একজন শ্রমিক

আমাদের সমাজের শ্রমজীবী ব্যাক্তিরা তাদের শ্রম দিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে সংসারের যাবতীয় খরচ চালানোর চেষ্টা করে।সমাজে অনেক শ্রমিকের পরিবারে দেখা জায় শ্রমিকের ছোট ছোট ছেলেরা সংসারে হাল ধরতে গ্রহত্যাগ করে জীবিকার তাগিদে ছোটে বেড়ায়।আর শ্রমিকের কন্যাশিশুরা পারিবারিক কাজে সহায়তা অথবা অন্য কোনো বাসা বাড়িতে কাজের মেয়ের দ্বায়িত্ব পালন করে দিন কাঠায়।অথচ এই সময়টা তাদের বিদ্যালয়ে কাটানোর কথা! পিতার সামান্য আয়ে পরিবার চলতে না পারার কারণেই পড়াশোনা ত্যাগ করে কর্মসংস্থান বেছে নেয় দরিদ্র শ্রমিকের শিশুসন্তানেরা।আমাদের দেশে হাতেগোনা কয়েকটি শ্রমিক পরিবারের সন্তানেরা উচ্চশিক্ষা লাভ করে বড় ধরনের কর্মসংস্থান পায়।কিন্তু বেশিরভাগ দরিদ্র শ্রমিক পরিবারের সন্তানেরা প্রাথমিক শিক্ষা পাওয়ার সুযোগ পায়না কেউ কেউ কোনো রকম প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেই কর্মক্ষেত্রে ঠুকে যায়।আরেকটি কথা স্পষ্টভাবে বলা দরকার যে,আমাদের দেশের দরিদ্র শ্রমিকেরা কোনো রকম সম্মান বা মর্যাদা পায়না,বরং তারা সমাজে ছোট লোক বলে একটি নামে পরিচিতি পায়।তাদের কাজের একটু এদিক সেদিক হলেই বকাবকি এমনকি বড় ধরনের শাস্তি মাথা পেথে গ্রহণ করতে হয়।একজন শ্রমিকের একমাত্র শ্রমই তার জীবিকার মূল উৎস।যার মাধ্যমে সে একটি পরিবারকে চালিয়ে নেয়।
এই দরিদ্র মেহনতি মানুষেরা একদিন কাজ না করলে না খেয়ে থাকতে হয় পুরু পরিবারের।আমরা স্বভাবতই বিলাশী মানুষ।তাদের দুঃখ, কষ্ট বুঝার মতো মন আমাদের নেই।অক্লান্ত পরিশ্রম করে পরিবারের ভরন পোষন চালাতে হয় দরিদ্র শ্রমজীবীর।সমাজের প্রতিটা ব্যাক্তিই সমাজ ও দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ন ব্যাক্তি।কিন্তু আমারা তাদের তেমন সম্মান ও মর্যাদা দেই না।বেশিরভাগ লোক তাদের তথাকথিত ছোটলোক মনে করে পাশেই বসতে সাচ্ছন্দ্যবোধ করেনা।এমন আচরণ করা হয় যেন তারা কীটের মতো ঘৃনীত এই সামাজে।কিন্তু আমরা কি একটা কথা চিন্তা করে দেখেছি যে শ্রমজীবীদের ছাড়া আমরা একটুক্ষনের জন্য ভাবতে পারবো না।বিভিন্ন ধরনের কাজে শ্রমজীবীদের প্রয়োজন হবেই যেমন কোনো জরুরি কাজে যাওয়ার জন্য রিক্সায় করে যাওয়া আমরা যদি শ্রমজীবীদের এতই ঘৃণা করি তাহলে তাদের শ্রমে চলাফেরা কেনো করি।সমাজে একজনকে ছাড়া অন্য জন চলতে পারবে না প্রকৃত পক্ষে শ্রমজীবীরাই আমাদের সত্যিকারের বন্ধু ও সাহায্যকারী।আমরা যদি তাদের একটু সহানুভূতি দেখাই দেখবেন আপনার কাজটি খুব সুন্দরভাবে করে দিয়েছে সেট তথাকথিত দরিদ্র ছোটলোকেরা।
আমারা তাদের দুঃখ গুজতে পারবো না তা মেনে নিতে আমি একটুও আপত্তি করছিনা।কিন্তু তারা কেনো একজন স্বাভাবিক মানুষের মতো চলতে পারবে না সমাজে।কেনো তারা ঘৃণীত ছোটলোক বলে সমাজে পরিচিতি পায়।যারা শরীর ঘাম পায়ে ফেলে বড় বড় অট্টালিকা সহ বিভিন্ন উপায়ে আমাদের পাশে থাকছে তারা সমাজে কেনো পিছিয়ে থাকবে কেনো তারা উচ্চশিরে কথা বলতে পারবে না।শোষক শ্রেণিরা তাদের যেমন ইচ্ছে তেমন ব্যাবহার করে আসছে সভ্যতার শুরু থেকেই।অন্যায় অত্যাচারের কোনো বিরুধীতা না করে নিত্যকর্মের ন্যায় করে যাচ্ছে তাদের শ্রমের ব্যাবহার।এত কিছুর পরও তারা সমাজে ছোটলোক বলে পদবি পায়।বাহ চমতকার, একটা কথা জোর দিয়ে বলতে চাই শ্রমিকের উন্নতি না হলে দেশ উন্নত হওয়া একদম অসম্ভব…

Related Posts

8 Comments

মন্তব্য করুন