পানামা জঙ্গল কোথায় অবস্থিত, কিছু গোপন ইতিহাস

আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের বলতে যাচ্ছি পানামা জঙ্গল কোথায় অবস্থিত এবং পানামা জঙ্গলের কিছু গোপন ইতিহাস। তো আর দেরি না করে চলুন শুরু করা যাক।

পানামা জঙ্গল কোথায় অবস্থিত

মধ্য ও দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যে অবস্থিত একটি দেশের নাম হচ্ছে পানামা। এর রাজধানী হচ্ছে পানামা সিটি। পূর্বে দেশটি কলম্বিয়ার ছিল কিন্তু বর্তমানে এটি একটি স্বাধীন দেশ। আটলান্টিক ও প্রশান্ত মহাসাগরের সংযোগকারী পানামা খাল এখানেই অবস্থিত। মূলত এখানেই পানামা জঙ্গল (Panama Forest) অবস্থিত। পানামা জঙ্গলের বেশিরভাগ এলাকাই পানামায় অবস্থিত ও কিছু কলম্বিয়াতেও আছে। এটি মোট ৩১০৭৯৮ হেক্টর (৭৬৭০০০ একর) এলাকা জুড়ে বিস্তৃত।

এটি অত্যন্ত সুন্দর একটি জায়গায়। এখানে অনেক মানুষই ঘুরতে যায়। তাছাড়া অনেক অভিবাসন প্রত্যশীরা আমেরিকায় (USA) চোরা পথে প্রবেশের জন্য এই পথকে ব্যবহার করে। কিন্তু এটি খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। অনেক অভিবাসন প্রত্যাশীরা এখানে মৃত্যুবরণ করেছেন। পানামার প্রসিকিউটরের কার্যালয়ের মতে ২০২১ সালে প্রায় পঞ্চাশ জনের মতো প্রবাসীর এখানে মৃত্যু ঘটে। ২০২০ সালে যে সংখ্যা ছিল প্রায় ৩০ জন। শুধু যে অভিবাসন প্রত্যাশীরা তা কিন্তু নয়।

অনেক সময় যে পর্যটক ও ভ্রমণকারীরা সেখানে যায় তাদের মধ্যে অনেকেই মারা যায় এমনকি অনেকের লাশও খুঁজে পাওয়া যায়না। যেমনঃ ক্রিস ক্রেমারস (Kris Kremers) ও লিসান ফ্রুন (Lisanne Froon) নামক দুই ডাচ শিক্ষার্থী এখানে এসে হারিয়ে যায়। তারা ”El Pianista Trail” এ হাইকিং এ গিয়েছিল। ২০১৪ সালের পহেলা এপ্রিল তারা হারিয়ে গিয়েছিল। ৬ই এপ্রিল তাদের বাবা-মাও পানামায় আসে এবং পুলিশ ফোর্স ও ডগ ইউনিট নিয়ে খুঁজতে বের হয়। ১৪ জুন একজন ওখানের স্থানীয় মহিলা তাদের ব্যাগ খুঁজে পায়। সেখানে তাদের মোবাইল ফোন , ৮৩$, পাসপোর্ট, দুই বোতল পানি ও ক্যামেরা পাওয়া যায়।

তাদের মোবাইল দেখা যায় তারা অনেক কয়বার ইমার্জেন্সি নাম্বারে ফোন দেওয়ার চেষ্টা করেছিল কিন্তু হয়ত নেটওয়ার্ক না থাকায় ফোনটি যায়নি। পরবর্তীতে ৫ থেকে ১১ এপ্রিল, ফোনটি ব্যবহারের চেষ্টা করা হয় (হয়ত তারা নয়)। ৮ই এপ্রিল তাদের ক্যামেরা থেকে অন্ধকারের মধ্যে কিছু ছবি তোলা হয়।পরবর্তীতে ২০২১ সালে যেখানে ব্যাগট খুঁজে পাওয়া যায় তার কাছে একটি বোটে একটি পা পাওয়া যায় ও ৩৩টি ভাঙা হাড় পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ডিএনএ টেস্ট করে জানা যায় এগুলো তাদের। যদিও পুলিশ কিংবা ফরেনসিক বিভাগ মৃত্যুর কোনো সুনির্দিষ্ট কারণ খুঁজে বের করতে পারিনি। এখনও এটি একটি রহস্য হয়ে আছে।

তো এসকল ঘটনা কেন হচ্ছে? কিভাবে ঘটছে? কে এর পিছনে রয়েছে?

তো এর পিছনে কিছু থিওরি রয়েছে। এখানে গেলে যেকোনো ব্যক্তি প্রথমত প্রাকৃতিক হুমকির শিকার হবে। বিভিন্ন ধরণের প্রাণী, খারাপ পথ ইত্যাদি। এটি অত্যন্ত ভয়ানক একটি জায়গা। আবার অনেকের মতে এখানে ভূত (আত্মা) রয়েছে যারা এই জঙ্গলটিকে রক্ষা করছে (অবিশ্বাস্য!!)। অনেকের মতে তাদের কেউ মেরে ফেলেছে। আমি এটাতে বিশ্বাস করি। কারণ এখানে অনেক অপরাধীর দল রয়েছে। আগেও তারা অনেকবার এরকম ভ্রমণকারীদের ছিনতাই-ডাকাতি এমনকি ধর্ষণ পর্যন্ত করেছে। হতে পারে যে অভিবাসন প্রত্যাশীরা যারা যায় তাদের এরা হত্যা করে। কিন্তু এটিও কতটা সঠিক?

যদি ডাকাতরা বা কোনো মানুষ ওই ডাচ শিক্ষার্থীদের হত্যা করত, তাহলে হত্যাকারীরা কেন তাদের মোবাইল ফোন, টাকা ও ক্যামেরা চুরি করেনি?

৬ই এপ্রিল থেকে শুরু করে ১০ দিন তাদের খোঁজ চলে, তাহলে ৮ তারিখ, তারা ছবি তুলেছে এর অর্থ তারা জীবিত, কিন্তু তাদের খুঁজে পাওয়া যায়নি কেন? ১ তারিখ থেকে ৮ তারিখ বা ১১ তারিখ পর্যন্ত তারা না খেয়ে কিভাবে বেঁচে ছিল?

তো হয়ত এসকল মৃত্যুর জন্য মানুষই দায়ী। কিংবা কোনো হিংস্র প্রাণীও হতে পারে। হয়তো আসলেই এখানে অস্বাভাবিক কিছু থাকতে পারে। এখন পর্যন্ত এই মৃত্যুগুলোর কোনো নিশ্চিত কারণ জানা যায়নি।

তো আজকের জন্য এতটুকুই। পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts

7 Comments

মন্তব্য করুন