ভালোবাসা দিবস উপলক্ষে ইসলাম কি বলে

আজ আমরা সবাই ১৪ ফেবরুয়ারি কে ভালোবাসা দিবস হিসাবে জানি। এই দিনটি কী আসলেই ভালোবাসা দিবস? এই দিনকে যদি আমরা ভালোবাসা দিবস হিসাবে ধরি তাহলে অন্য দিন গুলা কী। অন্য ‍দিন গুলো তে কি ভালোবাসা বলতে কিছুই নাই!

আমরা সবাই ভালোবাসা ‍দিবস বলে বলে ফ্যেনা তুলে ‍দিয়, আসলে এই দিনটি আসলো কোথা থেকে এসেছে সেটা আমরা কেও দেখি না। এই দিন টি সর্ম্পকে ইসলাম কি বলে ? এই দিবসটি মুলতো এসেছে খ্রিষ্ঠানধর্ম থেকে। আর ‍একজন মুসলমান হিসাবে কখনো বির্ধম দের অনুসরণ করা আমাদের উচিত নয়। হাদিসে আছে, যে ব্যেক্তি ‍বির্ধম কে অনুসরণ করবে, সে তদের দলে অন্তভুক্ত হবে।

আর ১৪ই ফেবরুয়ারি ইসলামে জায়েয নয়। অবৈধ মেলা মেশা ইসলামে কুরআন-হাদিসে কখনই জায়েয নায়। বিভিন্ন সূত্রে জানা যায় যে, দুই শত সত্তর সালের ১৪ই ফেব্রুয়ারি। তখন রোমের সম্রাট ছিলেন কর্ডিয়াস। সেই সময় ভ্যালেন্টাইন নামে একজন সাধু, তরুণ প্রেমিকদের গোপন পরিণয়-মন্ত্রে দীক্ষা দিত। এ অপরাধে সম্রাট কর্ডিয়াস সাধু ভ্যালেন্টাইনের শিরশ্ছেদ করেন।

তার এ ভ্যালেন্টাইন নাম থেকেই এ দিনটির নামকরণ করা হয়। ধীরে ধীরে এই দিনটা সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। মহান আল্লাহর অশেষ নিয়ামতের মধ্যে ভালোবাসা একটি, আমাদের মুসলমানদের ভালোবাসার কোন শেষ বা কোমতি নেই। ভালোবাসার জন্য আমাদের কোন দিবসের প্রয়োজন নাই। ভালোবাসার স্রোত সবসময় বহমান।

আর যেই দিন বা ‍দিবস মানুষে তৈরি করে তাতে কিভাবে রহমত বা শান্তি থাকতে পারে। ভালোবাসার নামে এই দিনে চলে অশ্লীলতা, বেহায়াপনা, নগ্নতা, সবশেষে কখনও কখনও অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক ও ধর্ষণ। এটিই যদি হয় ভালোবাসা দিবসের বাস্তব চিত্র! তা হলে বিশ্ব ভালোবাসা দিবসের মর্যাদা রইল কোথায়? এটি কোন ‍বিশ্ব ভালোবাসা ‍দিবস না এটি হলো বিশ্ব বেহায়া, অশ্লীলতা দিবস।

হজরত মুয়াজ ইবনে জাবাল (রা.) থেকে বর্ণিত– ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি, যারা আল্লাহর সন্তুষ্টির আশায় পরস্পরকে ভালোবাসে, আমার রেজামন্দির আশায় পরস্পর বৈঠকে মিলিত হয়, আমার সন্তুষ্টির কামনায় পরস্পর দেখা-সাক্ষাৎ করে এবং আমার ভালোবাসার জন্যই নিজেদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদের ভালোবাসা আমার জন্য ওয়াজিব হয়ে যায়। (মুসলিম)।

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত-‘রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছেন– আল্লাহতায়ালার বান্দাগণের মধ্যে এমন কিছু লোক রয়েছে, যারা নবীও নয়, আর শহীদও নয়। কিন্তু বিচার দিবসে তাদের মর্যাদা দেখে নবী ও শহীদগণ তাদের ওপর ঈর্ষা করবেন। জিজ্ঞেস করা হলো- হে আল্লাহর রাসুল! তারা কারা? উত্তরে তিনি বললেন– তারা হচ্ছে সেসব লোক, যারা শুধু আল্লাহর মহব্বতে একে অপরকে মহব্বত করেছে। তাদের মধ্যে নেই কোনো রক্তের সম্পর্ক, নেই কোনো বংশের সম্পর্ক।

তাদের মুখমণ্ডল হবে জ্যোতির্ময় এবং তারা নূরের মিম্বরের ওপর অবস্থান করবে। কিয়ামতের বিভীষিকাময় অবস্থায় মানুষ যখন ভীত-সন্ত্রস্ত থাকবে, তখন তারা ভীত হবে না। আর মানুষ যখন দুঃখে থাকবে, তখন তাদের কোনো দুঃখ থাকবে না। (তিরমিজি)।

ভালোবাসা তো সেটাই যেখানে নেই কোন শর্তপরোতা, অশ্লীলতা। বিবাহর আগে তরুণ-তরুণি দেখা করা, মেলা-মেশা,প্রেম-ভালোবাসা ইসলামে সম্পূ্র্ণ ভাবে হারাম। কল্যাণ কর হলো বিবাহর পরে স্বামী-স্ত্রীর ভালোবাসাই হলো পবিত্র ভালোবাসা যেখানে রয়েছে সওয়াব।

পরিশেষে সকল ইসলামি দ্বিনী ভাই-বোনদের কে বলবো এই দিনে অবৈধ মেলা-মেশা করে শয়তানকে খুশি না করি। শুধু এই ‍দিন টি নয় সব সময় অবৈধ মেলা-মেশা হতে বিরত থাকার জন্য বলবো। মহান আল্লাহ তা‘আলা আমাদের সকল কে শয়তানের, নফছের ধোঁকা ও দাজ্জালের ফিতনা থেকে বেঁচে থাকার তৌফিক দান কারুন। আমিন।।।

Related Posts

7 Comments

মন্তব্য করুন