ইমেইল মার্কেটিং কি? কিভাবে করবেন ইমেইল মার্কেটিং? 

ইমেইল মার্কেটিং হলো বর্তমানে ডিজিটাল মার্কেটিং করার সবচেয়ে জনপ্রিয় এবং কার্যকর উপায়। বর্তমান যুগ হলো তথ্য-প্রযুক্তির যুগ। আর এই তথ্য প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে মানুষ এখন ডিজিটাল মার্কেটিং করতেই বেশি আগ্রহবোধ করে।

মার্কেটিংয়ের মূল লক্ষ্যই হলো প্রচার করা। কথায় আছেনা, প্রচারেই প্রসার?  আর এই প্রচারের কাজটা যতো ভালোভাবে করা যায় ব্যবসায় উন্নয়নও ততোই বাড়ে।

তাই বর্তমানে অনেক অনেক সফল ব্যবসায়ীরা এই ইমেইল মার্কেটিংয়ের শরণাপন্ন হচ্ছেন।  এই ইমেইল মার্কেটিং করে খুব সহজেই ব্যবসায়ীরা নিজেদের কাঙ্ক্ষিত গ্রাহক বা কাস্টমার পেয়ে যান।

এমন অনেক মানুষ আছেন যারা এই Email marketing  করে লাখ লাখ টাকা আয় করছেন ঘরে বসেই। এই Email marketing করে অনেক ব্যবসায়ী তাঁদের নিজেদের পণ্যকে খুব সহজেই মানুষের কাছে পৌঁছে দিচ্ছেন।

আপনিও কি ইমেইল মার্কেটিং করতে ইচ্ছুক? কিন্তু জানেন না কিভাবে করবেন এই ইমেইল মার্কেটিং? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্যই।

আমরা এই আর্টিকেলে ইমেইল মার্কেটিং কী? ইমেইল মার্কেটিং কিভাবে করবেন? ইমেইল মার্কেটিং কেন করবেন? ইমেইল মার্কেটিং করার নিয়ম, ইত্যাদি  নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করবো। তাহলে চলুন আর দেরি না করে মূল বিষয়ে চলে যাওয়া যাক।

<

ইমেইল মার্কেটিং কি? ( What Is Email Marketing In Bangla) 

Email marketing কি? এ বিষয়ে জানার আগে আপনাকে বুঝতে হবে, মার্কেটিং কি?

মার্কেটিং (marketing)  বলতে বুঝায় কোনো business,  ব্র্যান্ড,  পণ্য (product)  কিংবা সার্ভিসকে বিজ্ঞাপন কিংবা যেকোনো উপায়ে প্রচার কিংবা প্রমোট করে মানুষের কাছে ঐ পণ্য কিংবা সার্ভিস বিক্রি করা।

অর্থাৎ  কোনো পণ্য কিংবা সার্ভিসকে যখন প্রচারের মাধ্যমে  মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়  তাকেই মার্কেটিং বলে।

এই মার্কেটিংয়ের কাজটা বিভিন্ন ভাবে করা যায়।  সেটা হতে পারে টিভি, রেডিও কিংবা সংবাদপত্রে বিজ্ঞাপন দেওয়ার মাধ্যমে কিংবা অনলাইনকে কাজে লাগিয়ে।

এখন এই মার্কেটিংয়ের কাজটা যদি ইমেইলের মাধ্যমে করা হয় তখন থাকে ইমেইল মার্কেটিং বলে। অর্থাৎ ইমেইলের মাধ্যমে যখন কোনো businesses,  brand,  প্রোডাক্ট কিংবা সার্ভিসকে প্রমোট করা হয়, তখন থাকে ইমেইল মার্কেটিং বলে। 

এই Email marketing  ডিজিটাল মার্কেটিংয়েরই একটা অংশ। এটি digital marketing  করার একটি জনপ্রিয় উপায়।  বর্তমানে সফল ব্যবসায়ীদের প্রথম পছন্দই এই ইমেইল মার্কেটিং। 

ইমেইল মার্কেটিং কত প্রকার ও কী কী?

