আসসালামু আলাইকুম।
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই?আশাকরি ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আলোচনা করবো। ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র নিয়ে আমি আগে আরও দুইটি আর্টিকেল আপনাদের সাথে শেয়ার করেছি। আপনারা যদি ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র সম্পর্কে সাধারণ ধারণা পেতে চান তবে, আমার শেয়ার করা আগের আর্টিকেল দুটি পড়তে পারেন। আর্টিকেল দুটির লিংক আমি এই আর্টিকেলের শেষে দিয়ে দিব। তাহলে বন্ধুরা, কথা না বাড়িয়ে এখন মূল আলোচনায় আসি।
আজ আমরা জানবোঃ
১) অত্যাধিক মানসিক চাপ কি ডায়াবেটিস রোগ ডেকে আনে?
২) ডায়াবেটিস রোগে কি ধরনের খাদ্য নিষিদ্ধ?
৩) একজন ডায়াবেটিস রোগীর দিনে কতবার খাওয়া উচিত?
*অত্যাধিক মানসিক চাপ কি ডায়াবেটিস রোগ ডেকে আনে ?
-উচ্চ মানসিক চাপের সঙ্গে ডায়াবেটিস রোগের প্রত্যক্ষ কোন যোগাযোগ নেই । তবে সাধারণত দেখা যায় যে, ডায়বেটিস রোগীদের উচ্চ মানসিক চাপ থাকে অথবা উচ্চ মানসিক রোগীদের ডায়াবেটিস রোগ থাকে । উচ্চ মানসিক চাপ থেকে উচ্চ রক্ত চাপের সৃষ্টি হয় এবং রক্তচাপ থাকা অবস্থায় ইনসুলিন প্রদানকারী কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ডায়াবেটিস রোগ ডেকে আনে ।
*ডায়াবেটিস রোগে কি ধরনের খাদ্য নিষিদ্ধ?
-ডায়াবেটিস রোগের শতকরা ষাট ভাগ কে আয়ত্তে রাখা যায় খাদ্যের তালিকায় পরিবর্তন ঘটিয়ে । আমাদের খাবারে যে তিনটি প্রধান পুষ্টিকর জাতীয় দ্রব্য থাকে সেগুলো হলো, কার্বোহাইড্রেট (শ্বেতসার), প্রোটিন (আমিষ জাতীয় খাদ্য) এবং চর্বিজাতীয় খাদ্য । এর মধ্যে কার্বোহাইড্রেট থেকে রক্তে গ্লুকোজ আসে ।
দুই ধরনের কার্বোহাইড্রেট আছে প্রথমটি সাধারণ বা সরল যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ভালো নয় । কারণ এটি খুব তাড়াতাড়ি রক্তের সঙ্গে মিশে গিয়ে রক্তে শর্করার স্তরকে দ্রুত বাড়িয়ে দেয় । অপরদিকে জটিল কার্বোহাইড্রেট ডায়াবেটিস রোগীদের পক্ষে নিরাপদ । কারণ এর থেকে ধীরে ধীরে গ্লুকোজ রক্তের সঙ্গে মেশে এবং রক্তে শর্করার স্তরকে দ্রুতগতিতে বাড়ায় না
ডায়াবেটিস রোগীদের নিজেদের খাদ্য তালিকায় দ্বিতীয় পরিবর্তন আনতে হবে তা হচ্ছে রিফাইন খাদ্য বা খোসাযুক্ত শুক্ষ্ম কণা যুক্ত খাদ্যের পরিমাণ কমিয়ে তন্তু যুক্ত খাদ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে হবে । কারণ খাদ্যের মধ্যে প্রাপ্ত তন্তুগুলো অন্ত্রে খাদ্য থেকে গ্লুকোজ শোষণ কে মন্তর করে দেয় । ফলে রক্তে শর্করার স্তর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে এবং সময়ের মধ্যে রক্তে থাকা ইনসুলিন এই গ্লুকোজের ব্যবহার করতে পারে । রক্তে শর্করার আয়ত্তের মধ্যে থাকে ।
ডায়াবেটিস রোগীদের খাদ্য তালিকায় তৃতীয় যে পরিবর্তন খুবই গুরুত্বপূর্ণ তা হচ্ছে খাদ্যে যথাসম্ভব চর্বিজাতীয় পদার্থের পরিমাণ কমিয়ে আনা । কারণ এ ধরনের রোগীদের হৃদ রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে । সেজন্য চর্বি জাতীয় খাদ্য বর্জন করা বাঞ্ছনীয় ।
*একজন ডায়াবেটিস রোগীর দিনে কতবার খাওয়া উচিত ?
-একজন সুস্থ মানুষ প্রধান তিনটি সময়ের খাদ্যের মাধ্যমে মোট ১৬০০ ক্যালরি খাদ্য অবশ্যই গ্রহণ করবে । যথাঃ সকালের খাবার থেকে শর্করা 30 ভাগ দুপুরে খাবার থেকে শতকরা 35 ভাগ এবং রাতে খাওয়ার থেকে শতকরা 25 ভাগ ক্যালোরি গ্রহণ করবে । অনেককে সন্ধ্যায় কিছু খেতে ইচ্ছে করেন । ওই সময় খাদ্য থেকে শতকরা দশভাগ ক্যালোরি গ্রহণ করবে ।
তবে আপনি যদি ডায়াবেটিস রোগী হন তাহলে আপনার উচিত স্বল্প পরিমান খাদ্য বারে বারে খাওয়া অর্থাৎ সারাদিনের ছয় থেকে সাত বার অল্প অল্প খাবেন । যেমন প্রত্যুষে বা সকালে কিছু খেলেন , তারপর দুই তিন ঘন্টা পরে আবার কিছু খেলেন । এর দ্বারা ইনসুলিনকে ভালোভাবে ব্যবহার করা যায় ফলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কে সহজেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভবপর হয় ।
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই। ডায়বেটিস রোগ সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে, (ডায়াবেটিস রোগীরা কি কি খাবেন কি কি খাবেন না )এর পাতার চোখ রাখুন। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কিছুটা উপকার হয় তাহলে, আপনি আপনার নিকটস্থ বন্ধু বা আত্মীয়কে আর্টিকেলটি শেয়ার করে উপকৃত করুন। সবাই ভালো থাকবেন।
আসসালামু আলাইকুম
আগের আর্টিকেল দুটি পড়তে নিচের লিংকে ক্লিক করুন…..
পার্ট-২
পার্ট-১