(গল্পের প্রথম পর্ব) হঠাৎ আবারও গুঞ্জন উঠলো যে, এক কৃষক নাকি একটি যন্ত্র বানাতে পারবে যা দিয়ে একই সাথে দুধ, চামড়া, গোশত ও সার তৈরি করা যাবে। রাজা কৃষককে দরাবারে আমন্ত্রণ জানালেন। রাজা তাকে বললেন সত্যিই কি তুমি এমন মেশিন বানাতে পারবে? কৃষক বললো হ্যা পারবো। রাজা বলল তোমার কয় কোটি টাকা চাই? কৃষক বলল আমার অত টাকার দরকার নাই। আমাকে বিশ লাখ টাকা দিলেই হবে। তখন রাজা তাকে বলল এই মেশিন বানাতে কতদিন সময় লাগবে।
কৃষক বলল, বেশি সময় লাগবে না। মাত্র পাঁচ বছরেই আমি মেশিনটি বানিয়ে দেখাতে পারবো। রাজা তাকে রাজদরবার থেকে বিশ লাখ টাকা দিয়ে দিতে বলল। কৃষকটি তিন লাখ টাকা খরচ করে নিজের থাকার একটি সুন্দর বাড়ি বানালো। তারপর দুই লাখ টাকা খরচ করে একটি গোয়াল ঘর বানালো। এরপর দশ লাখ টাকা দিয়ে দুইটি গাভী কিনল। বাকি পাঁচ লাখ টাকা খরচ করে সে একটি দোকান খুললো।
দিন যায় দিন আসে..
দুই বছর পর রাজা তাকে তলব করল। রাজা জিজ্ঞস করল আমার মেশিন কই। কৃষক বলল চলুন আপনাকে মেশিনটি দেখাই। রাজা তার মন্ত্রি পরিষদ নিয়ে মেশিনটি দেখার জন্য বেড়িয়ে পড়ল। কৃষক তার গোয়ল ঘর দেখিয়ে বলল, এটিই হলো সেই মেশিন ঘর যা থেকে গোশত, দুধ,চামড়া ও সার তৈরি করা হচ্ছে।
রাজা বললেন কিভাবে? কৃষক গোয়াল ঘরে নিয়ে গেলো এবং তার গাভীকে দেখিয়ে বলল এই হলো মেশিন যা থেকে ঘাস দিয়ে দুধ ও গোশত তৈরি হচ্ছে। বাছুরকে দেখিয়ে বলল এই হলো মেশিন যা থেকে ঘাস দিয়ে গোশত তৈরি হচ্ছে। তারপড় গরুর গোবর দেখিয়ে বলল এই হলো সার যা ঘাস ও খড় ব্যবহার করে তৈরি হচ্ছে।
রাজা বিজ্ঞানীদের উদ্দেশ্যে বললেন, দেখুন কত কম খরচে কী সুন্দর মেশিন বানিয়ে ফেলেছে। যার মাধ্যমে না পরিবেশে দূষণ হচ্ছে না মনে মনে ঘাস প্রয়োজন হচ্ছে। রাজা কৃষককে বললেন তুমি আজ আমাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিলে যে, আমাদের বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের চেয়ে মহান স্রষ্টা আল্লাহর সৃষ্টি জীবের মধ্যে কত উন্নত বিজ্ঞান লুকিয়ে রয়েছে। আমাদের শুধু যন্ত্রের দিকে মনোযোগী না হয়ে স্রষ্টার দেওয়া নিয়ামতের যথাযথ ব্যবহার করে উন্নতির পথ তালাশ করা।
রাজা কৃষকের প্রতি খুসি হয়ে কৃষককে আরও কিছু গাভী কিনে দিলেন এবং বললেন, এসবের মালিক আজ থেকে তুমিই। কৃষক খুবই খুসি হলো। রাজা ঘোষণা করলেন এরপর থেকে মেশিন বানানো নয় সবাই পশু পালনে মনোযোগী হও। তারপর থেকে সবাই পশু পালনে মনোযোগী হলো।