ডায়াবেটিস রোগ কি জানা দরকার পার্ট-১

আসসালামু আলাইকুম।
প্রিয় পাঠক বন্ধুরা, কেমন আছেন সবাই?আশাকরি ভালো আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আল্লাহর অশেষ রহমতে আমিও ভাল আছি। আজ আমি আপনাদের সাথে ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আলোচনা করবো।
করোনা মহামারীর পর ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র এ বিশ্বের দ্বিতীয় মহামারী । ডায়াবেটিসকে মহামারী বলার কারণ এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোনো নির্দিষ্ট বয়স নেই। ছেলে থেকে বুড়ো সবাই এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন।ডায়াবেটিস একটি নিরব ঘাতক। বাংলাদেশে ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লক্ষ। কিন্তু যারা আক্রান্ত তাদের ৫৭ শতাংশই জানেন না যে তাদের ডায়াবেটিস রোগ রয়েছে।
আজ আমরা জানবো,

১)ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র কি?
২)ডায়াবেটিস কাকে বলে?
৩)ডায়াবেটিস কেন হয়?
৩)ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি?

* ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র কি ?

— ডায়াবেটিস বা বহুমূত্র শরীরের এমন একটি বিশেষ অবস্থা , যে অবস্থায় মানব দেহের রক্তে গ্লুকোজের (শর্করা) পরিমাণ স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি থাকে।যার অপর নাম ইনসুলিন। এই ইনসুলিনের স্বল্পতা বা ইনসুলিনের আংশিক ক্ষমতার জন্য শরীরে অস্বাভাবিক অবস্থার সৃষ্টি হয়। যদি কোন ব্যক্তির তিনটি রক্তের নমুনা পরীক্ষা করা হয় এবং ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ পাওয়া যায় তবে তাকে ডায়াবেটিস রোগাক্রান্ত বলা যায়।

* ডায়াবেটিস কাকে বলে?

–অগ্ন্যাশয়ের ভিতর আইলেনস অফ ল্যাঙ্গারহ্যানস নামক এক প্রকার গ্ৰন্থি আছে ‌‌।‌‌ এই গ্ৰন্থি থেকে ইনসুলিন নিঃসৃত হয়। ইনসুলিন হলো এক প্রকার হরমোন যা দেহের শর্করা পরিপাক নিয়ন্ত্রণ করে। অগ্ন্যাশয়ে যদি প্রয়োজন মত ইনসুলিন তৈরি না হয় তবে রক্তে শর্করার পরিমাণ স্থায়ী ভাবে বেড়ে যায় এবং মূত্রের সাথে গ্লুকোজ নির্গত হয়। এ অবস্থাকে বহুমূত্র বা ডায়াবেটিস মেলাইটাস বলে।
ডায়াবেটিস দুই ধরনের হয়। টাইপ -১ ও টাইপ -২ । টাইপ-১ এ আক্রান্ত রোগীর দেহে একেবারেই ইনসুলিন তৈরি হয় না। তাই রোগীর ইনজেকশনের মাধ্যমে ইনসুলিন নিতে হয়। টাইপ-২ এ আক্রান্ত রোগীর দেহে আংশিক ভাবে ইনসুলিন তৈরি হয়। এক্ষেত্রে ঔষধ অগ্ন্যাশয় কোষকে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় ইনসুলিন তৈরিতে সাহায্য করে।

* ডায়াবেটিস কেন হয়?

–অগ্ন্যাশয়ের কোষগুলোতে ইনসুলিন উৎপাদিত হয়। ডায়াবেটিস রোগের ক্ষেত্রে এই ইনসুলিন স্বল্প পরিমাণে উৎপাদিত হয় অথবা পরিমাণ যথাযথ থাকলেও সেটা যথেষ্ট কর্মক্ষম হয় না। ফলে গৃহীত গ্লুকোজ সঠিক ভাবে ব্যবহার হয় না। তখন রক্তে শর্করার পরিমাণ বেড়ে যায় । সাধারণত এই রোগ তাদের মধ্যে থাকে, যাদের বংশগত রোগের প্রবণতা আছে অথবা যারা শ্রমবিমুখ আরামে বসে থাকে আরামে বসে থাকার জীবনে অভ্যস্ত অথবা যারা খুব কম কায়িক পরিশ্রম করেন এবং যাদের তলপেটে যথেষ্ট স্ফীতি দেখা দিয়েছে।

*ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো কি কি?

–ডায়াবেটিস রোগের লক্ষণ গুলো হলোঃ
– বারবার প্রস্রাব করা
– অস্বাভাবিক বেশি মাত্রার তৃষ্ণা
– অস্বাভাবিক বেশি মাত্রার ক্ষুধা
– ক্লান্তি
– দৈহিক ওজন হ্রাস
– স্থুল আকৃতির চেহারা
– ক্ষতস্থান দেরীতে শুকানোর
– পা ধরে যাওয়া
– চোখের দৃষ্টিশক্তি আবছা হওয়া
– চামড়া শুষ্কতা বা চুলকানি

উপরে বর্ণিত লক্ষণ গুলো কারো প্রকাশ পেলে বুঝতে হবে তার ডায়াবেটিস রোগ আছে।
তো পাঠক বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই। ডায়বেটিস রোগ সম্পর্কে আরও তথ্য জানতে, (ডায়াবেটিস রোগটি কি জানা দরকার _পার্ট-২)এর পাতার চোখ রাখুন। আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনার কিছুটা উপকার হয় তাহলে, আপনি আপনার বন্ধু বা আত্মীয়কে আর্টিকেলটি শেয়ার করে উপকৃত করুন। সবাই ভালো থাকবেন।

আসসালামু আলাইকুম

Related Posts

9 Comments

  1. আপনার সদয় অবগতির জন্য জানাচ্ছি যে, ডায়াবেটিস কোন রোগের নাম নয়। ডায়াবেটিস হলো শারীরের এমন একটা অবস্থা, যে অবস্থায় যে কোন রোগ রোগীর ম্ররত্যূর কারন হতে পারে।

মন্তব্য করুন