Email marketing  কে অনেক ভাগে ভাগ করা হয়েছে।  তবে কাস্টমারদের উপর ভিত্তি করে  এই ইমেইল মার্কেটিংকে মূলত ২ ভাগে ভাগ করা হয়েছে।

১. ট্রান্সেকশনাল ইমেইল মার্কেটিং 

এই email marketing  এ পুরাতন কাস্টমারদের টার্গেট করে মার্কেটিং করা হয়। অর্থাৎ এমন কাস্টমার বা গ্রাহক যারা পূর্বেই আপনার কোনো পণ্য বা সেবা ক্রয় করেছে।

এক্ষেত্রে নিয়মিত গ্রাহক যারা প্রতিনিয়ত আপনার থেকে পন্য কিনছে। কিংবা এমন গ্রাহক যারা একবার হলেও কিছু কিনেছে। এমন গ্রাহকদের আলাদা লিস্ট করে তাঁদের কাছে ইমেইল মার্কেটিং করা হয়ে থাকে।

আর ইমেইল মার্কেটিংয়ের এই প্রক্রিয়াকেই বলা হয় ট্রান্সেকশনাল ইমেইল মার্কেটিং। 

২. ডাইরেক্ট ইমেইল মার্কেটিং 

এই মার্কেটিংকে অনেক সময় প্রমোশনাল মার্কেটিংও বলা হয়। এই মার্কেটিং প্রক্রিয়ায় নতুন গ্রাহকদের টার্গেট করা হয়। অর্থাৎ নিজের বিজনেস বা ব্যবসায়ে নতুন কাস্টমার যোগ করতেই এই মার্কেটিং করা হয়ে থাকে।

এর মূল লক্ষ্য হলো বিজনেস বা পণ্যের বিক্রি বাড়ানো। তবে এই মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে প্রচুর রিসার্চ এবং অ্যানালাইসিসের প্রয়োজন পরে।

ইমেইল মার্কেটিং কেন করবেন?

বর্তমানে ব্যবসায়ীরা গতানুগতিক মার্কেটিংয়ের চেয়ে ডিজিটাল মার্কেটিং করতেই বেশি আগ্রহী।  আর এই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অনেকগুলো উপায় রয়েছে।  ইমেইল মার্কেটিং, ভিডিও মার্কেটিং, সোশ্যাল মিডিয়া মার্কেটিং,  কন্টেন্ট মার্কেটিং ইত্যাদি এই ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের কয়েকটি জনপ্রিয় উপায়।

তো ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের এতোসব উপায় রেখে আপনি কেন’ই বা ইমেইল মার্কেটিংকে বেছে নিতে যাবেন?  আচ্ছা চলুন এই Email marketing  কে বেছে নেওয়ার কিছু কারণ জেনে নেওয়া যাক;

ইমেইল মার্কেটিং এর লাভ

  • আচ্ছা বলুন তো, বর্তমানে এমন কোনো মানুষ আছে কি, যার একটি ইমেইল নেই? উত্তরটা অবশ্যই না। বর্তমানে প্রায় সব মানুষেরই নিজের এক বা একাধিক ইমেইল এড্রেস রয়েছে। তো বুঝতেই পারছেন, এই ইমেইলের মাধ্যমে সবচেয়ে বেশি সংখ্যক গ্রাহক পেয়ে যাবেন আপনি।
  • খুব সহজেই হাজার হাজার ট্রাফিক বা ভিজিটর নিয়ে আসতে পারবেন নিজের ওয়েবসাইট বা ব্লগের জন্য। 
  • ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের অন্য সব উপায়গুলোর চেয়ে এই ইমেইল মার্কেটিং সবচেয়ে সস্তা।  এবং এমন কিছু ফ্রি ইমেইল টুলস রয়েছে যা দিয়ে আপনি ফ্রিতেও এই মার্কেটিংয়ের কাজ চালিয়ে নিতে পারবেন।
  • ইমেইল মার্কেটিংয়ে কেবলমাত্র একটি ইমেইল পাঠিয়েই নিজের ওয়েবসাইট / ব্লগ, ভিডিও,  business  কে মানুষের কাছে প্রমোট বা প্রচার করতে পারবেন। 
  • ছোট-বড় কিংবা মাঝারি যেকোনো ব্যবসার ক্ষেত্রেই এই Email marketing  উপযুক্ত। 
  • ই-মেইলের মাধ্যমে টার্গেট কাস্টমার বা নির্দিষ্ট গ্রাহকদের খুঁজে পাওয়া যায়।
  • ইমেইল মার্কেটিং এতোটাই সহজ যে, যেকেউ চাইলেই এটি করতে পারবে।
  • ইমেইলের মাধ্যমে গ্রাহকদের সর্বক্ষণ আপডেট দেওয়ার মাধ্যমে গ্রাহকদের ধরে রাখা যায়।

এতোসব উপকারী দিক থাকার পরও আপনি যদি জিজ্ঞেস করেন, ইমেইল মার্কেটিং কেন করবো? তাহলে আমি বলবো এই email marketing  আপনার জন্য নয়।

ইমেইল মার্কেটিং করতে কী কী লাগবে?

