**মায়াবতী**
মায়াবতি ছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী,
আর আমি তখন বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে চাকরি করছি মাহমুদ বুক স্টল রেলওয়ে ষ্টেশন কুমিল্লাতে।
__________________________
মায়াবতি ছিল আমার দোকানের একজন নিয়মিত ক্রেতা।মায়াবতী বলছি এই কারনে যে সে ছিল খুব সুন্দর, আর তার নামটা কি তা আমি জানি না।
তবে বাড়ি ছিল হাসান পুর।মায়াবতি বিভিন্ন ম্যাগাজিন, উপন্যাস ক্রয় করত। তার সংগ্রহে হুমায়ুন আহম্মদের লেখা আর কোন বই বাকি নেই। আর আমি “সাপ্তাহিক এখন” আর “মৌচাকে ঢিল” ম্যাগাজিনে সামান্য লেখালেখি করতাম।
“সাপ্তাহিক এখন” এর কোন এক সংখ্যায়
আমি একটা লেখা দিছিলাম,
“মেঘের দেশে বাড়ি তোমার
মেঘের দেশে ঘর,
মেঘে মেঘে উড়ে বেড়াউ
আমারে বানাও পর।
বৃষ্টি হয়ে নাম তুমি
হৃদয়ে ভিশন খরা,
তোমাকে ভিশন প্রয়োজন আমার
আমি বন্ধু হারা।
এই সংখায় অনেকেই ফোন দিয়েছিল।
তার মাঝে একটা কন্ঠ আমার কাছে খুব চেনা মনে হল।
অনেক কথার পর পরিচয় পেলাম ভিক্টোরীয় কলেজে লেখাপড়া করে।
প্রায় প্রতিদিনই কথা হত মেয়েটার সাথে। মনে মনে অনেক ভালবেসে ফেলেছি মেয়েটাকে।কিন্তু কখনো বলার সাহস হইনি।
________________
আজ মেয়েটার সাথে দেখা করবো, ধর্মসাগর পাড়ে। তাই ভাবছি আজ কেই তাকে সব কিছু খুলে জানাবো আমার ভালবাসার কথা।
এগার টায় গেলাম ধর্ম সাগর পাড়ে। অনেক কপোত কপোতির আছে। তার মাঝে দেখলাম আমার দোকানের সেই ক্রেতা ও দাঁড়িয়ে আছে।
আমি তাকে দেখেই চমকে উঠলাম।
— আরে আপনি????
— হুম এক জনের সাথে দেখা করতে আসলাম।
মোবাইল বাহির করে ফোন দিলাম
মেয়েটাকে, দেখলাম মায়াবতি ফোন বাহির করতেছে।
— আপনি কি ইরিনার সাথে দেখা করতে এসেছেন?
আমি অবাক হলাম,,
সে কি ভাবে জানল??
শেষে নিরবতা ভেঙ্গে মায়াবতীয় বলিল আমিই সেই, “সাপ্তাহিক এখনের”পাঠিকা।
বললাম চলেন একটু বসি।
মায়াবতী, না আসলে আমার হাতে তেমন সময় নায় আমি এখুনি চলে যাব। মায়াবতী ব্যাগ খুলে আমার হাতে একটা বিয়ের চিঠি ধরিয়ে দিয়ে বলে আমার বিয়ে, আসবেন কিন্তু, খুব খুশি হব আসলে।
বলেই হন হন করে হেটে চলে গেল।
আর আমার নির্বাক হয়ে তার চলে যাওয়া দেখছিলাম আর সেই সাথে সাথে না বলা কথা গুলো কবর হল ঝাউ গাছের তলেই।
লেখকঃ আই এইচ আরিফ(সুখ পাখির অপেক্ষায়)