“তুমি কি সত্যি আমার !! ” তৃতীয় পর্ব

আসসালামু আলাইকুম।  কেমন আছেন সবাই? আশা করি সবাই খুব ভালোই আছেন। আলহামদুলিল্লাহ আমিও ভালো আছি। আপনাদের সবার সুস্থতা কামনা করে শুরু করছি। আজকে “তুমি কি সত্যি আমার” গল্পের তৃতীয় পর্ব দেওয়া হবে। তাহলে, চলুন শুরু করা যাক।

দ্বিতীয় পর্ব থেকে….. এভাবেই চলল কিছুদিন। ওকে শুধু দুর থেকেই দেখি। বন্ধুত্ব তো দূরের কথা এমনকি ওর সাথে আজ পর্যন্ত একটা কথাও হয় নাই। ধীরে ধীরে ওর প্রতি আমার ভালো লাগার পরিমান বাড়তে লাগলো। ওর সাথে কথা বলার অনেক আগ্রহ জন্মেছে আমার মনে কিন্তূ আমার লাজুকতার কারনে আমি কথা বলতে পারছি না। একবার ভাবি যাই একজন সহপাঠী হয়ে কথা বলি তারপর বন্ধুত্ব করব। আরেক বার ভাবি নাহ্ না যাই। যদি অন্য কিছু মনে করে। বা আমার উদ্দেশ্য বুঝতে পারে।

ঈতিশা কলেজে বর্তমান নতুন হলেও সবার সাথে খুব সহজেই নিজেকে মানিয়ে নিয়েছে। মনেই হয় না যে ঐ কলেজে আসার বেশি দিন হয় নাই। একদিন ক্লাস করে রুম থেকে বেরিয়ে যাচ্ছিলাম। এমন সময় দেখলাম বারান্দায় ঈতিশা আমার নাম নিয়ে দ্বিধা দ্বন্দ্বে আছে। ঈতিশা আমাকে আঙ্গুল দেখিয়ে দিয়ে তাহমিদ কে জিজ্ঞাসা করতেছে, ওর নাম কি? আমি দেখেও না দেখার অভিনয় করে একটু মুচকি হেসে চলে গেলাম। তাহমিদ ঈতিশা কে কি বলল শুনতে পাই নাই। ঈতিশা হঠাৎ করে আমাকে পিছন দিক থেকে সিয়াম, সিয়াম বলে ডাকতে লাগল। আমি থমকে দাঁড়ালাম। একে তো এই নামে আমাকে কলেজের কেউ ডাকে না তার উপর ঈতিশা আমাকে এই নামে ডাকতেছে। কিছু তো আছে নিশ্চয়। মনে মনে ভয় পেয়ে গেলাম। ঈতিশা বুঝে ফেলে নি তো আমি ওকে পছন্দ করি বা আমি যে লুকিয়ে লুকিয়ে ওকে দেখি এটা জানতে পারে নি তো? নিজেকে এভাবে প্রশ্ন করছি। টেনশন হচ্ছে। ঈতিশা হঠাৎ করে আমাকে এভাবে ডাকবে কেন? যার সাথে কখনো কোন কথাই হয় নাই। ঈতিশা আমার কাছে এসে গেছে। তাই আমি সিদ্ধান্ত নিলাম যদি ঈতিশা সবকিছু বুঝতে পারে তাহলে সত্যি টা  ওকে বলে দিব। বলল যে আমি ওকে পছন্দ করি।

আমি আজ ওর সাথে কথা বলবই। পিছন ফিরে দাঁড়ালাম। দেখি ঈতিশা এসেছে। ঠোঁটের কোণে হাসিটা রয়েছে। চোখ দুটো খুব মায়াবী। জীবনের প্রথম এভাবে কোন মেয়ের চোখের দিকে তাকালাম। আমি ওর দিকে তাকিয়ে আপন মনে হাসতে লাগলাম। কিছুক্ষণ পর আমার চেতনা ফিরে এল। আমি লজ্জা পেয়ে মাথাটা একটু নিচু করলাম। ভেবেছিলাম আমার এভাবে তাকিয়ে থাকা দেখে ঈতিশা কিছু বলবে।  কিন্তূ ঈতিশা এই ব্যাপারে কিছুই বলল না। ঈতিশা আমাকে জিজ্ঞাসা করল, তোমার নাম কি সিয়াম? আমি বললাম হুম, কেন?

ঈতিশা : তাহলে, রুহান কার নাম?

আমি : আমার

ঈতিশা : তাহলে তোমার সম্পুর্ণ নাম কি?

আমি : সিয়াম হাসান রুহান। তোমার নাম তো ঈতিশা?

ঈতিশা : হুম, তবে সবাই আমাকে  ঈশু বলেই ডাকে। Bay the way, তোমার নাম টা অনেক সুন্দর। রুহান নামের থেকে সিয়াম নামটা আমার বেশি ভাল লাগল। আমি তোমাকে সিয়াম বলেই ডাকব।

আমি: ok ডাকিও। ধন্যবাদ। তোমার নামটাও অনেক সুন্দর। ঠিক তোমার মত ( মনে মনে বললাম)।

ঈতিশা: আচ্ছা, তাহমিদ বলল তোমার নাকি অনেক কাতুকুতু? একটু কাতুকুতু দেই?

আমি : হ্যাঁ !! এই মেয়ে বলে কি! আমাকে নাকি কাতুকুতু দিবে? ( বিড়বিড়িয়ে বলতে লাগলাম)।

ঈতিশা: কি হলো? কিছু বললে?

আমি: না কিছু না। দয়া করে আমাকে কাতুকুতু দিও না।

ঈতিশা আমাকে কাতুকুতুর একটু ভয় দেখিয়ে বলল, দেরি হয়ে যাচ্ছে। চল ক্লাসে যাই। তারপর দুজনে একসাথে ক্লাসে গেলাম।

সম্পুর্ন গল্প টা মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন। আল্লাহ হাফেজ।

 

Related Posts

18 Comments

মন্তব্য করুন