আপনাকে email marketing  করতে হলে অবশ্যই কিছু জিনিস জেনে রাখতে হবে। ইমেইল মার্কেটিং করতে হলে আপনার কী কী প্রয়োজন পরবে?  চলুন জেনে নেওয়া যাক সে সম্পর্কে ;

১. ইমেইল লিস্ট তৈরি করুন

আপনাকে ইমেইল মার্কেটিং করতে হলে শুরুতেই ইমেইল লিস্ট তৈরি করে নিতে হবে। এই ইমেইল লিস্টটা আবার কী? এই ইমেইল লিস্ট টা হলো এমন একটা লিস্ট যেখানে আপনি আপনার টার্গেট কাস্টমারদের ইমেইল এড্রেস দিয়ে সাজিয়ে নিবেন।

অর্থাৎ আপনি আপনার মার্কেটিংয়ের ক্ষেত্রে কাদেরকে ইমেইল পাঠাবেন কিংবা পাঠাতে চান? তাঁদের একটা তালিকা করে নিন। এরপর তাঁদের ইমেইল কন্টাক্টে যুক্ত করে নিন।

২. টেমপ্লেট নির্বাচন করুন

আচ্ছা একটা কথা বলুন তো, আপনি ইমেইল মার্কেটিং কেন করছেন? নিশ্চয়ই কাস্টমার বা গ্রাহকদের নিজের বিজনেস, পণ্য কিংবা সার্ভিসের প্রতি আকৃষ্ট করতে, তাই তো?

যেহেতু মার্কেটিংয়ের মূল লক্ষ্যই হলো গ্রাহকদের নিজের বিজনেস কিংবা পণ্যের প্রতি আকৃষ্ট করা, তাই একজন গ্রাহকের কাছে যেনো তেনো ভাবে ইমেইল পাঠালেই তো হবে না। কি বলেন?

আর কাস্টমারের কাছে এই ইমেইল মার্কেটিং করতে টেমপ্লেট খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। যে বিষয়ে ইমেইল লিখবেন সেটির টেম্পলেট যতো বেশি সুন্দর ও আকর্ষণীয় হবে,  কাস্টমাররা ততো বেশি আপনার পণ্য কিংবা সার্ভিসের প্রতি আকৃষ্ট হবে।

তাই একজন গ্রাহকের কাছে নিজের বিজনেস বা পণ্যকে লোভনীয় বা আকর্ষণীয় করে তুলতে আপনকে অবশ্যই টেম্পলেটের উপর জোর দিতে হবে।

এখন আপনার মনে হয়তো প্রশ্ন আসছে, এই টেম্পলেটটা আবার কী করে বানাবো? চিন্তার কিছু নেই।  আপনি অনলাইনে সহজেই টেম্পলেট বানিয়ে নিতে পারবেন। এছাড়াও হালকা ফটো এডিটিং সফটওয়্যার যেমন; ফটোশপ,  গিম্প কিংবা ইঙ্কস্কেপ ব্যবহার করেও টেম্পলেট বানিয়ে নিতে পারবেন।

তবে টেম্পলেট বানাতে আপনাকে একটু চালাক হতে হবে। এমন টেম্পলেট বানাবেন যা বার বার ব্যবহার করা যায়। এতে করে আপনার সময় ও শ্রম দুটোই বেঁচে যাবে।

৩. লোভনীয় মেসেজ লেখার চেষ্টা করুন

আপনার ইমেইল মার্কেটিংয়ের মূল আকর্ষণের জায়গাই এখানে। একজন কাস্টমার আপনার ইমেইলটি পড়েই আপনার পণ্য সম্পর্কে জানবে।

আপনি যতো লোভনীয়ভাবে আপনার মেসেজটি লিখতে পারবেন, আপনার কাস্টমারও আপনার বিজনেস বা পণ্যের দিকে বেশি আকৃষ্ট হবে।

