ধন সম্পদ বৃদ্ধির দোয়া | অর্থ সম্পদ বৃদ্ধির কৌশল

হ্যালো পাঠক বন্ধুগন, আজকের পোস্টে আমরা ধন সম্পদ বৃদ্ধির দোয়া ও অর্থ সম্পদ বৃদ্ধির কৌশল নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি। জীবনের প্রয়োজনে অর্থ সম্পদের কতটুকু গুরুত্ব রয়েছে সেই বিষয় নিয়েও এ পোস্টে কথা বলা হবে।

অর্থ এবং সম্পদ-সম্পত্তি একটি মানুষের সবকিছু। কোনো কিছু ক্রয় করার জন্য আমাদের কিসের প্রয়োজন? এই অর্থেরই প্রয়োজন। অনেকক্ষেত্রে একটি মানুষের সামাজিক অবস্থা বিবেচনা করা হয় তার কাছে কতটুকু টাকা আছে বা কতটুকু সম্পদ আছে তার উপর ভিত্তি করে। তো আজকের এই পোস্টে আমরা অর্থ সম্পদ বৃদ্ধি করার কিছু উপায় ও অনেক অর্থ করে লাভই বা কি তা নিয়ে আলোচনা করতে যাচ্ছি।

অর্থ ও সম্পদ বৃদ্ধি করার কয়েকটি কৌশল:

ধন সম্পদ বৃদ্ধির দোয়া

সঞ্চয়ী ও সাশ্রয়ী হোন:

বেশি অর্থ করার সবচেয়ে ভালো উপায় হচ্ছে। সঞ্চয়ী হওয়া। এর মানে যে কৃপণতা করবেন, তা কিন্তু নয়। আপনার সাধারণ যে প্রয়োজন (খাবার, পোষাক, চিকিৎসা) রয়েছে তা পূরণ করুন। অপ্রয়োজনীয় কোনো খরচ করবেন না। ধরুন আপনার ইতিমধ্যেই একটি ভালো সক্রিয় মোবাইল ফোন রয়েছে, কিন্তু আপনার এই ফোনটি ভালো লাগছে ও এটিকে ‘ব্যাকডেটেড’ মনে হচ্ছে আবার বর্তমানে এই ফোনটির চেয়ে ভালো একটি ফোন মার্কেটে বের হয়েছে আর এখন আপনি এই ফোনটি ক্রয় করে আগের ফোনটি ফেলে দিলেন। এটি কিন্তু একটি টাকার অপচয় হয়ে গেল।

আয়-ব্যয় ভারসাম্য:

আপনাকে সবসময় মাথায় রাখতে হবে যে আপনার মাসিক আয় কত। এবং তার উপর ভিত্তি করেই আপনার ব্যয় করতে হবে। এবং কিছু টাকা আপনাকে প্রতি মাসে সঞ্চয়ও করতে হবে। ব্যয় যদি আয়ের চাইতে বেশি হয়ে যায় তাহলে আপনার জলদিই আর্থিক বিপর্যয় হবে। এবং এরকম করতে থাকলে সামনে বিপদের সম্মুখীন হতে পারেন।

একটি কার্যকর বাজেট:

ধন সম্পদ বৃদ্ধির দোয়া

আয় ও ব্যয়ের মধ্যে ভারসাম্য রাখতে একটি কার্যকর বাজেট আপনাকে অনেক সহায়তা করবে। কিন্তু এর জন্য বাজেটটি বাস্তবসম্মত হতে হবে ও আপনাকে বাজেটটি মেনে চলতে হবে। ধরুন আপনি মাসে ৩০ হাজার টাকা ইনকাম করেন। সবকিছু মিলিয়ে আপনার নিত্যপ্রয়োজনীয় খরচ মিলিয়ে হিসেব করে দেখলেন আপনার মাসে ২০ হাজার টাকা লাগে। তো আপনি প্রতি মাসে শুধু ওই ২০ হাজার টাকাই খরচ করতে পারবেন। আর বাকি ১০ হাজার টাকা আপনি সঞ্চয় করবেন। এই ১০ হাজার টাকা আপনি ব্যবহার করবেন না বা করতে পারবেন না। এর মাধ্যমে আপনি আপনার অর্থনৈতিক অবস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন।

প্রয়োজন ও চাহিদা বোঝা:

আমরা ‘need’ ও ‘want’ এ দুটি শব্দের সাথে পরিচিত। Need হচ্ছে প্রয়োজন আর Want হচ্ছে চাহিদা। আপনার যেগুলো হচ্ছে ‘need’ সেগুলো লাগবেই। Need বা প্রয়োজনের মধ্যে পড়ে খাদ্য, অস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ইত্যাদি। অপরদিকে Want বা চাহিদা হচ্ছে এমন সব জিনিস যেগুলোর তেমন একটা কোনো প্রয়োজন নেই। যেমন ধরুন একটি দামি গাড়ি, একটি দামি ফোন ইত্যাদি। এগুলো যথাসাধ্য এড়িয়ে চলতে হবে।

দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা:

আপনাকে অবশ্যই দীর্ঘসময়ের জন্য অর্থাৎ ভবিষ্যতকে নিয়ে চিন্তা করতে হবে। এর জন্য প্রথমে আপনাকে একটি লক্ষ নির্ধারণ করতে হবে। ধরুন আপনি ঠিক করলেন যে পাঁচ বছরে ১০ লক্ষ টাকা সঞ্চয় করবেন। এখন ওই ১০ লক্ষ টাকা নির্ধারণ করার জন্য প্রতি মাসে টাকা সঞ্চয় করুন। এই টাকা আপনি ব্যাংকের একটি ডিপিএস (ডিপজিট পেনশন স্কিম) একাউন্টে রাখতে পারেন। এতে আপনার টাকা সঞ্চয়ের আগ্রহ জাগবে যেমন তেমনিই কিছু মুনাফাও পাবেন।

বিনিয়োগ করুন:

বেশি বেশি টাকা বিনিয়োগ করার চেষ্টা করুন। মাসিক আয়ের একটি নির্দিষ্ট অংশ বিনিয়োগ করুন। আপনি স্টক মার্কেটে বিনিয়োগ করতে পারেন। বিনিয়োগ করার আগে অবশ্যই রিসার্চ করুন ও সবকিছু বুঝে নিন প্রথমে।

ইমার্জেন্সি ফান্ড:

আমাদের জীবনে ভালো বা খারাপ সময় আসবেই। কিন্তু ওই খারাপ সময়ের জন্য আমাদের কিছু প্রস্তুতি থাকতে হবে। এর জন্য আপনি ইমার্জেন্সি ফান্ডের ব্যবহার করতে পারেন। প্রতি মাসের আয়ের নির্দিষ্ট একটি অংশ ইমার্জেন্সি ফান্ড হিসেবে রাখুন। নিজে বা পরিবারের কেউ অসুস্থ হলে, ব্যবসায় মন্দা হলে এই ফান্ড ব্যবহার করতে পারেন।

ধন সম্পদ বৃদ্ধির দোয়া

ধন সম্পদ বৃদ্ধির দোয়া

অর্থ সম্পদ সবকিছুই আল্লাহর দান ও নিয়ামত। তাই আল্লাহ যা দেয় তা নিয়েই শুকুরিয়া আদায় করতে হবে এবং তার কাছে দোয়া প্রার্থনা করতে হবে। তিনি যে আপনাকে সম্পদ দিয়েছেন, তার জন্য আপনি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রদর্শনের জন্য কিছু দোয়াও রয়েছে। নিম্নে এমন কয়েকটি দোয়া দেয়া হলো।

আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা:) এ দোয়া করতেন,

আল্লাহুম্মা ইন্নি আসয়ালুকাল হুদা ওয়াততুক্বা ওয়াল আ’ফাফা ওয়াল গিনা।
অর্থ: হে আল্লাহ! আমি আপনার কছে হেদায়েত, তাকওয়া, চরিত্রের নির্মলতা ও আত্মনির্ভরশীলতা প্রার্থনা করছি। (তিরমিজি, হাদিস: ৩৪৮৯)

আরেক হাদিসে, আবু হুরায়রা (রা:) থেকে বর্ণিত:
ইয়া রব্বি, লা-গিনান বি- আন-বারাকাতিক।
অর্থ: হে আল্লাহ, আপনার বরকত থেকে আমি অমুখাপেক্ষী নই।

জীবনের প্রয়োজনে অর্থ সম্পদের কতটুকু গুরুত্ব আছে?

জীবনের প্রয়োজনে অর্থ সম্পদের গুরুত্ব অপরিসীম। টাকা ছাড়া এ পৃথিবীতে তেমন কিছুই করা যায় না। অর্থ সম্পদ থাকলে আপনার সন্তান-সন্ততি একটি সুন্দর জীবন পাবে। আপনি যখন বৃদ্ধ হবেন কিংবা অবসর নিবেন তখন এই অর্থ আপনার কাজে লাগবে। কিংবা ধরুন আপনি বা আপনার আপনজন অসুস্থ হয়েছে সেক্ষেত্রেও অর্থ প্রয়োজন। আপনার পরিবারের সাধারণ প্রয়োজন মিটাতেও এই অর্থ প্রয়োজন। জীবনের সকল ক্ষেত্রেই আমাদের অর্থ প্রয়োজন। তাই আমাদের সর্বদাই অর্থ ও সম্পদ অর্জনের চেষ্টা করতে হবে।

পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts