিনত । এতে করে তাদের টাকাও বেশি লাগতো ফলে তাদের হাতে টাকা থাকা তো দুরের কথা পারলে আরও হাত খরচের টাকা থেকে কিছু যোগ করতো । আমার হাতে বারতি কিছু টাকা হলে বাজার থেকে হাস মুরগি কিনতাম কিন্তু ওরা টাকা পেলে বাজারে গিয়ে এমপিথ্রি, নতুন ছবির সিডি কিনতো আবার স্কুলে যখন কেও দামি কলম কিনে আমাকে দেখাতো এই দেখ আমার দামি কলম তখন তার কলমের দাম জিজ্ঞেস করে আমি তাকে সেই পরিমানের চাইতে বেশি টাকা দেখিয়ে বলতাম এই দেখ আমি ইচ্ছা করলেই কিন্তু এখনি এরকম কলম কিনতে পারি তুই কিন্তু ইচ্ছে করলেই আমার মত টাকা দেখাতে পারবি না । এতে করে সে নিজেই লজ্জা পেয়ে যেতো । কিন্তু আমরা সবাই মিলে যখন কোন প্রোগ্রাম করতাম এই যেমন কোন একটা পার্টি বা সবাই মিলে কোথাও ঘুরতে যাওয়া তখন কিন্তু সবার চাইতে আমার খরচটাই বেশি হত । আমি যে এত কিছু করতাম এতে করে কেও কিন্তু আমাকে কৃপন বলতো না । বরং আমার বন্ধুদেরকেই আমি সবসময় ফকিরনী বলে গালি দিতাম । কেনোনা আমি কিন্তু কৃপন গিরি করতাম না কারও সাথে । আমি শুধু বিলাশী জীবন থেকে একটু দূরে থাকতাম । আমি সবসময় ভাবতাম আমার যেটুকু প্রোয়জন আমি সেটুকুই করবো এতে করে আমারি ভাল ।

তো আমার কথা হলো , আপনি যদি আর্থিক ভাবে সফল হতে চান তাহলে
বিলাসিতা ত্যাগ করুন, টাকা যাই কামান না কেন সেখান থেকে সঞ্চয় করতে শিখুন, সাধারন ভাবে চলার চেষ্টা করুন , ছোট ছোট অপচয় করা বন্ধ করুন , প্রতি মাসে খরচের মুটামুটি একটা হিসাব রাখার চেষ্টা করুন তাহলেই দেখবেন আপনি আর্থিক ভাবে স্বচ্ছল হয়ে উঠেছেন ।

Related Posts