আপনার পণ্যটি গ্রাহক কেনো কিনবে? বাজারে এতো এতো পণ্য রেখে আপনার পণ্যটিই কেনো একজন কাস্টমার কিনতে যাবে? খুব সুন্দরভাবে এই পয়েন্টগুলো আপনার মেসেজে তুলে ধরুন।

লেখার ক্ষেত্রে আপনি তিনটি কৌশল অনুসরণ করতে পারেন। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিষয়গুলো ;

  •  আপনি কি অফার করছেন? অর্থাৎ আপনার বিজনেস বা পণ্যে কি অফার রয়েছে?  সেটি হেডলাইনে লিখুন।
  • আপনার বিজনেস বা পণ্যটি থেকে কাস্টমাররা কিভাবে উপকৃত হবেন? সেটি তুলে ধরুন মেসেজ বডিতে।
  • রিডার বা গ্রাহকদের ইমেইল পড়ার পর কি করা উচিত? কিংবা কিভাবে আপনার সার্ভিসটি একজন গ্রাহক গ্রহণ করতে পারবেন?  সেটি জানিয়ে দিন- কল টু অ্যাকশন।

আপনি উপরের নিয়মে মেসেজ লিখলে খুব সহজেই গ্রাহকদের সন্তুষ্টি অর্জন করতে পারবেন। এই নিয়মে আপনি ভালোমানের লোভনীয় একটি ইমেইল লিখে ফেলতে পারবেন। 

৪. উপযুক্ত সময়ে ইমেইল পাঠান

আপনি হয়তো ভাবছেন, ইমেইল পাঠানোর আবার সময়-অসময় আছে নাকি? কি যে বলেন! জি আমি একদম ঠিক বলেছি। আপনার ইমেইল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সঠিক সময় বাছাই করে ইমেইল পাঠানোটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়।

আপনি মনে করুন, খুব সুন্দর করে একটি হেডলাইন দিয়ে মেসেজ বডি লিখলেন এবং কল টু অ্যাকশন ও দিলেন। এরপরই মাঝরাতে আপনি আপনার লেখা আকর্ষণীয় ইমেইলটি মানুষের ইমেইলে পাঠিয়ে দিলেন।

ব্যস আপনি ভাবতেছেন আপনার কাজ শেষ। জি না, এমনটা একদমই ভাব্বেন না। আপনি এতো পরিশ্রম করে সব নিয়ম মেনে একটি ইমেইল লিখে ফেললেন। সেটা আবার গ্রাহকদের কাছে পাঠিয়েও দিলেন।

এরপরও আপনার এতো চেষ্টা বিফলে গেলো। কেনো বলুন তো? ঐ যে বললাম, সময়! আপনি সঠিক সময়ে ইমেইল না পাঠানোর জন্য আপনার এতো কষ্টের কোনো মূল্যই থাকলো না।

মাঝরাতে প্রায় সব মানুষই ঘুমে থাকেন। কিংবা এই সময়টাতে কেউ খুব একটা ইমেইল চেক করতেও যান না। তাই আপনার ইমেইলটি বৃথায় গেলো।

এখন বুঝলেন তো, আপনার ইমেইল মার্কেটিং এর ক্ষেত্রে সঠিক সময় কতোটা গুরুত্বপূর্ণ?  আপনি এখন বলতে পারেন, তাহলে কোন সময়টা উপযুক্ত? 

এক্ষেত্রে আমি বলবো, অফিসের টাইম কিংবা সন্ধ্যার সময়টা যখন প্রায় মানুষই অনলাইন এক্টিভ থাকে, এই সময়গুলো হতে পারে ইমেইল মার্কেটিংয়ের উপযুক্ত সময়।

ইমেইল মার্কেটিং কিভাবে করবেন?

Email marketing কে ক্যারিয়ার হিসেবে নিতে চান? কিংবা একজন ইমেইল মার্কেটার কিভাবে ইমেইল মার্কেটিং শুরু করতে পারে? প্রশ্ন আসছে মাথায়?

