সম্প্রতি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের একটি প্রতিবেদন প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে মাদকদ্রব্য গ্রহণ, মাদকব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টতা ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সারা দেশের উপর একটি জরিপের ফলাফল প্রকাশ করা হয়। সেখানে দেখা যায় প্রতিনিয়ত বেড়ে চলেছে নারী মাদকসেবীর সংখ্যা। স্কুল কলেজ ভার্সিটি পড়–য়া মেয়েরা এ মাদকের সাথে বেশি জড়িত। উচ্চবিত্ত পরিবারের স্বাধীনচেতা নারী থেকে শুরু করে বস্তির শ্রমজীবি নারীরাও আসক্ত হয়ে পড়ছে মাদকের সাথে। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব মেন্টাল হেলথের একটি গবেষণা থেকে জানা যায় দেশে বর্তমানে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৭০ লাখ। এর মধ্যে ১০ শতাংশ মাদকাসক্ত হলো নারী। এবং দিন দিন নারী মাদকসেবীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। ইদানিং রাজধানী ঢাকার কিছু অভিজাত এলাকার সড়কে , শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাশে, ক্যান্টিনে, পার্কে এমনকি ফুটপাতের টঙ দোকানে দাঁড়িয়েও অনেক মেয়েকে ধুমপান করতে দেখা যায়। এছাড়া এদের মধ্যে অনেকেই গাঁজাসহ অন্যান্য মাদকের সাথে জড়িত। এসব মাদক সেবীর বেশিরভাগই শিক্ষিত এবং স্মার্ট। বন্ধুদের সাথে আড্ডাবাজি চালাতে গিয়ে একরকম ঝোঁকের মধ্যেই তারা জড়িয়ে পড়ছেন মাদকের সাথে। তাছাড়া আড্ডায় বসে অনেকের সাথে নিজে মাদক গ্রহণ না করাটা প্রেস্টিজ ইস্যু মনে করে অনেক মেয়ে মাদকে আসক্ত হয়ে পড়ছেন। তবে বস্তি অঞ্চলের নারীরা কিংবা শ্রমজীবি অনেক নারী পাারিবারিক ও পারিপাশির্^ক অভ্যাসের কারণে অনেকটা স্বাভাবিকভাবেই মাদকাসক্ত। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের গবেষণায় আরও প্রকাশিত হয় যে সারাদেশের ৮টি জেলার মধ্যে মাদক সরবরাহের দিক থেকে এগিয়ে আছে সিলেট জেলার মানুষ। সবচেয়ে বেশি মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত বরিশাল জেলার মানুষ। আর সবচেয়ে বেশি মাদক গ্রহণ করেন রাজধানী ঢাকার মানুষ। এছাড়া মোট মাদকাসক্তের ২৫% মাদকসেবী হলো শিশু। এদের বয়স ১৫ বছরের মধ্যে। এবং এদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রাজধানী ঢাকায়। প্রতিবেদন থেকে জানা যায় মাদকসেবীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মাদক হচেছ গাঁজা ও ইয়াবা। এর মধ্যে ঢাকার মাদকসেবীরা বেশি গ্রহণ করেন ইয়াবা। বরিশালের মাদকসেবীরা সবচেয়ে বেশি গ্রহণ করেন গাঁজা। রংপুরের মাদকসেবীরা সবচেয়ে বেশি গ্রহণ করেন ফেনসিডিল ও রাজশাহীরা মাদকসেবীরা গ্রহণ করেন হেরোইন। সারা দেশে যে পরিমাণ গাঁজা ও ইয়াবা গ্রহণ করা হয় তার ৬৮.২ শতাংশ গাঁজা ও ৪৮.২ শতাংশ ইয়াবা। জরিপে দেখা যায় বেশিরভাগ মাদকসেবীদের বয়স ১৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। মাদকের পিছনে তাদের গড় খরচ মাসিক হিসেবে ১৭ হাজার টাকার উপরে। জানা যায় দেশের ভিতরে মাদক আসে সবচেয়ে বেশি পার্শ¦বর্তী দেশ ভারত থেকে। তারপর মায়ানমার থেকে। মাদকসেবীরা সাধারণত খোলা মাঠে, ভাঙ্গা ও পরিত্যাক্ত বাড়িতে, নিজের বাড়িতে কিংবা কোনো নির্জন স্থানে গিয়ে মাদকসেবন করেন। এই মাদক গ্রহণের কারণ একেক জনের কাছে একেক রকম। শিক্ষিত তরুণদের মধ্যে চাকরি না পাওয়া, প্রেমে ব্যর্থতা, পারিবারিক অশান্তি ইত্যাদি কারণ চিহ্নিত করা যায়। বাংলাদেশী মাদকসেবীরা সাধারণত মাদক গ্রহণের ১০ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত মাদক পুরোদমে চালিয়ে যান। তারপর কিছু সংখ্যাক ছেড়ে দেন এবং কিছু সংখ্যক মাঝে মাঝে এবং কিছু সংখ্যাক পুরোদমেই মাদকগ্রহণে নিয়মিত হয়ে যান। পরিবহণ শ্রমিকদের বেশিরভাগই প্রায় ৮০ শতাংশ মানুষ মাদকের সাথে জড়িত।
New surprises are coming to WhatsApp
WhatsApp is bringing new features for its users. As a result, if you click on any person's profile picture, you...