শ্রীলঙ্কা বনাম ইংল্যান্ড টেস্ট চলছে শ্রীলঙ্কার মাটিতে। সেখানে ১৬৮ রান করে দ্বিতীয় দিন শেষে অপরাজিত ছিলেন জো রুট। প্রথম ইনিংসে শ্রীলঙ্কা ১৩৫ রানে অলআউট হবার পর দ্বিতীয় দিনে বৃষ্টির কারণে খেলা আগেই শেষ হয়ে যায়। তখন ইংল্যান্ডের স্কোর ছিলো- ৯৪ ওভারে ৩২০ রান এবং চারটি উইকেট হারিয়েছে তারা।
স্কোরের হিসেবে বেয়ারস্ট্রো ৪৭ এবং লরেন্স ৭৩ রান করেন। কিন্তু রুটের একার রানই শ্রীলঙ্কার দলীয় সংগ্রহের চেয়ে বেশি। ইনিংসের শুরুতে শ্রীলঙ্কা হিমশিম খেলেও বেশ সাবলীলভাবেই খেলছিলেন ইংল্যান্ড দলের খেলোয়াড়েরা। এর মধ্যে ১৩১ রান দিয়ে চারটির মধ্যে তিনটি উইকেট নিয়েছেন শ্রীলঙ্কার এম্বুলদেনিয়া।
রুটের পারফর্মেন্স নিঃসন্দেহে ভালো ছিলো কিন্তু এটা শিরোনাম হবার আরেকটা কারণ আছে। এমনিতে টেস্টে নিয়মিত দল ইংল্যান্ড। এশিয়ার দেশগুলোর চেয়ে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলো টেস্ট বেশি খেলে এবং তুলনামূলক বেশি অভিজ্ঞ আর দক্ষ হয়। কিন্তু গতবছর একটিও সেন্ঞ্চুরি পাননি রুট!এই প্রথমবার পুরো একবছর টেস্টে একটিও সেন্ঞ্চুরির দেখা পাননি তিনি। বিষয়টি হতাশাজনক বটে। সেই হিসেবে এই বছরের প্রথমেই এরকম রানের সংগ্রহ অবশ্যই তাকে আত্মবিশ্বাস যোগাবে। এখন শ্রীলঙ্কার চেয়ে ১৮৫ রান এগিয়ে আছে রুটের দল।
এই দিয়ে টেস্টে ১৮ তম সেন্ঞ্চুরি পেলেন রুট এবং টেস্টেই ১৫০ ছাড়ানো ব্যক্তিগত অষ্টম ইনিংস তার। দিন শেষে তখনো উইকেটে অপরাজিত ছিলেন তিনি। এছাড়া শ্রীলঙ্কার মাটিতে ইংলিশ খেলোয়াড় হিসেবে তার ইনিংস সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত রানের রেকর্ড করেছে। এর আগে ২০১২ সলে কেভিন পিটারসনের ১৫১ রানের ইনিংসটি এই রেকর্ড দখল করে ছিলো। আট বছর পর রুট নতুন করে শ্রীলঙ্কার মাটিতে ইতিহাস গড়লেন।
এই ইনিংসে তাকে যোগ্য সঙ্গ দিয়েছেন এই টেস্টেই অভিষেক ম্যাচ খেলা ড্যান লরেন্স। চতুর্থ উইকেটে দুজনে মিলে ৪৩.১ ওভারে করেছেন ১৭৩ রান। এছাড়া এটাই শ্রীলঙ্কার মাটিতে ইংলিশদের সর্বোচ্চ রানের জুটি হিসেবে রেকর্ড গড়েছে। ২৫৪ বলের ইনিংসে রুট ১২টি চার মেরেছেন এবং ৭২ টি একক রান নিয়েছেন কিন্তু একটাও ছক্কা মারেননি। কিন্তু লরেন্স তার ৭৩ রানের ইনিংসে ৬টি চার এবং একটি ছয় মেরেছেন। অনেকেই বলছে- রুট একটি নিখুঁত ইনিংস খেলেছে। কারণ টেস্ট ক্রিকেটে স্কোর করার চেয়ে উইকেটে টিকে থাকাটা বেশি জরুরী। একটা প্রচলিত কথা আছে- টেস্টের মাঠে টিকে থাকলে রান হবেই।
যদিও খেলাটা হচ্ছে শ্রীলঙ্কার মাঠে এবং শ্রীলঙ্কাকেই এখানে ফেভারিট মনে করা হচ্ছিলো। কিন্তু টেস্টে অভিজ্ঞ ইংল্যান্ড দলের সামনে তাদের অবস্থা বেশ শোচনীয় মনে হয়েছে। তবে রুটের পারফর্মেন্স অবশ্যই প্রশংসার দাবিদার। আর যে ম্যাচ একাধিক ইতিহাস গড়েছে সেই ম্যাচ স্মরণীয় হয়ে থাকবে এটাই স্বাভাবিক।
দেখা যাক, বাকি তিন দিনে ম্যাচের কোনো মোড় ঘোরে কিনা। এছাড়া বৃষ্টির আগমনেরও সম্ভাবনা আছে। আজ এই পর্যন্তই। সবাই ভালো থাকবেন। লেখাটি পড়ার জন্যে অসংখ্য ধন্যবাদ।