তাহলে আমি আপনাদের সুবিধার্থে এমন কয়েকটি বিষয় তুলে ধরবো যেগুলো মেনে চললে আপনি একজন সফল ইমেইল মার্কেটার হতে পারবেন। চলুন জেনে নেই বিসয়গুলো;

১. টেকনোলজি নলেজ

আপনাকে একজন ইমেইল মার্কেটার হতে হলে টেকনোলজি সম্পর্কে ধারণা রাখতে হবে। ভয় পেলেন নাকি? হা হা, ভয় পাওয়ার কিছু নেই। টেকনোলজি নলেজ থাকা লাগবে, মানে কিন্তু এই না যে, আপনাকে কোডিং কিংবা প্রোগামিং সম্পর্কে জানতে হবে।

আপনাকে শুধু অটোমেশন কিংবা অটোমেটিক ইমেইল সেন্ড সম্পর্কে জানলেই হবে। এই অটোমেশন সম্পর্কে জানাটা কেনো প্রয়োজন? 

আচ্ছা,  আপনি যখন নিজের বিজনেস বা পণ্যকে ইমেইলের মাধ্যমে প্রমোট করতে চাইবেন, তখন নিশ্চয়ই চাইবেন যে সর্বোচ্চ সংখ্যক গ্রাহকের কাছে আপনার ইমেইলটি পৌঁছে যাক? কি, তাই তো?

এখন আপনি যদি গতানুগতিক জিমেইল, ইয়াহুর মাধ্যমে ইমেইল পাঠাতে চান তাহলে তো একসাথে অনেক মানুষের কাছে ইমেইল পাঠাতে পারবেন না। একজন একজন করে পাঠাতে হবে। তাই তো?

এতো সময় কি কারো হাতে আছে বলুন? না, এতো সময় কারোর হাতেই থাকেনা। আর শুধু যে সময় ব্যয় হচ্ছে এমন তো নয়। সাথে অতিরিক্ত পরিশ্রমও করা লাগছে।

তো, এই অসুবিধাগুলো এড়াতেই আপনাকে অটোমেশনের উপর ধারণা রাখতে হবে। যার মাধ্যমে আপনি মুহূর্তেই হাজার হাজার কাস্টমারের কাছে ইমেইল পাঠিয়ে দিতে পারবেন।

আপনাদের সুবিধার্থে আমরা এখানে কয়েকটি অটোমেশন বা ফ্রি ইমেইল মার্কেটিং টুলসের নাম বলে দিচ্ছি ।

ফ্রি ইমেইল মার্কেটিং টুলস;

  • FeedBurner
  • Mailchimp 
  • Sendpress
  • Drip
  • MilerLite

আমরা এখানে সবচেয়ে জনপ্রিয় কয়েকটি ইমেইল মার্কেটিং টুলস তুলে ধরেছি।  আপনি এগুলো দিয়ে ফ্রি-তেই খুব সহজেই একসাথে  হাজার হাজার গ্রাহকদের কাছে ইমেইল পাঠিয়ে দিতে পারবেন। 

এছাড়াও গুগলে সার্চ করলেই এমনও আরও অনেক ফ্রি email marketing tools কিংবা ওয়েবসাইট পেয়ে যাবেন।

২. কমিউনিকেশন স্কিল

আপনার অবশ্যই যোগাযোগ তৈরির ক্ষমতা রাখতে হবে। আপনার বিজনেস কিংবা পণ্যটিকে গ্রাহকদের কাছে আকর্ষণীয় করার ওয়ে হচ্ছে আপনার ইমেইলটি।

তাই আপনাকে এমনভাবে ইমেইলটি লিখতে হবে যেনো সেটি পড়ে গ্রাহকরা নিজ থেকেই আপনার বিজনেস কিংবা পণ্য ক্রয়ে  উৎসাহী হয়।

আপনাকে আপনার ইমেইলের উপর জোর দিতে হবে। এমনভাবে ইমেইলটি লিখতে হবে যেনো, কাস্টমাররা ইমেইলটি পড়ে সহজেই আপনার বিজনেস বা পণ্য সম্পর্কে আইডিয়া পেয়ে যান।

৩.  সঠিক কন্টেন্ট নির্বাচন 

বর্তমানে অনেক কোম্পানি ভিজুয়াল কন্টেন্ট তৈরি করে। অর্থাৎ ইমেইলে শুধুমাত্র ইমেজ বা ছিব ব্যবহার করা হয়।

এতে করে দেখা যায়, গ্রাহকরা অতিরিক্ত ছবির কারণে ইমেইলকে স্প্যাম হিসেবে আখ্যায়িত করেন। ফলে আপনি কাস্টমার হারাচ্ছেন। এছাড়াও  এর মধ্যে গ্রাহকররা তাঁদের কাঙ্ক্ষিত বিষয় খুঁজে পায় না।

তাই আপনাকে সঠিক কন্টেন্ট নির্বাচন করতে হবে। গ্রাহকরা কী চায়? সেটি বিবেচনায় রেখে আপনাকে কন্টেন্ট বাছাই করতে হবে।

ইমেইল মার্কেটিং করার নিয়ম

Email marketing সাধারণত দুটি উপায়ে করা হয়ে থাকে। যথা;

১. Free email marketing

২.  Paid email marketing 

আমরা এখানে দুটি উপায়েই আপনাদের জানিয়ে দেবো।

ফ্রি ইমেইল মার্কেটিং 

আচ্ছা বলুন তো, ইমেইল মার্কেটিং করার জন্য কোন জিনিসটা আবশ্যকীয়?  জি ঠিক বলেছেন, গ্রাহকদের ইমেইল। 

আপনাকে email marketing  করতে হলে অবশ্যই আগে কাস্টমার বা গ্রাহকদের ইমেইল সংগ্রহ করে নিতে হবে। তবেই না আপনি তাঁদের কাছে আপনার ইমেইলটি পাঠাতে পারবেন, তাই তো?

তো, এই ইমেইল সংগ্রহের কাজটি কী করে করবেন? আপনি যদি ফ্রিতেই এই ইমেইল সংগ্রহের কাজটি করতে চান,  তবে আপনার নিজের একটি ওয়েবসাইট / ব্লগ কিংবা ইউটিউব চ্যানেল থাকতে হবে।

আপনি আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগটিতে ইমেইল সাবমিটের অপশন চালু করে দিতে পারেন।   আপনি আপনার গ্রাহকদের সচেতন করে দিতে পারেন, নতুন নতুন সব আপডেট সবার আগে নোটিফিকেশনে পেতে তারা যেনো ইমেইল  দিয়ে সাবস্ক্রাইব করে রাখে।

এর মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই আপনার কাস্টমার বা টার্গেট অডিয়েন্সদের থেকে ইমেইল পেয়ে যাবেন। আমি ইমেইল মার্কেটিং করার ক্ষেত্রে এই উপায়টাকেই বেশি পছন্দ করি।

পেইড ইমেইল মার্কেটিং 

নাম শুনেই নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন, এক্ষেত্রে আপনার পকেট থেকে কিছু টাকা বের করতে হবে। এই উপায়ে আপনি ইমেইল কিনতে পারবেন।

আপনি বিভিন্ন ওয়েবসাইট কিংবা অনলাইন টুলসের মাধ্যমে অল্প টাকা ব্যয় করেই অনেক অনেক ইমেইল কিনে ফেলতে পারবেন। 

ইমেইল সংগ্রহ করা শেষ মানে আপনার অর্ধেকেরও বেশি কাজ শেষ। এরপর আপনার কাজ হলো ইমেইল মার্কেটিং টুলসগুলো ব্যবহার করে সংগ্রহকৃত ইমেইল আইডিগুলোতে ইমেইল পাঠানো।

এভাবেই আপনি ঘরে বসে ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে নিজের বিজনেস বা পণ্যকে প্রমোট করে ফেলতে পারবেন। 

শেষ কথা

ডিজিটাল মার্কেটিংয়ের সবচেয়ে লাভজনক এবং সহজ উপায় হচ্ছে এই ইমেইল মার্কেটিং।  বর্তমানে অনেক সফল ব্যবসায়ীদেরই প্রথম পছন্দ এই email marketing. 

একজন ব্যবসায়ী তাঁর বিজনেস কিংবা পণ্যের জন্য খুব সহজেই কাঙ্খিত গ্রাহক নিয়ে আসতে পারেন এই ইমেইল মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে। আপনিও যদি ইমেইল মার্কেটিং করতে ইচ্ছুক হোন, তবে আমাদের দেওয়া গাইডলাইনটি পড়ে নিতে পারেন। 

আশা করছি এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনারা ইমেইল মার্কেটিং সম্পর্কে ভালো একটা ধারণা পেয়ে যাবেন।  এছাড়াও এ বিষয়ে আপনাদের আরও কিছু জানার  থাকলে আমাদেরকে কমেন্ট করে জানিয়ে দিতে পারেন। 

Related Posts

12 Comments

মন্তব্য করুন